এবছরও পিইসি-ইবতেদায়ি পরীক্ষা হচ্ছে না

স্টাফ রিপোর্টার চলতি বছর জেএসসি-জেডিস পরীক্ষা হচ্ছে না। তার সঙ্গে এবার প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী ও ইবতেদায়ি পরীক্ষা না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।

এ বিষয়ে সোমবার (৬ জুন) রাতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান জাগো নিউজকে বলেন, এবছর আমরা প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) ও ইবতেদায়ি পরীক্ষা না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। দ্রুত এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, করোনার কারণে শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি রয়েছে। সেটি কাটিয়ে উঠতে আমরা বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি। তার মধ্যে পিইসি-ইবতেদায়ি পরীক্ষা দেওয়াটা শিক্ষার্থীদের জন্য কঠিন হয়ে পড়বে। পরীক্ষা না নেওয়ার বিষয়টি আমরা আগে থেকেই ভাবছিলাম। বর্তমানে পরীক্ষা নেওয়া হবে না বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এদিকে রোববার (৫ জুন) শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি ঘোষণা দিয়েছিলেন, গত দুই বছরের মতো এবছরও জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা হবে না।
২০০৯ সালে জাতীয়ভাবে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা শুরু করে সরকার। পরে মাদরাসাশিক্ষার্থীদের জন্য ইবতেদায়ি পরীক্ষাও শুরু করা হয়। এরপর অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য ২০১০ সালে শুরু হয় জেএসসি পরীক্ষা। মাদরাসাশিক্ষার্থীদের জন্য চালু করা হয় জেডিসি পরীক্ষা। কিন্তু এসব পরীক্ষা নিয়ে নানামুখী বিতর্ক ছিল। শিক্ষার্থীদের ওপর বাড়তি চাপ পড়ায় অনেক অভিভাবক ও শিক্ষাসংশ্লিষ্ট অনেকে এসব পরীক্ষা বাতিলের দাবি করে আসছিলেন।
করোনা সংক্রমণের কারণে গত দুই বছর এসব পরীক্ষা হয়নি। নতুন শিক্ষাক্রমেও এসব পরীক্ষার কথা নেই। একেবারে দশম শ্রেণিতে গিয়ে পাবলিক পরীক্ষা (এসএসসি ও সমমান) নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। আগামী বছর থেকে পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন শুরু হবে। এমন পরিস্থিতিতে এবছরও এসব পরীক্ষা না হওয়ার অর্থ হলো এসব পরীক্ষা আর হচ্ছে না।
২০২২ সাল থেকেই প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা (পিইসি) না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। বিষয়টি চূড়ান্ত হয়েছে মন্ত্রণালয়ের সভায়। শিগগিরই বিষয়টি জানিয়ে মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।
বৃহস্পতিবার (২ জুন) রাতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান তুহিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘মন্ত্রণালয়ের বৈঠকে পিইসি পরীক্ষা না নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রজ্ঞাপন দিয়ে বিষয়টি জানিয়ে দেওয়া হবে।’
জানা যায়, জাতীয় শিক্ষানীতি অনুযায়ী অষ্টম শ্রেণির আগে কোনো ধরনের পাবলিক পরীক্ষা গ্রহণের বিধান না থাকায় চলতি বছর থেকেই এ পরীক্ষাটি বন্ধ হচ্ছে।
এর আগে গত ৩০ মে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন ব্যবস্থায় বড় ধরনের পরিবর্তন এনে প্রণয়ন করা প্রাক-প্রাথমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিক স্তরের নতুন কারিকুলামের আনুষ্ঠানিক অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দুই জাতীয় শিক্ষাক্রম সমন্বয় কমিটির (এনসিসিসি) যৌথ সভায় এ রূপরেখার অনুমোদন দেওয়া হয়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আবু বকর ছিদ্দীকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত যৌথ সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। বৈঠকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আলমগীর মুহম্মদ মনসুরুল আলম, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মশিউর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
গত পরশু শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা হবে না এবছরও।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *