ফরিদগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগীকে কিল-ঘুষিতে চিকিৎসা

ফরিদগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কিল-ঘুষিতে চলে রোগীর চিকিৎসা সেবা। এনিয়ে সাধারণ মানুষের মাঝে চলছে নানা কথা। এমন যদি হয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সেবার মান, তা হলে সাধারন মানুষ কোথায় যাবে, এমন প্রশ্ন উপজেলা জুড়ে। এ ঘটনায় অপরাধী অলি আহাম্মেদ রোগীকে কিল-ঘুষি দেওয়ার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমার ভুল হয়েছে। হাসপাতালের টিএইচও মোহাম্মদ আশ্রাফ আহমেদ চৌধুরী বলেন আমি সিসিটিভির ফুঁটেজ দেখে সত্যতার প্রমাণ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো।

জানাযায়, ২০ আগস্ট শুক্রবার রাতে পৌর এলাকার সাফুয়া গ্রামের আঃ রশিদ (৬০) নামের এক বৃদ্ধ হঠাৎ করে অজ্ঞান হয়ে যায়। তার অবস্থার খারাপ দেখে পরিবারের লোকজন রাত ১টা ৩০ মিনিটে অজ্ঞান অবস্থায় ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। এসময় ডিউটিতে থাকা উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার অলি আহমদ দু‘ গালে ও মাথায় কিল-ঘুষি দিয়ে জ্ঞান ফেরানোর চিকিৎসা সেবা দিয়েছে বলে অভিযোগ করেন রোগী আঃ রশিদের স্ত্রী জাহানারা বেগম।

জাহানারা বেগম আরোও জানান, রাতে আমরা হাসপাতাল গেইটে এসে দেখতে পাই গেইট বন্ধ। পরে আমাদের বাড়ির সাংবাদিক জাকির হোসেন সৈকত কে জানাই। সে হাসপাতালের টিএইচওকে ফোন করে বলার পর গেইট খুলে দেয়। রোগীর জন্য হুইল চেয়ার চাইলে না দিয়ে বলে নিয়ে আসেন, পরে আমরা হুইল চেয়ার এনে রোগীকে চেয়ারে বসানোর জন্য সহযোগীতা চাইলে সহযোগীতা না করে চলে যায় রাতে ডিউটিতে থাকা নাইট গার্ড। আমরা ইমারজেন্সী কক্ষে নিয়ে ব্যাডে শোয়ানোর পর উপ- সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার অলি আহমদ ক্ষিপ্ত হয়ে রোগীর দু‘ গালে ও মাথায় কিল ঘুষি দিয়ে বলেন, স্যারকে ফোন দিলি কেন ? আমরা নিরুপায় হয়ে হাসপাতালে আসলাম অথচ আমাদের রোগীকে আমাদের সামনেই এভাবে প্রহার করলো ওরা।

সংবাদকর্মী জাকির হোসেন সৈকত জানায়, আমি রাতে ১০/১৫ বার হাসপাতালের ইমারজেন্সিতে ফোন দিলেও কেউ রিসিভ করেননি। পরে বাধ্য হয়ে টিএইচওকে ফোন করে বলি রোগী হাসপাতাল গেইটে দাঁড়িয়ে আছে দেখার জন্য। তারপরে তারা রোগীকে ভিতরে প্রবেশ করান।
গেইট বন্ধ থাকার সত্যতা স্বীকার করে হাসপাতালের নাইট গার্ড বলেন, গেইট বন্ধ ছিল তবে তালা ছিল না। লকআপ হ্যান্ডেল লাগানো ছিল। তাই খুঁলতে একটু দেরী হয়েছে।

সাংবাদিকরা উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আশরাফ আহমেদ চৌধুরীকে প্রশ্ন করলে তিনি রোগীর স্ত্রী জাহানারা বেগম ও স্যাকমো অলি আহাম্মেদকে জিজ্ঞাসা করেন এবং রোগীকে কিল-ঘুষি দেওয়ার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমার ভুল হয়েছে। আমি ক্ষমা প্রার্থী।
হাসপাতালের টিএইচও মোহাম্মদ আশ্রাফ আহমেদ চৌধুরী বলেন, ঘটনার বিষয় অবহিত হলাম। তারপরও আমি সিসিটিভির ফুঁটেজ দেখে সত্যতার প্রমাণ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো। তিনি আরোও জানান, আমি ফোন দিয়েছি ইমাজেন্সীর দায়িত্বে থাকা ডাক্তার মাসুদকে। আমিতো উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার অলি আহাম্মেদকে ফোন দেইনি। সে কি করে জানলো ?
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিউলী হরি জানান, বিষয়টি খুবই দু:খজনক বটে। আমি এ বিষয়ে টিএইচও‘কে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলবো।
চাঁদপুরের সিভিল সার্জন ডাক্তার সাখাওয়াত হোসেনের মুঠোফোনে বক্তব্য চাইলে তিনি জানান, আমি এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে সত্যতা যাচাই পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

ফরিদগঞ্জ প্রতিনিধি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *