কাজী মোহাম্মদ ইব্রাহীম জুয়েল
আমাদের দেশে বিভিন্ন জিনিসের দাম নিয়মিতভাবে দফায় দফায় বাড়ে কিন্তু কমে না, বিশেষ করে নিত্যপণ্যের দাম। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের শুরু থেকেই একের পর এক পেঁয়াজ, চাল, তেল, ডিম, সবজি, কাঁচামরিচসহ প্রায় সব নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামই বেড়েছে। যা কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। এর মধ্যে আবার নতুন করে গরুর মাংসের দাম বেড়েছে। গতকাল আমাদের সময়ের এক প্রতিবেদনে জানা যায়, শীত মৌসুমে বিয়েশাদিসহ পারিবারিক ও সামাজিক নানা ধরনের আয়োজন বাড়ায় ব্যাপক চাহিদা বেড়েছে গরুর মাংসের। এ সুযোগে মাংসের ব্যবসায়ীরাও দাম হাঁকাচ্ছেন ইচ্ছেমতো। এলাকা ও দোকানভেদে বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন দামে। কোথাও গরুর মাংসের কেজি ৬০০ টাকা, কোথাও আবার ৬২০ টাকা গুনতে হচ্ছে। দৈনিক জনপ্রতি ১২০ গ্রাম হিসাবে দেশে বছরে মাংসের চাহিদা ৭৪ লাখ টন। সরকারি হিসাবে মাংস উৎপাদিত হচ্ছে তার অনেক বেশি।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর তাদের বার্ষিক প্রতিবেদনে বলেছে, বাংলাদেশ বর্তমানে গবাদিপশু উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ। কিন্তু ব্যবসায়ীরা বলছে অন্য কথা, বেশি দামে গরু কিনতে হয় বলে মাংসের দামটাও বাড়তি। এতে বোঝা যাচ্ছে, ব্যবসায়ীদের কারসাজির কারণে মাংসের দাম বাড়ছে। এর কারণ কি ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট? সিন্ডিকেট তথা মুষ্টিমেয় ব্যবসায়ী বাজার একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ করে। এদের নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না কেন? বাজার সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ না করা গেলে মাংসের দাম দিন দিন বাড়তেই থাকবে। দেশের বাজারে কেউ অতিরিক্ত মুনাফা লাভের চেষ্টা করছে কিনা, তাও খতিয়ে দেখা দরকার। এ বিষয়ে কারও অপরাধ প্রমাণিত হলে তাকে যথাযথ শাস্তির আওতায় আনতে হবে। মাংসসহ দেশের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের স্বাভাবিক সরবরাহ, ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে হবে। সরকার তথা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে কঠোর মনোভাব নিয়ে অগ্রসর হতে হবে বাজার মনিটরিং ও দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে। অতিমুনাফার অপচেষ্টা যেই করুক না কেন, তাকে জরিমানা করতে হবে। বাজার নিয়ন্ত্রণের জন্য রাষ্ট্র-সমাজের সচেতন দায়িত্বশীল মহলের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা জরুরি।