টেকসই অর্থনৈতিক উন্নতির জন্য যেমনিভাবে নগরায়নের পাশাপাশি শিল্পায়ন দরকার। তেমনি শিল্পায়নের স্বার্থেই কর্মক্ষম তরুণদের নিয়ে জেলায় উদ্যোক্তা গড়ে তোলার ক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে একাধিক কর্মসূচি হাতে নেয়া জরুরি। কিন্তু মধ্যবিত্তদের জন্যে নতুন উদ্যোগ তৈরিতে পারিবারিক বাধা ও অর্থের অভাব উদ্যোক্তা তৈরিতে প্রধান অন্তরায়। জাতীয়ভাবে সিদ্ধান্ত হলেও জেলার ব্যাংকগুলো নতুন উদ্যোক্তাদের ঋণ দিতে চায় না। আবার পরিবারও কোনো সদস্যকে চাকরি বাদে উদ্যোক্তা হওয়ার আগ্রহ দেখায় না।
সেক্ষেত্রে উদ্যোক্তা তৈরিতে পারিবারিক বাধা দূর করতে পারে অর্থায়নের সহজলভ্যতা। অর্থনীতির স্বার্থে তরুণদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে বিনা ও স্বল্প সুদের পৃথক তহবিল গঠন করা জরুরি।
জেলার উল্লেখযোগ্য সংখ্যক তরুণ এখনো কোনো চাকরি, লেখাপড়া এমনকি প্রশিক্ষণের মধ্যে নেই। তরুণদের কর্মসংস্থান ও আর্থিক সচ্ছলতা নিশ্চিত করতে উদ্যোক্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।
উদ্যোক্তাদের জন্য ব্যাংক যেমন অর্থায়ন করবে, তেমনি নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রাখতে পারে। উদ্যোক্তার উন্নয়নে প্রযুক্তিগত জ্ঞানের উন্নয়ন ও যুগোপযোগী বিপণন কৌশল গ্রহণের বিকল্প নেই।
বরাবরই বলা হয় চতুর্থ শিল্প বিপ্লব হবে প্রযুক্তিনির্ভর। বিশ্ব ও জাতীয় অর্থনীতিতে টিকে থাকতে হলে তরুণ উদ্যোক্তাদের সব শিল্প-কারখানায় প্রযুক্তির ব্যবহারে সক্ষম হতে হবে। চাঁদপুরের বিটাক শিল্প এলাকাকে আরও বেশি কার্যকর করতে হবে। দেশের বিভিন্ন কারখানায় রোবটিকস প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু হয়েছে। প্রযুক্তি ব্যবহার শুরু হলে অনেক কর্মী বেকার হবেন। তাদের কর্মের ব্যবস্থা করতে হবে। বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থায় সরকারি চাকরির উপযুক্ত লোক তৈরি হচ্ছে।
কিন্তু অর্থনীতিতে টিকে থাকতে হলে উদ্যোক্তাবান্ধব শিক্ষা ব্যবস্থা তৈরি করতে হবে। উদ্যোক্তা হতে নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। প্রথম বাঁধা আসে পরিবার থেকে। আমরা সমাজের কেউ উদ্যোক্তা-ব্যবসায়ী শ্রেণীকে ভালো চোখে দেখি না। অথচ উদ্যোক্তাদের হাত ধরেই বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশের ব্র্যান্ডিং হচ্ছে। শিক্ষা ব্যবস্থার পরিবর্তনের পাশাপাশি সামাজিক কর্মসূচি তৈরি না হলে উদ্যোক্তা তরুণদের গড়ে উঠার আগ্রহ তৈরি হবে না।
কাজী মোহাম্মদ ইব্রাহীম জুয়েল