দক্ষতা অর্জনে চাঁদপুরে বিটাকের ৩ মাসব্যাপি কারিগরি প্রশিক্ষণ

আবদুল গনি চাঁদপুরে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র কুটির ও কারিগরি শিল্প সহায়তা কেন্দ্রের দু’টি প্রশিক্ষণ কোর্স চালু রয়েছে। সাফল্যের ধারাহাহিকতায় এ প্রতিষ্ঠানটি বিগত একদশক ধরে এর সুনাম অক্ষুন্ন রেখে চলছে। চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প প্রতিষ্ঠানটির ২টি প্রশিক্ষণ কোর্স চলমান রয়েছে। এর একটি হলো ওয়েল্ডিং অপরটি হলো ইলেকট্রিক এন্ড মেইনটেনেন্স ।

২০২১-২০২২ অর্থবছরের চাঁদপুর জেলায় তিন মাসব্যাপি ৩টি ব্যাচ ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে একটি চলমান রয়েছে। বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সংস্থার অতিরিক্ত পরিচালক মো.জাহাঙ্গীর আলম জানান।

প্রাপ্ত তথ্য মতে, প্রত্যেকটিতে ৫০ জন এবং ইলেকট্রনিক ৬০ জন প্রশিক্ষণার্থীকে তিন মাসব্যাপি এ প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। ৩০ শতাংশ মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত আসন।

নুন্যতম অষ্টম শ্রেণি পাশ একজন শিক্ষার্থী এ প্রশিক্ষণের সুযোগ পেয়ে থাকে। বিভিন্ন শিল্প কারখানায় এবং ইলেকট্রনিক কাজে মানুষের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এছাড়াও বিদেশেও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত যুবকরা কর্মসংস্থানের সুযোগ পাচ্ছে বলে অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম জানিয়েছেন ।

তথ্য মতে, চাঁদপুরের এ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে আত্ম-কর্মসংস্থান ও দারিদ্র্য বিমোচন শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় প্রথম ১০ বছর মেয়াদী প্রকল্পটি ২০২০-২০২১ অর্থবছরে শেষ হবার পর ২০২১-২২ অর্থবছরে পুনরায় দ্বিতীয় পেজ শুরু হয়।
বিদ্যুৎ এবং ওয়েল্ডিং প্রশিক্ষণে ৫০+৬০ জন করে মোট ১১০ জন প্রশিক্ষণার্থী তিন মাস মেয়াদি কোর্সে অংশগ্রহণ করতে পারে। নারীদের অগ্রাধিকার দিয়ে চাঁদপুরে বাংলাদেশ শিল্প কারিগরি সহায়তা কেন্দ্রটির দু’টো কোর্স‘আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি ও দারিদ্র বিমোচন শীর্ষক প্রকল্প’ (সেপা) এর অধীনে বাস্তবায়ন হচ্ছে। ২০১১ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত এ প্রকল্পের মেয়াদ ছিল ।

সরকার এ দেশের বেকার দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে স্বাবলম্বী করার লক্ষ্যে সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি ও দারিদ্র বিমোচন শীর্ষক প্রকল্প’ (সেপা ) এর পরিচালনার মাধ্যমে বেকারদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করছে। এটি সরকারে একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ। স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা থেকে ঝরেপড়া গরীব পিতার মেধাবী সন্তানগণ এ প্রকল্পে অংশগ্রহণ করে নিজকে স্বাবলম্বী হতে সহায়তার পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কাজ করার অপূর্ব সুযোগ করে দিয়েছে।

বিটাক সূত্রটি আরো জানায়, ২০০৮ সালের বর্তমান সরকারের তৎকালীন নির্বাচনি ইশতেহারে উল্লেখিত শিল্প কারিগরি সহায়তা সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা অনুযায়ী এ প্রকল্পটি শিল্প মন্ত্রণালয় গ্রহণ করে। তখন থেকে সরাসরি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রকল্পটি মনিটরিং করেন।

শুধু প্রবাস নয় দেশেও কর্মসস্থানে দক্ষ লোকের প্রয়োজনীয়তা থেকে সরকারের সাথে দেশের প্রতিষ্ঠিত ও পরিচালিত শিল্প-কারখানার মালিক বা পরিচালকদের চুক্তি রয়েছে এবং সে অনুযায়ী বাংলাদেশ শিল্প কারিগরি সহায়তা কেন্দ্রের প্রশিক্ষিত ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিয়োগ দেয়ার নির্দেশ রয়েছে।

দারিদ্র ও বেকারত্বের অন্ধকার থেকে আলোর পথে নিয়ে আসার জন্যে বর্তমান সরকারের ‘ভিশন ২০২১’অর্জনে বাংলাদেশ শিল্প কারিগরি সহায়তা কেন্দ্র (বিটাক) আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি ও দারিদ্র বিমোচনে ৩ মাসব্যাপি মহিলাদের জন্যে ৯টি ও ২ মাসব্যাপি চাঁদপুরে পুরুষদের ২টি ট্রেডে প্রশিক্ষণ প্রদান করে আসছে ।

বিটাক সর্বপ্রথম কারিগরি শিক্ষাকে এগিয়ে নিতে ১৯৬২ সালে তেজগাঁও, ১৯৭৩ সালে চট্টগ্রাম , ১৯৭৮ চাঁদপুর, ১৯৯১ সালে খুলনায় এবং ২০০৬ সালে বগুড়ায় এ সংস্থাটি প্রতিষ্ঠা লাভ করে। সরকার আরো বেশ ক’টি বাংলাদেশ শিল্প কারিগরি সহায়তা কেন্দ্র (বিটাক) প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

প্রশিক্ষণ নেয়ার সুযোগ গ্রহণে কর্মক্ষম যে কোনো নাগরিক সংস্থার নির্দিষ্ট ফরমে সরাসরি হেড অফিসের বরাবর দরখাস্ত করতে হয়। সারাবছর এ আবেদন গ্রহণ করা হয়ে থাকে এবং ক্রমান্বয়ে ব্যাচের সাথে সংযুক্ত করে প্রশিক্ষণের সুযোগ প্রদান করা হয়।

প্রসঙ্গত, ১১ বছরে চাঁদপুরে ৮০টি ব্যাচ সম্পন্ন করা হয়। শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন সরকারিভাবে এ প্রশিক্ষণ কোর্স দেশের বিভিন্ন শিল্প কারখানায় তাদের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে যুবকদেরকে প্রশিক্ষণ হিসেবে দক্ষ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য এ প্রশিক্ষণের মূল লক্ষ্য বরে জানা যায় ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *