করোনার পাশাপাশি ডেঙ্গুর প্রভাব বিব্রতকর

বাংলাদেশে এখন করোনা এবং ডেঙ্গু ভাইরাস অনেকটা মুখোমুখি অবস্থান করছে। সাম্প্রতিক সময়ে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় স্বাস্থ্যবিভাগের কর্মকর্তারা শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। দেশের হাসপাতালগুলোতে প্রতিদিন জ্বর নিয়ে রুগী আসছে। অনেক হাসপাতালের ডাক্তারগণ প্রাথমিকভাবে মৌসুমী ভাইরাস জ্বর কিংবা স্বাভাবিক কিছু মনে করে চিকিৎসা প্রদান করেন। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে যখন জ্বর কমতির কোন লক্ষণ দেখতে না পান, তখন ধারণা করে নেন করোনা কিংবা ডেঙ্গু জ্বর হয়েছে। দুটো ভাইরাসের লক্ষণ এবং সিনট্রোম কাছাকাছি ধরনের হওয়ায় একজন রোগীকে করোনা এবং ডেঙ্গু দুটো পরীক্ষা করে নিশ্চিত হন তার কোনটা হয়েছে।

তবে দেশের কিছু হাসপাতালে আমরা ডেঙ্গু আক্রান্ত রুগীকে করোনার চিকিৎসা দিতেও দেখেছি। যা ছিল অত্যন্ত দুঃখজনক। এমন পরিস্থিতিতে সরকার এখন ডেঙ্গু রুগীদের চিকিৎসার জন্য আলাদা হাসপাতাল চিহ্নিত করে দিয়েছেন। যা সরকারের অত্যন্ত প্রশংসনীয় এবং সময়োপযোগী একটি উদ্যোগ। যার কারণে বর্তমানে দেশের শুধুমাত্র ঢাকার হাসতালগুলোতে ৪ হাজার ডেঙ্গু রোগী আলাদা সেবা পাচ্ছে। আমরা দেখতে পাচ্ছি ডেঙ্গু রুগীর চিকিৎসা ঢাকাতে হলেও রুগী আসছে সারা দেশ থেকেই । তাহলে আমাদেরকে বলতেই হয় রাজধানীর বাইরের হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু আক্রান্ত রুগীর কোন চিকিৎসা নেই।

আমরা আশাকরি ভবিষ্যতে এই বিষয়ে সরকার কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করবেন। তবে ডেঙ্গু প্রতিরোধে শুধু চিকিৎসার প্রতি আত্মনিয়োগ করলে হবে না বরং এডিস মশা নিধনেও কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। আর তা শুধু ঢাকাতেই সীমাবদ্ধ থাকলে ডেঙ্গুর প্রকোপ কিছুতেই কমবে বলে মনে হয় না। বরং সারাদেশে একযোগে এডিস মশা নিধনে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। বিশেষ করে বিভাগীয় ও জেলা শহরগুলোতে এডিসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করলে ডেঙ্গু রুগীর সংখ্যা কমে আসবে যে এতে কোন সন্দেহ নেই।

মশা শুধু ডেঙ্গুই ছাড়ায় না বরং মেলেরিয়াসহ বিভিন্ন প্রাণঘাতি রোগের জীবণু বহন করে। তাই বছরে যদি কয়েকবার বিভাগীয় অথবা জেলা শহরগুলোতে নিধন কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। তাহলে অবশ্যই মানুষ অনেকটাই নিরাপদ হবে। মশা নিধনে যে কোন কার্যক্রম নেই তা বলছি না। তবে বলতে হবে তা একেবারেই অপ্রতুল। আমরা চাঁদপুর শহরে মাঝে মধ্যেই ফগার মেশিনের শব্দ শুনতে পাই। তবে তা বিশেষ বিশেষ কিছু বাংলো কিংবা বাসভবনেই সীমাবদ্ধ থাকতে দেখেছি। এমন সিমীত তৎপরতা মশা নিধনে কতটা কার্যকর তা ভেবে দেখার জন্য অনুরোধ করছি।
আমরা মনে করি সীমিত আকারে নয় বরং ব্যাপকভাবে শহরগুলোতে ঔষধ প্রয়োগ করা জরুরী। তবেই কেবল ডেঙ্গুসহ বিভিন্ন রোগ জীবানু থেকে আমরা রক্ষা পেতে পারি। এ ব্যাপারে স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।

কাজী মোহাম্মদ ইব্রাহীম জুয়েল, ০৯, আগস্ট, ২০২১;

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *