৮০ হাজারে ২ সন্তান বিক্রি : মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিলো পুলিশ

৮০ হাজারে ২ সন্তান বিক্রি : মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিলো পুলিশ

হাজীগঞ্জ প্রতিনিধি

চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে নিজের দুই মেয়েকে বিক্রি করে দিয়েছিলেন এমরান হোসেন নামের এক বাবা। ৮০ হাজার টাকায় দুই সন্তানকে বিক্রির বিষয়টি প্রায় দুই বছর গোপন রাখেন তিনি। সম্প্রতি বিষয়টি জানাজানি হলে পুলিশ দুই বোনকে মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) রাতে উদ্ধার করে মা-বাবার কোলে তুলে দেয়। স্থানীদের ধারণা, বেকারি শ্রমিক এমরান হোসেন দুই বিয়ে করে অভাবের তাড়নায় এই কাণ্ড করেছেন।
এমরান হোসেন উপজেলার ৭ নম্বর বড়কুল পশ্চিম ইউনিয়নের নাটেহরা গ্রামের বাসিন্দা। হাজীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জোবাইর সৈয়দ বুধবার (২০ জুলাই) বিকাল ৩টায় মা জান্নাত বেগম ও বাবা এমরান হোসেনের হাতে দুই কন্যা শিশুকে তুলে দেন।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলেজ জানাগেছে, এমরান আগে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। প্রথম স্ত্রী জান্নাতকে নিয়ে গ্রামে তথা নাটেহরা গ্রামে বসবাস করেন। দ্বিতীয় স্ত্রী থাকেন চট্টগ্রামে। এমরান প্রায় দেড় বছর আগে প্রথম স্ত্রীর ঘরের তিন সন্তানের মধ্যে বড় মেয়ে ইভাকে (৫) ৪০ হাজার টাকায় ফরিদগঞ্জ উপজেলায় এবং ছোট মেয়ে রিয়াকে (১৮ মাস) চাঁদপুর সদর উপজেলায় ৪০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেন।
গ্রামে থাকলে খাবারের কষ্ট পাবে তাই ছোট স্ত্রীর কাছে ভালো থাকবে-এমন মিথ্যা বুঝিয়ে প্রথম স্ত্রীর কাছ থেকে তার দুই মেয়েকে নিয়ে গোপনে বিক্রি করেন এমরান। এমরান তার দুই মেয়েকে বিক্রি করেছেন-এমন খবর এলাকায় চাউর হয়ে যায়। এরপর পুলিশ মঙ্গলবার রাতে অভিযান চালিয়ে ইভা ও রিয়াকে উদ্ধার করেন।
আজ থানা কমপ্লেক্সে শিশুদের লালন-পালনকারী দুই মাকেও নিয়ে আসা হয়। তারা জানান, লিখিতভাবে স্ট্যাম্পের মাধ্যমে শিশুদের বাবার কাছ থেকে দত্তক নিয়ে দুই বছর ধরে তাদের লালন-পালন করছেন।
তারা আরো বলেন, ওই সময় বলা হয়েছে, শিশুদের মা মারা গেছেন। তাই তারাও প্রয়োজনে এবং মানবিক দিক বিবেচনা করে শিশুদের দত্তক নিয়েছেন।
শিশুদের বাবা এমরান হোসেন বলেন, আমার ভুল হয়েছে। ওই সময়ে টাকার বিনিময়ে মেয়েদের দত্তক দিয়েছি। আর এই ভুল হবে না। এখন আমি আমার মেয়েদের লালন-পালন করব।
হাজীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জোবাইর সৈয়দ জানান, তারা যে প্রক্রিয়ায় শিশুদের দত্তক নিয়েছেন, তা বিধিসম্মত নয়। তাই শিশুদের মা-বাবার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *