জনদুর্ভোগ কামাতে উদ্যোগ নিন

কাজী মোহাম্মদ ইব্রাহীম জুয়েল :
চার বছর মেয়াদি বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্প আট বছরেও বাস্তবায়ন করতে না পারার দায় এড়াতে পারেন না এর সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা। বিষয়টিকে অদক্ষতা ও অযোগ্যতার একটি উদাহরণ বলে মনে করি আমরা।

জনগুরুত্বপূর্ণ এ প্রকল্প নির্ধারিত সময়ে শেষ না হওয়ায় রাজধানীমুখী ২২ জেলার মানুষ বছরের পর বছর ধরে নরকযন্ত্রণা ভোগ করে চলেছেন। যানজট, জলাবদ্ধতা, ধুলা দূষণ, মূল্যবান শ্রমঘণ্টা নষ্ট হওয়া এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের অপূরণীয় ক্ষতির শিকার হচ্ছেন তারা, যা কোনোমতেই গ্রহণযোগ্য নয়। প্রশ্ন হলো, এ দুর্ভোগের শেষ কোথায়?

শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গাজীপুর পর্যন্ত যানজট নিরসনে গৃহীত দ্রুতগতির পৃথক বাস লেন বা বিআরটি প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছিল ২০১২ সালে। অথচ এখন পর্যন্ত প্রকল্পটির অগ্রগতি হয়েছে মাত্র ৬৩ শতাংশ। শুরুতে এ প্রকল্পের ব্যয় ২ হাজার ৪০ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হলেও এবং ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও প্রথম দফায় এর মেয়াদ বাড়ানো হয় ২০১৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। ফলে প্রকল্পের ব্যয় দাঁড়ায় ৪ হাজার ২৬৪ কোটি ৮২ লাখ টাকায়। এরপর আরেক দফায় ২০২০ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানো হলে ব্যয় বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় ৪ হাজার ২৬৮ কোটি ৩২ লাখ টাকায়। সর্বশেষ করোনার অজুহাতে প্রকল্পটির মেয়াদ পুনরায় বাড়ানো হয়েছে; সেই সঙ্গে এর ব্যয়ও বাড়বে বলে জানা গেছে। প্রশ্ন হলো, এ প্রকল্পের মেয়াদ আর কয় দফা বাড়ানো হবে!

দীর্ঘদিন ধরে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলা এ প্রকল্প দৈনিক লাখ লাখ কর্মঘণ্টা নষ্ট করে রাষ্ট্র ও জনগণের বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতি করছে। উপরন্তু মানুষের চরম দুর্ভোগের কারণ হচ্ছে। উল্লেখ্য, সাড়ে ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ বিআরটি-৩ নামে পরিচিত জয়দেবপুর থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত চলমান প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রণালয়। যানজট কমিয়ে সড়কে গতি বাড়ানো এ প্রকল্পের উদ্দেশ্য থাকলেও বাস্তবতা হলো প্রকল্পটি বর্তমানে যানজট, জলাবদ্ধতা ও ধুলা দূষণ সৃষ্টি করে এ পথে চলাচলকারী মানুষের জীবন বিষিয়ে তুলেছে। তাই আমরা মনে করি, প্রকল্পসংশ্লিষ্টদের দ্রুত জবাবদিহিতার আওতায় আনা উচিত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *