স্টাফ রিপোর্টার: চাঁদপুরে পুলিশ আহত ও বিস্ফোরক আইনে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব কাজী মোহাম্মদ ইব্রাহীম জুয়েলকে প্রধান আসামি করে ৮৯ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত প্রায় ২শ’ জনের পুলিশের দায়ের করা মামলায় হাইকোর্ট থেকে ৬ সপ্তাহের জন্য সকল আসামিদের জামিন দেয়া হয়েছে।
আসামিরা ফৌজদারি কার্যবিধির ধারা ৪৯৫ এর অধীনে চাঁদপুর মডেল থানার মামলা নং-২৯ তাং ১১/৩/২০২২ইং বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের হিবল হাইকোর্ট বিভাগের কাছে আগাম জামিনের জন্য একটি আবেদন দাখিল করেন।
বিস্ফোরক দ্রব্য আইন, ১৯০৮ এর ধারা ৩৬০/৬ এবং দণ্ডবিধির ১১৮৬/৩৩২/৩৫৩/৪২৭/৩৪ এর অধীনে ২০২২ সালের জিআর নং ১৩৫ এফ ২০২২ এর সাথে সঙ্গতিপূর্ণ, যা মেড ম্যাজিস্ট রেট চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্টের বিচারে নতুন বিচারাধীন। এ ব্যাপারে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব কাজী মোহাম্মদ ইব্রাহীম জুয়েল বলেন, দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর অংশ হিসেবে আমরা শান্তিপূর্ণ সমাবেশের আয়োজন করেছিলাম। কিন্তু আমাদেরকে সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে মামলা দিয়ে হয়রানী করা হচ্ছে। আমাদের নেতাকর্মীরা সেদিন সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সমাবেশে অংশগ্রহণ করেছিল। কিন্তু বিনা উস্কানীতে পুলিশ সেদিন সমাবেশে বাধা দেয়।
১৫ মার্চ ডিভিশন সৈকতে বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের মাননীয় হাইকোর্ট ডিভিশন তাদের লর্ডশিপ জনাব বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম এবং জনাব বিচারপতি সেলিম অভিযুক্ত-আবেদনকারীদের অর্ন্তর্বতীকালীন জামিন মঞ্জুর করেন।
প্রসঙ্গত, গত ৯ মার্চ চাঁদপুরে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির প্রতিবাদে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের বিক্ষোভ সমাবেশকে কেন্দ্র করে পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এতে পুলিশ,স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মী ও পথচারীসহ প্রায় অর্ধশত আহত হয়।
ঘটনার বিবরণে প্রকাশ
চাঁদপুর সদর থানা পুলিশের দায়ের করা মামলায় জেলা বিএনপির সিনিঃ যুগ্ম-আহবায়ক অ্যাডঃ সলিম উল্লাহ সেলিম, সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডঃ জাহাঙ্গীর হোসেন খান, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক হযরত আলী ঢালী, সদস্য সচিব ইব্রাহিম কাজী জুয়েলসহ বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের প্রায় ২ শতাধিক নেতা-কর্মীকে ৬ সপ্তাহের আগাম জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। ১৫ মার্চ মঙ্গলবার বুধবার বিচারপতিদের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় জামিন আবেদনের শুনানি শেষে আদালত এ আদেশ দেন। এর আগে আবেদনকারীরা মামলা থেকে আগাম জামিনের জন্য হাইকোর্ট বেঞ্চে হাজির হন। মামলাটি পরিচালনা করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন অসীম।
দলের নেতাকর্মীদের জামিনের জন্য শেখ ফরিদ আহম্মেদ মানিক সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত নেতা কর্মিদের নিয়ে কোর্টের বারান্দায় দাঁড়িয়ে ছিলেন। গত ৬ মার্চ বিকেলে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে চাঁদপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দল বিশাল বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে। খোলা ট্রাকে মঞ্চ তৈরি করে সমাবেশে যখন সংক্ষিপ্ত বক্তব্য চলছিল একপর্যায়ে পুলিশ তাদেরকে রাস্তা থেকে সরিয়ে দিতে বাধা প্রদান করলে পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও সংঘর্ষ বেধে যায়। মুহূর্তের মধ্যেই পন্ড হয়ে যায় পূর্বঘোষিত স্বেচ্ছাসেবক দলের বিক্ষোভ কর্মসূচি। ঐ ঘটনায় চাঁদপুর সদর মডেল থানায় ৮৯ জনের নাম উল্লেখ করে ২০০ নেতাকর্মীর নামে মামলা হয়। ঘটনার রাতে গ্রেফতার করা হয় ৮ জনকে।