কচুয়ায় পারিবারিক কলহের জের ধরে জান্নাত আক্তার (১৮) নামের এক গৃহবধু আত্মহত্যার অভিযোগ উঠেছে। রোববার দুপুরে গৃহবধু জান্নাত আক্তারের পিত্রালয় থেকে কচুয়া থানা পুলিশ ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে। উপজেলার শ্রীরামপুর গ্রামের দেওয়ান বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। সে ওই বাড়ির মৃত অলি উল্লাহ’র মেয়ে।
সরেজমিনে গেলে গৃহবধু জান্নাত আক্তারের মা জোসনা বেগম, বড় বোন মর্জিনা ও জেঠা আলী হোসেন জানান, জান্নাত আক্তারের সাথে প্রায় ২ বছর পূর্বে পারিবারিকভাবে কচুয়া পৌরসভার কড়ইয়া গ্রামের রহিম কমিশনারের বাড়ির আবিদ আলীর পুত্র কাউছার হোসেনের বিয়ে হয়। বিয়ের কয়েক মাস অতিবাহিত হতে না হতেই স্বামী, শ^াশুড়ি ও ননদ যৌতুকের দাবীতে তার উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাতে শুরু করে।
প্রায় মাস পূর্বে তাকে যৌতুকের দাবীতে বেদম মারধর করার অভিযোগে তার ভাই সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে গত ৫ আগস্ট কচুয়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করে। ওই অভিযোগের প্রেক্ষিতে সালিশ বৈঠক বসে বিরোধ মিটিয়ে দেয়। কয়েকদিন পরেই তার উপর আবার শুরু হয় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। গত ৩১ আগস্ট স্বামী গৃহে লোকজনের নির্যাতন সইতে না পেরে সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে স্বামী গৃহেই ঘরের আড়ার সাথে জান্নাত আত্মহত্যার চেষ্টা করে। স্বামী কাউছার তাকে উদ্ধার করে পিত্রালয়ে পাঠিয়ে দেয়।
গতকাল রোববার সকালে জান্নাত তার মামার বাড়ি বুরগী গ্রামে বেড়াতে যায়। সেখান থেকে দুপুর ১ টার দিকে বাড়িতে প্রবেশের সময় তার এক মাত্র ৯ মাসের কন্যা সন্তানকে মা জোসনা বেগমের কোলে তুলে দিয়ে সে দ্রুত ঘরে প্রবেশ করে দরজা বন্ধ করে ঘরের আড়ার সাথে উড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। ঘটনার পর থেকে তার স্বামী কাউসার গাঁ ঢাকা দিয়েছে।
এ ব্যাপারে কাউসারের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা সাংবাদিকদের সাথে জান্নাতের আত্মহত্যার ঘটনা নিয়ে কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করে।
কচুয়া থানার ওসি মোহাম্মদ মহিউদ্দিন এবং ওসি (তদন্ত) মো. ছানোয়ার হোসেন জানান, আমরা খবর পেয়ে লাশ থানায় নিয়ে আসি। থানায় অপমৃত্যু মামলা দায়ের করে জান্নাতের লাশ ময়না তদন্তের জন্য চাঁদপুরের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কচুয়া প্রতিনিধি