ভারতে রপ্তানির অযোগ্য বিবেচিত ছয় সিনেমা

সাফটা চুক্তিতে আমদানি-রপ্তানি নীতিমালায় বাংলাদেশ থেকে যেসব ছবি রপ্তানি করা হয়, ছবিগুলোর মান ভালো নয়, এমন অভিযোগ আগে থেকেই ছিল। পুরোনো নিম্নমানের ছবিগুলো রপ্তানি করে ভারত থেকে নতুন ছবি আমদানি করে এ দেশে ব্যবসা করতে চায় এখানকার আমদানিকারক প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানগুলো। এ কারণে ভারতের বাজারে বাংলাদেশের ছবির গ্রহণযোগ্যতাও অনেকটাই কমেছে। একই প্রক্রিয়াতে শাপলা মিডিয়ার ছয়টি ছবি এবার ভারতে রপ্তানি করতে গিয়ে আটকে গেল। নিম্নমানের ছবি হওয়াতে রপ্তানির অযোগ্য বলে রায় দিয়েছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের আমদানি-রপ্তানি কমিটি।

ছবিগুলো হলো ‘মাফিয়া ১, ‘মাফিয়া ২, ‘মাফিয়া ৩, ‘মাফিয়া ৪, ‘মাফিয়া ৫’ ও ‘মাফিয়া ৬’। মন্ত্রণালয়ের আমদানি ও রপ্তানিবিষয়ক কমিটি তিন দফায় দেখার পর ছবিগুলোর মান নিয়ে প্রশ্ন তোলে। এরপর কমিটির সদস্যদের মতামত নিয়ে ভারতে রপ্তানির যোগ্য নয় বলে সিদ্ধান্ত হয়।

আমদানি ও রপ্তানিবিষয়ক কমিটির সদস্য এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের চলচ্চিত্র বিভাগের উপসচিব মো. সাইফুল ইসলামের স্বাক্ষরিত চিঠিতে এসব তথ্য জানা গেছে। চিঠিতে জানা যায়, আমদানি ও রপ্তানিবিষয়ক কমিটি ৯ ফেব্রুয়ারি ‘মাফিয়া ১’ ছবিটি দেখে। ১০ ফেব্রুয়ারি দেখে ‘মাফিয়া ২, ‘মাফিয়া ৩’ ও ‘মাফিয়া ৪’ ছবি তিনটি। ‘মাফিয়া ৫’ ও ‘মাফিয়া ৬’ ছবি দুটি প্রিভিউ করে ১৩ ফেব্রুয়ারি। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, চলচ্চিত্রগুলো মানসম্মত হয়নি। এগুলো বিদেশে রপ্তানি করা হলে দেশে ও দেশের সিনেমার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হবে, এই বলে মত দিয়েছেন কমিটির সদস্যরা।

 ভারতে-রপ্তানির-অযোগ্য-বিবেচিত-ছয়-সিনেমা

এ ব্যাপারে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপসচিব সাইফুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘সিকুয়েলগুলো অ্যাকশন ঘরানার। সব সিকুয়েল মিলে গল্পের মধ্যে ফিনিশিং ব্যাপারটা নেই। প্রিভিউ করার পর কমিটির সদস্যদের মনে হয়েছে, প্রপার হয়নি ছবিগুলো। এ জন্য রপ্তানির অযোগ্য বলে রায় দিয়েছেন কমিটির সদস্যরা। সিদ্ধান্ত জানাতে প্রযোজক বরাবর চিঠি ইস্যু করেছি আমরা।’

এ ব্যাপারে কমিটির আরেক সদস্য চলচ্চিত্র পরিচালক শাহ আলম কিরণ বলেন, ‘এটি একটি সিকুয়েল সিনেমা। ছয় পর্বের। ‘মাফিয়া ১’ থেকে ‘মাফিয়া ৬’ পর্যন্ত। কিন্তু আমরা দেখতে গিয়ে দেখলাম, সিকুয়েল গল্পের ধারাবাহিকতা নেই। এমনকি গল্পের শুরু ও শেষ পরিষ্কার নয়। সিনেমাগুলো দেশের বাইরে প্রদর্শন করা হলে দেশের ভাবমূর্তির ক্ষতি হতে পারে। এসব বিচার-বিবেচনা করেই আমরা কমিটির সদস্যরা রপ্তানির অযোগ্য বলে মতামত দিয়েছি।’ তিনি এ-ও বলেন, ‘জানতে পেরেছি, প্রথমে এটি ওটিটির জন্য দীর্ঘ সিরিজ করা হয়েছিল। পরে আলাদা আলাদা করে সিনেমার নাম দেওয়া হয়েছে।’

আমদানি ও রপ্তানিবিষয়ক কমিটি কর্তৃক রপ্তানি অযোগ্য হওয়ার খবরটি শুনেছেন বলেন জানান ছবিগুলোর প্রযোজক সেলিম খান।

তিনি বলেন, ‘শুনেছি, তবে এখনো চিঠি পাইনি। আমি এখন মিটিংয়ে আছি, কথা বলতে পারব না। পরে কথা বলব।’ বলেই ফোন কেটে দেন তিনি।
উল্লেখ্য, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কোনো প্রচার-প্রচারণা ছাড়াই সারা দেশে ২৫টি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ‘মাফিয়া ১’। মুক্তির প্রথম দিনেই মুখ থুবড়ে পড়ে ছবিটি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *