নদী ভাংতি পরিবারের পরিসংখ্যান জরুরি

কাজী মোহাম্মদ ইব্রাহীম জুয়েল ॥
স্বাধীনতার পর থেকে আজ পযন্ত চাঁদপুর শহরের পুরানবাজারের বাণিজ্যিক স্থানসমূহের, হরিসভা ও পশ্চিম শ্রীরামদী গ্রামের অধিকাংশ এলাকায় মেঘনার করালগ্রাসে বিলীন হয়ে গেছে। ভিটেমাটি হারা পরিবারগুলি আশ্রয় নিয়েছেন বিভিন্ন স্থানে। গৃহহারা নদীভাঙা অনেকে নদীর পাড়ে শহররক্ষা বাঁধের কিনারে মাথা গুজে আছেন।
নদীগর্ভে বিলীন হওয়ায় অনেক ব্যবসায়ী হারিয়েছেন তাঁদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, কলকারখানা। বসবাসরত মানুষজন হারিয়েছে তাদের বাপ-দাদার ভিটেমাটি।
এ পর্যন্ত নদী ভাঙা গৃহহারা পরিবার ও লোকদের সংখ্যা ঠিক কতজন কোন জরিপ কাজ আজ পর্যন্ত হয়নি।
সম্প্রতি চাঁদপুর শহর রক্ষা বাঁধের বেশ কিছু এলাকার সিসি ব্লক হঠাৎ করে মেঘনা নদীতে ধসে পড়ে। আর এতে করে আতঙ্কে রয়েছে স্থানীয় বাসিন্দারা। গতকাল সকালে শহরের টিলাবাড়ি এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। ঘটনার খবর শুনে আশপাশের মানুষ দিকবিদিক ছুটাছুটি করতে দেখা যায়।
ডাকাতিয়া নদী চাঁদপুর জেলা শহরকে দুই ভাগে বিভক্ত করেছে। এক অংশ পুরানবাজার, যেখানে রয়েছে শহর রক্ষা বাঁধের প্রায় দেড় কিলোমিটার। আরেক অংশ নতুনবাজার, যেখানে রয়েছে মোলহেডসহ বাঁধের ২ কিলোমিটার। জেলা শহরের মাঝখান দিয়ে বয়ে গেছে মেঘনার শাখা নদী ডাকাতিয়া, যা আঁকাবাঁকা হয়ে প্রবাহিত হয়ে যুগযুগ ধরে দুই কুলের বাজার গুলোকে ব্যবসা বাণিজ্যে সমৃদ্ধ করে মিশে গেছে সেই কুমিল্লায়।
এই বাঁধের সবটাই ভালনারেবল, তাই ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে পুরো বাঁধ এলাকা। শহররক্ষা বাঁধের ৩৩৬০ মিটারের মধ্যে পুরানবাজার অংশে (১৪৩০ মিটার অর্থাৎ ১.৪৩০ কিলোমিটার) রয়েছে হাজার হাজার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাড়িঘর। বাকিটুকু জেলা শহরের নতুনবাজার অংশে ।
বাঁধ ঘুরে দেখা গেলো, এরই মধ্যে বর্ষা আরম্ভ হবার আগেই বাঁধের বিভিন্নস্থানে মেঘনার বুকে তলিয়ে যাচ্ছে বালিভর্তিজিইও ব্যাগ। মেঘনাপাড় ও আশপাশের বিশাল এলাকার হাজার হাজার পরিবারের লোকজন আতংকে দিন রাত কাটাচ্ছে। তাঁদের একটাই দাবি, মেঘনার করাল গ্রাস থেকে স্থায়ীভাবে চাঁদপুর শহররক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা হোক। গতবার স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের আশ্বাস প্রদান করা হলেও তার এখনো খবর হয়নি।
এ নিয়ে জেলা শহরের নতুনবাজার ও পুরানবাজারবাসীর মাঝে দেখা দিয়েছে আতংক। জানালেন মেঘনার ভাংগনে ২-৩ বার ভিটেমাটি হারানো অসহায় নদীর পাড়ে আশ্রয় নেয়া মানুষজন। পুরানবাজারসহ আশপাশ এলাকা ৩শতাধিক বছরের পুরনো জনপদ। হারানো ব্যবসা বাণিজ্যের ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে যেভাবেই হোক পুরানবাজার ও আশপাশের এলাকাকে স্থায়ী বাঁধ দিয়ে রক্ষা করা অতিব জরুরি ও এখন সময়ের দাবি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *