কাজী মোহাম্মদ ইব্রাহীম জুয়েল সরকারি হিসাবে দেশে প্রায় ৬৪ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ১৭ হাজারের মতো মাধ্যমিক বিদ্যালয়, দুই হাজার পাঁচশ কলেজ রয়েছে, মোট শিক্ষার্থী প্রায় পাঁচ কোটি। এই বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীদের অনলাইন ক্লাসে যুক্ত করা একটি বড় ধরণের চ্যালেঞ্জ। দেশের অনেকগুলো এলাকা ইন্টারনেট এবং টিভির আওতায় নেই। ফলে অনেকে ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রম থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
যদিও অনলাইন শিক্ষা পদ্ধতি সুশৃঙ্খল শিক্ষার্থীর জন্য শিক্ষার একটি অত্যন্ত কার্যকর বিকল্প মাধ্যম হিসেবে বিবেচনা করা হয়, তবে এটি সকল শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে উপযুক্ত নয়। অনলাইন পদ্ধতি বা ডিজিটাল মাধ্যম ক্রমাগত অপরিহার্য হলেও সেই মাধ্যম যদি সবার কাছে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থাা না থাকে তাহলে শিক্ষাক্ষেত্রে যে বৈষম্য সৃষ্টি হবে, সেই শঙ্কা থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য সরকারি পরিকাঠামোর অপ্রতুলতা মানুষকে দিশেহারা করে তুলবে।
জানি অনলাইন ক্লাসের সম্ভাবনা অপার তবে তা পাশ্চাত্যের ধনী দেশগুলিতে। আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশে অনলাইন শিক্ষা পদ্ধতিকে আপামর ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে পৌঁছে দিতে হলে চাই সর্বাগ্রে পরিকাঠামোর উন্নয়ন, নতুবা তা অবান্তর স্বপ্ন হয়েই থাকবে।
একথা আমাদের সামনে স্পষ্ট যে সুবিধা ও সীমাব্ধতা যাই থাক না কেন করোনাকালে অনলাইন শিক্ষা পদ্ধতি আমাদের শিক্ষাধারাকে অব্যাহত রাখার একমাত্র উপায়। আমাদের শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদেরকে এ ব্যাপারে সচেতন থেকে সর্বক্ষেত্রে সহযোগিতার হাত সম্প্রসারিত করতে হবে। তাহলে অনলাইন শিক্ষার সুফল আমরা সকলে উপভোগ করতে পারবো এবং জাতিও উন্নতির অনেক ধাপ এগিয়ে যাবে।
তবু আমরা একটি সুস্থা বিশ্বের, একটি সুস্থা পরিবেশের স্বপ্ন দেখি। স্বপ্ন দেখি জ্ঞান ও শিক্ষায় আলোকিত বাংলাদেশের। একসময় করোনার দুঃস্বপ্ন থেমে যাবে যেমনটা ধুয়ে মুছে নিয়ে যায় এক পশলা বৃষ্টি! ততদিন আমাদের চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে। সেক্ষেত্রে অনেক সমস্যা ও সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও অনলাইন ক্লাসের দিকে আমাদের ঝুঁকতে হবে এবং এক্ষেত্রে বিদ্যমান সমস্যা ও অসুবিধাগুলো ধীরে ধীরে কাটিয়ে উঠে অতিদ্রুত অনলাইন ক্লাসকে শিক্ষা ও শিক্ষার্থী বান্ধব করতে হবে। আমরা চাঁদপুরের সাধারন নাগরিক হিসেবে সরকারের সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে এ ব্যাপারে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।।