চাঁদপুরে ৩ উপজেলায় ২৯ ইউপিতে ভোট গ্রহণ চলছে

ফরিদগঞ্জ উপজেলার ১৩ ইউপিতে ভোট :

আজ বুধবার সকাল ৮ ঘটিকা থেকে বিরামহীন ভাবে বিকাল ৪ ঘটিকা পর্যন্ত চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে সকল ধরনের প্রস্তুতি শেষ করেছে সংশ্লিষ্ট নির্বাচন অফিস। ভোটে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে মাঠে নামছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

উপজেলা নির্বাচনন অফিস সুত্রে জানা গেছে, ফরিদগঞ্জ উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নে নির্বাচন হবে। নির্বাচনে ৭৩জন চেয়ারম্যান প্রার্থী, ১২৫ জন সংরক্ষিত মহিলা সদস্য প্রার্থী ও ৪শ ৯৩ জন সাধারণ সদস্য অংশ গ্রহণ করছেন।

১৩ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও মেম্বার পদে লড়ছেন নারী ও পুরুষসহ মোট ৬ শ ৯১ জন প্রার্থী নির্বাচনে লড়ছেন।
উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের ১২২ কেন্দ্রে ব্যালটা পেপার ছাড়া বাকী অন্য সরঞ্জামাদি পাঠানো হয়েছে। এদিকে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে প্রশাসন ৫ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা মোতায়েন করা হয়েছে।
ভোট গ্রহনের কেন্দ্র ১শ ২২ , ভোট গ্রহনের কক্ষ ৭শ ৭২টি । ১৩টি ইউনিয়নের পুরুষ ভোটার সংখ্যা ১লাখ ৪০ হাজার ৯৭৩ জন, মহিলা ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ৩০ হাজার ৪৪১ জন। মোট ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৭১ হাজার ৪শ ১৪ জন।

ফরিদগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, ১৩টি ইউনিয়নে ১২২টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ করা হবে। নির্বাচনী দায়িত্ব পালনে রয়েছেন ৫ জন রিটার্নিং অফিসার, সহ-প্রিজাইডিং অফিসার ১২২ জন ও পোলিং অফিসার ৫৬৪ জন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, প্রতিটি কেন্দ্রে একজন সাব ইন্সপেক্টর এর নেতৃত্বে কেন্দ্র বিবেচনায় ১৭জন আনসারসহ ৩/৫জন পুলিশ ফোর্স নিয়োগ করা হয়েছে। এছাড়া প্রতিটি ইউনিয়নে একজন নিবার্হী ম্যাজিস্ট্রেট ও ইন্সপেক্টর পদমর্যাদার পুলিশ অফিসার দায়িত্বরত থাকবেন বলে জানা গেছে। পাশপাশি এপিবিএন, বিজিবি এবং র‌্যাবের কয়েক প্লাটুন মোবাইল টিম হিসেবে পুরো নির্বাচনী এলাকাকে নিরাপত্তার মধ্যে নিয়ে আসার ব্যবস্থা নিয়েছে।

ফরিদগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং মোঃ মিজানুর রহমান জানান, নির্বাচন সুষ্ঠু ও সফলভাবে শেষ করতে সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। পুলিশের মোবাইল টিমের পাশাপাশি একজন জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্বে থাকবেন।

ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ শহিদ হোসেন জানান, নির্বাচনে প্রায় ২হাজার ৪শত পুলিশ সদস্য তাদের দায়িত্ব পালন করছে।

উপজেলা নিবার্হী অফিসার শিউলী হরি জানান, নির্বাচনে ভোটার নিরাপদ উপস্থিতি নিশ্চিত করতে সকল প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। নির্বাচনের দিন সকালে ব্যালট পেপার কেন্দ্রে পৌঁছানো হবে। সুষ্ঠু ও ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সকল আয়োজন সম্পন্ন হয়েছে।

হাইমচর উপজেলার ৪ ইউপিতে ভোট :

একই দিনে  অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে হাইমচর উপজেলার ৪টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন। এইদিন ৪২টি ভোট কেন্দ্রে সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীন ভাবে চলবে ভোট গ্রহন। এ উপলক্ষ্যে সুষ্ঠ ও শান্তিপূর্ন পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সকল প্রকার প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। নির্বাচনি সকল সরঞ্জামে প্রতিটি কেন্দ্রে পৌছে দেওয়া হয়েছ। উপজেলা নির্বাচন অফিসার শাহজাহান মামুনের বলেন হাইমচর উপজেলায় পঞ্চম ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ৪টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে হাইমচরে ৫ জন, আলগী দূঃ দক্ষিণে ৪ জন, আলগী দূঃ উত্তরে ৫ জন, নীলকমলে ৫ জন সহ মোট ১৯ জন, সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ৩৮ জন ও সাধারণ সদস্য পদে মোট ১২৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছে।

বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায়- চেয়ারম্যান পদে নৌকা প্রতীক প্রার্থীর সাথে স্বতন্ত্র ও বিদ্রোহী প্রার্থীদের প্রতিদ্বন্দ্বীতা হচ্ছে। অধিকাংশ ইউনিয়নে স্বতন্ত্র বিদ্রোহী প্রার্থীর সংখ্যা ২ থেকে ৩ জন। এসব বিদ্রোহী প্রার্থীরা আওয়ামী লীগ ও উহার অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। ৩নং আলগী দক্ষিণ ইউনিয়নে স্বতন্ত্র হিসেবে বিএনপির প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান সরদার আঃ জলিল মাষ্টার মূল প্রতিদ্বন্দ্বীতায় শক্ত অবস্থানে রয়েছেন এ ইউনিয়নে মোট ৪ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী রয়েছেন। ২নং আলগী উত্তর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আতিকুর রহমান পাটওয়ারী ব্যতীত আওয়ামী লীগের ২ জন বিদ্রোহী প্রার্থীর ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে। এ ইউনিয়নে মোট ৫ জন প্রার্থী রয়েছে।

হাইমচর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা চাই থোয়াইহলা চৌধুরী ও হাইমচর থানার অফিসার ইনর্চাজ মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান মোল্লা জানান, নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠ ও শান্তিপূর্ন পরিবেশে অনুষ্ঠানের জন্য সকল প্রকার প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। কেউ জাল ভোট দেওয়ার কিংবা বেলট বাক্স ছিনতাই করার অপচেষ্টা নিলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এদিকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সুষ্ঠ ভোট নেওয়ার নিশ্চয়তা দেওয়ায় নির্ভীকভাবে ভোটারা তাদের মূল্যবান ভোট দিতে পারবে এমনিই বিশ্বাসে তারা বেশ উৎসাহ বোধ করছে। এখন ভোটাররা ভোট প্রয়োগের মুহুুর্তের জন্য অপেক্ষা করছে।

উপজেলা নিার্বচন কর্মকর্তা শাহজাহান মামুন জানান- সুষ্ঠ নির্বাচনের লক্ষ্যে সকল ধরনের নিরাপত্তার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। যথা সময়ে নির্বাচনী মালামাল কেন্দ্রে কেন্দ্রে পৌছানোর জন্য প্রস্তুত রাখা এবং শান্তিপূর্ন পরিবেশে নির্বাচন করতে সকল প্রস্তুতি সম্পূর্ন করা হয়েছে। আইন শৃঙ্খলা নিরাপত্তার জন্য পুলিশ, বিজিবি, আনসার সদস্য মোতায়েন রয়েছে। সকল ভোটারদের নির্বিঘ্নে ভোট কেন্দ্র গিয়ে ভোট দিবেন।

কচুয়ার ১২ ইউনিয়ন পরিষদে ভোটে

একইদিনে  অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে কচুয়া উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন।

১২টি ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীরা হচ্ছেন : ১নং সাচার ইউনিয়ন পরিষদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মিন্নত আলী তালুকদার নৌকা, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী ইমরান হোসেন চৌধুরী হাতপাখা ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মনির হোসেন ঘোড়া এবং এসএম শুভ চশমা প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
২নং পাথৈর ইউনিয়ন পরিষদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী কামাল হোসেন মিয়াজী নৌকা, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী ইয়াছিন মিয়া হাতপাখা, স্বতন্ত্র প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান জুয়েল ঘোড়া, গোফরান উদ্দিন টেলিফোন, তারেক অটোরিকশা, আক্কাস আলী মোল্লা আনারস, মোঃ মকবুল হোসেন চশমা, মিজানুর রহমান চৌধুরী রজনীগন্ধা ও সোলাইমান লিটন মোটরসাইকেল প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

৩নং বিতারা ইউনিয়ন পরিষদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আবদুল্লা আল মামুন নৌকা, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী রহমত উল্লাহ হাতপাখা, স্বতন্ত্র প্রার্থী ইসহাক শিকদার ঘোড়া, ইসমাইল হোসেন আনারস, আবুল কালাম আজাদ চশমা ও শহীদ উল্লাহ ভূঁইয়া মোটরসাইকেল প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
৪নং পালাখাল মডেল ইউনিয়ন পরিষদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আঃ আহাদ নৌকা, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী দুলাল হোসেন হাতপাখা, স্বতন্ত্র প্রার্থী ইমাম হোসেন মোটরসাইকেল, মোঃ মাসুদুর রহমান আনারস, হাবিবুর রহমান ঘোড়া, মনির হোসেন চশমা ও আলমগীর হোসেন স্বপন অটোরিকশা প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

৫নং পশ্চিম সহদেবপুর ইউনিয়ন পরিষদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আলমগীর হোসেন নৌকা, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী মাসুদ রানা হাতপাখা, স্বতন্ত্র প্রার্থী আঃ সামাদ আজাদ আনারস, সাইফুর রহমান বাহাদুর ঘোড়া ও শাহিন আলম মোটরসাইকেল প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
৬নং কচুয়া উত্তর ইউনিয়ন পরিষদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আখতার হোসেন নৌকা, জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী আবুল বাশার লাঙ্গল, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী মোঃ মহিবুল্লাহ হাতপাখা, স্বতন্ত্র প্রার্থী কাজী জহিরুল ইসলাম আনারস ও নেছার আহমেদ চশমা প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
৭নং কচুয়া সদর দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আলী আসগর নৌকা, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী ফয়সাল হোসাইন হাতপাখা, স্বতন্ত্র প্রার্থী জসিমউদ্দীন লিটন আনারস, সৈয়দ রবিউল ইসলাম রাসেল ঘোড়া, মিজানুর রহমান মিয়াজী মোটরসাইকেল ও আরিফুজ্জামান চশমা প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

৮নং কাদলা ইউনিয়ন পরিষদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী রফিকুল ইসলাম লালু নৌকা, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী সোহেল আহমেদ, স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল হাই মোটরসাইকেল, মোহাম্মদ নূর-ই আলম আনারস ও আঃ হান্নান খান ঘোড়া প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

১০নং গোহট উত্তর ইউনিয়ন পরিষদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী কবির হোসেন নৌকা, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী কবির হোসেন হাতপাখা, স্বতন্ত্র প্রার্থী আমিন উদ্দিন আনারস, মফিজুল ইসলাম ভূঁইয়া ঘোড়া, প্রদীপ চন্দ্র দাস চশমা, পারভেজ মুন্সী মোটরসাইকেল ও আবদুল মমিন অটোরিকশা প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

১১নং গোহট দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আমির হোসেন নৌকা, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী মাহবুব আলম কুদ্দুছ হাতপাখা, স্বতন্ত্র প্রার্থী মোঃ আলাউদ্দীন মোটরসাইকেল, খোরশেদ আলম চশমা ও মোঃ ইউনুছ মিয়া আনারস প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।১২নং আশ্রাফপুর ইউনিয়ন পরিষদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ওমর ফারুক নৌকা, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মনোনীত প্রার্থী মুফতি মোজাম্মেল হক হাতপাখা, স্বতন্ত্র প্রার্থী মোঃ রফিকুল ইসলাম আনারস, রেজাউল মাওলা হেলাল ঘোড়া, মোঃ মারুফ আহমেদ মোটরসাইকেল, মোঃ ইদ্রিস পাটওয়ারী টেলিফোন ও মোঃ মাসুদ আলম চশমা প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

স্টাফ রিপোর্টার

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *