জাতির পিতার প্রতি পুলিশের গভীর শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ও মায়ার শেষ নেই : পুলিশ সুপার পিবিআই

স্টাফ রিপোটার

সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩ তম জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে কেক কাটা ও আলোচনা সভা উদযাপন করেন বাংলাদেশ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন পিবিআই চাঁদপুর জেলা শাখা।

১৭ মার্চ শুক্রবার সকাল ১০ঃ৩০ ঘটিকায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন পিবিআই চাঁদপুর জেলা কার্যালয়ের হল রুমে পুলিশ সুপার মোঃ মোস্তফা কামাল রাশেদ এর সভাপতিত্বে পরিদর্শক কবির আহমেদ এর সঞ্চালনায় এই কেক কাটা ও আলোচনা সভা উদযাপন করা হয়।
পুলিশ সুপার মোঃ মোস্তফা কামাল রাশেদ তার ব্যক্তবে বলেন জাতির পিতার প্রতি পুলিশের অনেক শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ও মায়ার শেষ নেই। বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে আমরা এই দেশ পেতাম না। আমি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের একজন ছাত্র। আমি পৃথিবীর অনেক দেশের ইতিহাস পড়েছি, অনেক দেশ স্বাধীন হতে বছর থেকে বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর দক্ষ নেতৃত্বের কারনে আমাদের দেশ মাত্র ৯ মাসে স্বাধীন হয়। যা কিনা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল ঘটনা। বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ডাকে রাজাবাগ পুলিশ লাইন থেকে পুলিশরাই সর্বপ্রথম প্রতিরোধ গড়ে তুলে।

সেই স্বাধীনতার মহানায়ক বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনটি ‘জাতীয় শিশু দিবস’ হিসেবে পালন করা হয়। বাংলার রাখাল রাজা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ গোপালগঞ্জের নিভৃত গ্রাম টুঙ্গীপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে জন্ম নেওয়া শেখ মুজিবুর রহমান দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছিলেন। বাঙালি জাতির মুক্তির জন্য তিনি নিজের জীবনকে উৎসর্গ করেছিলেন। দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের পথ পেরিয়ে শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতার মহান স্থপতি ও বিশ্বের নিপীড়িত মানুষের মুক্তি সংগ্রামের অনুপ্রেরণার উৎসও হয়ে ওঠেন।

 

দুইবার তিনি ফাঁসির কাষ্ঠে মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছেন, ১৮ বার কারাবরণ করেছেন। পাকিস্তাানি শাসক চক্রের রক্ত চক্ষু উপেক্ষা করে সকল আন্দোলন-সংগ্রামের নেতৃত্ব দিয়ে জাতিকে মুক্তিযুদ্ধের জন্য তৈরি করেছেন। ’৫২, ’৫৪, ’৬২, ’৬৬- এর আন্দোলন আর ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান ’৭০-এর নির্বাচনে বিজয় সবই জাতির সংগ্রামী ইতিহাসের একেকটি মাইলফলক। আর এই সংগ্রামের নেতৃত্ব ও বলিষ্ঠ ভূমিকায় ছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান। ৬৯- এর গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে কারাগার থেকে মুক্তির পর তিনি বঙ্গবন্ধু উপাধিতে ভূষিত হন। স্বাধীনতা যুদ্ধে বিজয় লাভের পর পাকিস্তানের বন্দিদশা থেকে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মুক্তি লাভ করে ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি স্বদেশ ভূমিতে ফিরে আসেন। তিনি বাঙালির অর্থনৈতিক মুক্তি অর্থাৎ দ্বিতীয় বিপ্লবের ডাক দেন। মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় মানবতার শত্রু, স্বাধীনতা বিরোধী, দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে ঘাতক চক্র ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করে। দেশ ও স্বাধীনতাকে ব্যর্থ করার লক্ষ্যে শত্রুরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারকে হত্যা করে।
তা সত্ত্বেও নিপীড়িত মানুষের নেতা, গণমানুষের নেতা হিসেবে আজ বঙ্গবন্ধুর নাম বিশ্বব্যাপী সমাদৃত। বিশ্বনেতাদের চোখে তিনি হিমালয়সম।স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম দিয়ে তার খ্যাতি ছড়িয়ে আছে বিশ্বময়। তার ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ডস ডকুমেন্টারি হেরিটেজের স্বীকৃতি পেয়েছে। এ ভাষণের অন্য নাম ‘বজ্রকণ্ঠ’। সার্বিকভাবে বঙ্গবন্ধু একটি আদর্শের নাম, যে আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে বাঙালি জাতি মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল, বিশ্বের বুকে জন্ম দিয়েছিল স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের। ব্যক্তিস্বার্থ, লোভ, মোহ, পদ-পদবির ঊর্ধ্বে উঠে নিজের বিশ্বাসে অটল থেকেছিলেন বঙ্গবন্ধু। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রিত্ব নয়, এদেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠাই ছিল তার লক্ষ্য। তিনি কখনো ক্ষমতার পেছনে ছোটেননি। ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলাই ছিল তার একমাত্র লক্ষ্য। বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তার পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। আজ বাংলাদেশের সর্বত্রই ডিজিটালের ছোঁয়া। ১৫ বছরের আগের পুলিশ বর্তমান পুলিশের মধ্যে অনেক পরিবর্তনের ছোঁয়া নিয়ে এসেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।সর্বশেষ তিনি বঙ্গবন্ধুর আত্মার মাগফেরাত ও শান্তি কামনা করে তার বক্তব্য শেষ করেন।

 

 

সকালে ৮টায় শহরের হাসান আলী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ থেকে দিবসটি উপলক্ষে শোভাযাত্রা বের হয়ে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে চাঁদপুর সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে এসে শেষ হয়। এরপর পুলিশ সুপার (পিবিআই) মোঃ মোস্তফা কামাল রাশেদ নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) চাঁদপুর পরিদর্শক মোঃ কবির আহম্মেদ, পুলক বড়ুয়া, আতিকুর রহমান, মীর মাহবুবুর রহমান, ইউনুছ খন্দকার, শামীম আহম্মেদ, আবু বক্কর প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *