আগুনে দোকান পুড়লেও ব্যবসা ছাড়েনি হাজীগঞ্জের ছফিউল্লাহ

২০২০ সালের মাঝামাঝি সময়ে গভীর রাতে পুড়ে যায় দোকান। তারপরও হাল ছাড়েননি। পূর্বপুরুষের রেখে যাওয়া ব্যবসা এখনো চালিয়ে যাচ্ছেন চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ বাজারের বাঁশ ও বেতশিল্পের ব্যবসায়ী কারী ছফিউল্লাহ।

জানা যায়, একসময় গ্রামের গৃহস্থালির কাজে বাঁশ ও বেতের তৈরি আসবাবের ব্যাপক ব্যবহার থাকলেও বর্তমানে এর ব্যবহার একেবারেই কমে গেছে। এ জন্য বাজারে বাঁশ ও বেতের তৈরি আসবাবের চাহিদা তেমন নেই। তবু ছফিউল্লাহ ধরে রেখেছেন গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী বাঁশ ও বেতশিল্প।

বৃহস্পতিবার সরেজমিনে দেখা যায়, বাঁশ ও বেতশিল্পীরা জীবিকা নির্বাহের জন্য বাপ-দাদার আদি পেশা ছেড়ে দিয়ে এখন নতুন পেশায় ধাবিত হচ্ছেন। এখনো যারা পূর্বপুরুষের রেখে যাওয়া আদি পেশা ধরে রয়েছেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম হাজীগঞ্জ পূর্ব বাজারের বাঁশ ও বেত ব্যবসায়ী ছফিউল্লাহ।

বাঁশ দিয়ে তৈরি করা উন্নতমানের ওড়া, টুকরি, কুলা, সালইন, ঝাঁপি, ডালা, উগড়া, জৈন, আমতা, খোল, চাটাই, তিরপাল, খালুই, ধামা, দোয়ার, আড়ি, টোনা, আড়, হাপটা, মোড়া, বুকশেলফ নিয়ে বসে আছেন তিনি।

হাজীগঞ্জ বাজারে ভাই ভাই বাঁশ ও শিল্পকারখানার ম্যানেজার বদিউজ্জামান বলেন, এসব তৈরি মালামাল উপজেলার কাঠালি, মৈশাইদ, নাটেহারা, জেলার ফরিদগঞ্জ, কচুয়া, বাবুরহাট, মতলবসহ দেশের কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও নারায়ণগঞ্জ থেকে ক্রয় করে আনা হয়।

বদিউজ্জামান আরও বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে বাঁশ-বেতের স্থান অনেকটাই প্লাস্টিক সামগ্রী দখল করে নিয়েছে। তা ছাড়া বাঁশ ও বেতের উৎপাদন কমে যাওয়ায় এর দামও বেড়ে গেছে। ফলে বাঁশ ও বেতের সামগ্রীর ব্যয়ও বেশি হচ্ছে। তারপরও সাধারণ ও নিম্ন আয়ের মানুষের কিছু চাহিদা থাকায় এখনো টিকে রয়েছি।’

ছফিউল্লাহ বলেন, ‘২০২০ সালে আগুনে আমার প্রায় ১৫ লাখ টাকার মালামাল পুড়ে গেছে। কিন্তু বাঁশ ও বেতশিল্পের প্রতিষ্ঠান হওয়ায় কোনো প্রণোদনা পাইনি। তারপরও জীবিকা নির্বাহের জন্য বাপ-দাদার আদি পেশা ধরে রেখেছি। তবে চাহিদা কম থাকায় খুব কষ্টে জীবনযাপন করছেন এ পেশার সঙ্গে জড়িত মানুষেরা।’

হাজীগঞ্জ প্রতিনিধি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *