চাঁদপুরে জেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোট গ্রহণ চলছে

 

স্টাফ রিপোর্টার

আজ প্রতিক্ষীত চাঁদপুর জেলা পরিষদ নির্বাচন। আজ সোমবার (১৭ অক্টোবর) সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত বিরতিহীন ভাবে কচুয়া উপজেলা পরিষদ মিলনাতয়নে এ ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
নির্বাচনে চাঁদপুর জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মোবাইল প্রতীকে আলহাজ¦ ওচমান গনি পাটওয়ারী ও আনারস প্রতীকে মো. জাকির হোসেন প্রধানীয়া প্রতিদ্ধন্ধিতা করছেন। তবে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী ছাড়াই নির্বাচন সম্পন্ন হচ্ছে। ইউসুফ গাজী মাঠে থাকলে হয়তো আজকের নির্বাচনে এক অন্যরকম প্রতিদ্বন্ধিতার সৃষ্টি হতো। এমনটাই মনে করছেন সাধারণ মানুষ।
আজ ১৭ই অক্টোবর সারা দেশের সাথে একযোগে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। দলীয় প্রতীকে এ নির্বাচন না হলেও প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে চাঁদপুর সদর সাধারণ সদস্য পদে একজন মনিরুজ্জামান মানিক (হাতি) ছাড়া সবাই আওয়ামীলীগ ঘরনার নেতাকর্মী ও সমর্থক বলে জানা যায়। চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগ সর্মথিত প্রার্থী নেই এখানে।
চেয়ারম্যান পদে সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ্ব ওচমান গনি পাটওয়াই হচ্ছেন (মোবাইল প্রতীক) এখানে ফেভারিট এবং শক্তিশালী প্রার্থী। এমনটাই মনে করছেন চাঁদপুরের সচেতন মহল। তার একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী হাজীগঞ্জের জাকির হোসেন প্রধান। তিনি নির্বাচন করছেন আনারস প্রতীক নিয়ে। এই দুজনের মধ্যেই ভোটাররা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত করবেন।
স্ব স্ব উপজেলা পরিষদের সভা কক্ষে ইলেকট্রিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) এর মাধ্যমে সকাল ৯ টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
নির্বাচনের সবশেষ প্রস্তুতি বিষয়ে জেলা নির্বাচন অফিসার মোহাম্মদ তোফায়েল হোসেন জানান, ইতিমধ্যে ভোট গ্রহণের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। স্ব-স্ব উপজেলায় প্রিজাইডিং অফিসার নিয়োগ দেয়া হয়েছে। প্রতিটি উপজেলায় ১টি করে ভোটকেন্দ্র থাকবে, অর্থাৎ উপজেলা পরিষদের সভাকক্ষে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে,প্রতিটি কেন্দ্রে ২টি করে বুথ থাকবে।
আইশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে প্রতিটি কেন্দ্রে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েনের পাশাপাশি ১ প্লাটুন বিজিবি সদস্য ও রেব মোতায়েন থাকবে।
জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানাযায়, (ওয়ার্ড নং-১ চাঁদপুর সদর) উপজেলায় প্রিজাইডিং অফিসার উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার ডাঃ মোঃ মকবুল হোসেন। এ ওয়ার্ডে ভোটার সংখ্যা ২০৬ জন,এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ১৫৮ ও নারী ভোটার ৪৮ জন, সাধারণ সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৭ জন।
(ওয়ার্ড নং-২ হাইচর) উপজেলায় প্রিজাইডিং অফিসার উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা মোঃ আব্দুস সালাম। এ ওয়ার্ডে মোট ভোটার সংখ্যা ৮০জন, এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ৬১ জন ও নারী ভোটার ১৯ জন। সাধারণ সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ২ জন।
(ওয়ার্ড নং-৩ ফরিদগঞ্জ) উপজেলায় প্রিজাইডিং অফিসার উপজেলা কৃষি অফিসার আশিক জামিল মাহমুদ। এ ওয়ার্ডে মোট ভোটার সংখ্যা ২১১ জন, এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ১৬২ জন ও নারী ভোটার ৪৯ জন, সাধারণ সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৪ জন।
(ওয়ার্ড নং-৪ মতলব দক্ষিণ) উপজেলায় প্রিজাইডিং অফিসার, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফয়সাল মোহাম্মদ আলী। এ ওয়ার্ডে মোট ভোটার সংখ্যা ৯০ জন, এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬৮ জন ও নারী ভোটার ২২ জন, সাধারণ সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৫ জন।
(ওয়ার্ড নং-৫ মতলব উত্তর) উপজেলায় প্রিজাইডিং অফিসার উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা তানভীর আনজুম অনিক। এ ওয়ার্ডে মোট ভোটার সংখ্যা ১৮৪, এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১৪১ ও নারী ভোটার ৪৩, সাধারণ সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৪ জন।
(ওয়ার্ড নং-৬ কচুয়া) উপজেলায় প্রিজাইডিং অফিসার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা, মোহাম্মদ সোফায়েল হোসেন। এ ওয়ার্ডে মোট ভোটার সংখ্যা ১৮৪ জন, এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১৩১ জন ও নারী ভোটার ৪১ জন, সাধারণ সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৬ জন।
(ওয়ার্ড নং-৭ হাজীগঞ্জ) উপজেলায় প্রিজাইডিং অফিসার উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহজালাল। এ ওয়ার্ডে মোট ভোটার সংখ্যা ১৭৬ জন, এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১৩৫ জন ও নারী ভোটার ৪১ জন, সাধারণ সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৩ জন।
(ওয়ার্ড নং-৮ শাহরাস্তি) উপজেলায় প্রিজাইডিং অফিসার উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ মাকসুদ আলম। এ ওয়ার্ডে মোট ভোটার সংখ্যা ১৫০ জন, এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১১৪ জন ও নারী ভোটার ৩৬ জন, সাধারণ সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৫ জন।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালে দেশে প্রথমবারের মতো জেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ২০২২ সালে হচ্ছে দ্বিতীয়বারের মতো নির্বাচন। দেশের স্থানীয় সরকারের ৫ ধরনের প্রতিষ্ঠানের মধ্যে কেবল জেলা পরিষদ নির্বাচনটি নির্দলীয়ভাবে অনুষ্ঠিত হয়। পরোক্ষ ভোটে অনুষ্ঠেয় এই পরিষদে স্থানীয় সরকারের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের নির্বাচিত প্রতিনিধিরাই হচ্ছেন ভোটার (নির্বাচকমণ্ডলী)। তিন পার্বত্য জেলা বাদে দেশের ৬১টি জেলার স্থানীয় সরকারের চার ধরনের (সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, উপজেলা পরিষদ ও ইউনিয়ন পরিষদ) প্রতিষ্ঠানের মোট সংখ্যা ৫ হাজার ২৪০টি। এতে মোট জনপ্রতিনিধি ৬৫ হাজার ৪৯৬ জন। আইন অনুযায়ী, স্থানীয় সরকারের এসব নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিই জেলা পরিষদের ভোটার (নির্বাচকমণ্ডলী)। তবে এদের মধ্যে ইউনিয়ন পরিষদের কোনও প্রতিনিধি সাময়িক বরখাস্ত হলে তিনি ভোটার হতে পারবেন না। ফলে জেলা পরিষদে সারা দেশে মোট ভোটার ৬৫ হাজার ৪৯৬ জন বা তারও কম হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *