তালের বড়ায় তাল নেই আছে শুধু রং

মিষ্টান্ন দোকানে বিষাক্ত রং দিয়ে তৈরি হচ্ছে মচ-মচে রসালো তালের বড়া। বড়াটি মচ-মচে করতে চালের গুড়া দেওয়ার কথা ব্যবসায়ীরা বললেও তাতে দিচ্ছেন সোডা। আর এসব রং আর সোডার কারনে তাল দিতে হয় না। এই ধরনের খাবার গ্রহণের ফলে মানুষ স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পরছে। ফলশ্রুতিতেপাকস্থলিতে মারাত্মক রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এছাড়া গ্যাস্টিক, গ্যাস্টিক আলসার, জন্ডিসসহ নানা রোগ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

চলছে ভাদ্র মাস। ভাদ্র মাসের কথা মাথায় এলেই চলে আসে তালের নাম। আমাদের দেশে তাল অতিপরিচিত একটি ফল। এই সময়ে পাকা তালের ক্বাথ দিয়ে নানা রকম পিঠা-পায়েস তৈরি হয় বাঙালির ঘরে ঘরে। আর এই তাল থেকে গোল গোল বড়া তৈরির নামে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী মেশাচ্ছে রং। যা পেটে গিয়ে নানা ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। প্রশাসনের সঠিক তদারকির ফলে অসাধু এই ব্যবসায়ীরা মানুষের সাথে প্রতারণা করে যাচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, চাঁদপুর শহরের পালবাজার এলাকার ঘোষ কেবিন, মিহির সুইটস, মা সুইটস, বসু সুইটস, মানিক রেস্টুরেন্ট ও পুরাণবাজার এলাকার বিভিন্ন মিষ্টান্ন দোকানে বিষাক্ত রং দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে মচ-মচে রসালো তালের বড়া। বড়াটি মচমচে করার জন্য চালের গুড়া দেওয়ার কথা ব্যবসায়ীরা বললেও তাতে দিচ্ছেন সোডা। আর এসব রং আর সোডার কারনে তাল দিতে হয় না। এই ধরনের খাবার গ্রহণের ফলে মানুষ স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পরছে।

তালে রয়েছে ভিটামিন এ, বি, সি, জিংক, পটাশিয়াম, আয়রন, ক্যালসিয়ামসহ আরও অনেক খনিজ উপাদান। এর সঙ্গে আরও আছে অ্যান্টি-অক্সিজেন ও অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি উপাদান।

পাকা তালের প্রতি ১০০ গ্রাম খাদ্যযোগ্য অংশে রয়েছে খাদ্যশক্তি ৮৭ কিলোক্যালরি, জলীয় অংশ ৭৭.৫ গ্রাম, আমিষ .৮ গ্রাম, চর্বি .১ গ্রাম, শর্করা ১০.৯ গ্রাম, খাদ্য আঁশ ১ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ২৭ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ৩০ মিলিগ্রাম, আয়রন ১ মিলিগ্রাম, থায়ামিন .০৪ মিলিগ্রাম, রিবোফ্লাভিন .০২ মিলিগ্রাম, নিয়াসিন .৩ মিলিগ্রাম ও ভিটামিন সি ৫ মিলিগ্রাম।
মানিক রেস্টুরেন্টের মালিক অসিম দে জানায়, দোকানে প্রতিদিন ১৫-২০ কেজি তালের বড়া তৈরি করা হয়। প্রতি কেজি ১০০-১২০ টাকায় বিক্রয় করা হয়। তালের বড়ায় তাল নেই, এটা ভুল কথা। তবে একটু দেওয়া হয়। আর বড়াতে অল্প রং দেওয়া হয়।
২৫০ শয্যা বিশিষ্ট চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের (আরএমও) ডাঃ সুজাউদ্দোলা রুবেল জানায়, রং ব্যবহার করা খাদ্য মানবদেহের অনেক ক্ষতি হয়ে থাকে। এর ফলে পাকস্থলিতে মারাত্মক রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এছাড়া গ্যাস্টিক, গ্যাস্টিক আলসার, জন্ডিসসহ নানা রোগ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

চাঁদপুর জেলা মার্কেটিং অফিসার এন এম রেজাউল ইসলাম বলেন, নিন্মমানের খাবার ও খাদ্যে ভেজাল রোধে জেলা প্রশাসনের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। সুনির্দিষ্ট তথ্য পেলে অভিযান পরিচালনা করা হবে।

স্টাফ রিপোর্টার,২৬ আগস্ট ২০২১;

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *