ফরিদুল ইসলাম: চাঁদপুরের অলিগলিতে যেখানে পেঁয়াজের ভ্যান সেখানে ক্রেতাদের জটলা। চাঁদপুরের পালের বাজার থেকে শুরু করে ভ্যানে করে চলছে পেঁয়াজ বিক্রির হাকডাক। কখনো ৩ কেজি ১০০ আবার কখনো ৩ কেজি ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ। যে পেঁয়াজ দুই সপ্তাহ আগে খুচরায় ৫৫ টাকা টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে তা ৩০ টাকা কেজিতে পাওয়ায় খুশি তারা। রমজানকে সামনে রেখে পেঁয়াজের দাম অর্ধেকে নেমে আসায় মানুষের মধ্যে স্বস্তি দেখা দিয়েছে।
অপর দিকে সয়াবিন তেলের দাম রাতারাতি অনেক বেশী না কমলেও ধীরে ধীরে কমতে থাকার কারণে ক্রেতাতের মধ্যে আশার আলো দেখা দিয়েছে। যেখানে ২০০ কেজিতেও থামছিলা সয়াবিন তেলের দাম। সেখানে এক সপ্তাহের ব্যাবধানে ১৬০ টাকা কেজিতে চলে আসায় সাধারণ ক্রেতাদের মধ্যেকার ভয় দূর হচ্ছে। তবে অনেক দোকানে এখনো ১৭০-১৭৫ টাকায় সয়াবিন তেল বিক্রি হতে দেখা যায়।
এদিকে টিসিবির পণ্য সরবরাহ বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে মানুষের মধ্যে অনেকটাই স্বস্তি ফিরে এসেছে। মাসের শুরুতে যখন নিত্যপণ্যের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছিল তাতে মানুষ পরিবার পরিজন নিয়ে কিভাবে চলবে তা নিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু সরকারের একের পর এক উদ্যোগের ফলে বাজারের অস্থিতিশীলতার লাগাম যেন নিয়ন্ত্রণে চলে আসতে শুরু করেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সরবরাহ বেশি হওয়ায় পাইকারিতে কমছে পেঁয়াজের দাম। তার প্রভাব ধীরে ধীরে পড়ছে খুচরায়। মূলত সারা বছর ভারত থেকে সড়কপথেই সিংহভাগ পেঁয়াজ আমদানি হয় দেশে। মৌসুমের শুরু থেকে মাঝামাঝি পর্যন্ত মিয়ানমার থেকে পেঁয়াজ আসে। সংকটের সময় বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে সমুদ্রপথে আসা বাহারি সব পেঁয়াজের দেখা মেলে। এখন বাংলাদেশের মেহেরপুরি পেঁয়াজের সরবরাহ ও বিক্রি বেশি আড়তে। তবে পচনশীল কাঁচাপণ্য হওয়ায় পেঁয়াজ বেশিদিন রাখা যায় না আড়ত বা গুদামে। তাই সরবরাহের ওপরই দাম নির্ভর করে। সরবরাহ বেশি হলে দাম কমে, সরবরাহ কমলে দাম বাড়ে।
চাঁদপুর পাল বাজার আড়ৎদাররা পেঁয়াজ, রসুন, আদা সারা জেলাতেই সরবরাহ করেন। আমদানীর উপর দামের তারতম্য হয়। তাছাড়া বেশিদামে কিনলে বেচা বেশী দামে।
পালের বাজারের সামনে ভ্যানে করে এক পেঁয়াজ বিক্রেতা জাহাঙ্গীর চাঁদপুর সময়কে জানান, আড়তে কমলে আমরাও কমে ছাড়ি। আড়তে বাড়লে আমরাও বাড়িয়ে বেচি।’ আর আড়তদাররা তো আর আমদানী করেন না। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এখানে ব্যবসায়ীরা আনেন। তাই তাদের উপরই নির্ভর করে আমাদের বেচাকেনা।
পালের বাজারের এক মুদি ব্যবসায়ী নেছার হোসেন জানান, পেঁয়াজ এবং তেলে এখন লোকশান দিতে হবে। কারণ আগের কিনা মাল এখন বর্তমান দামে ছাড়তে হবে। বেশি দামে কাস্টমাররা নিবে না।’ তাই সব পণ্যের দামই স্থিতিশীল হওয়া দরকার। নইলে আমরা ব্যবসায়ীরা মাইর খাবো।’
চাঁদপুর পাল বাজারের দক্ষিণ মাথায় রয়েছে বেশ কয়েকটি পেঁয়াজের দোকান। এসব দোকানে অন্তত তিন প্রকারের পেঁয়াজ বিক্রি হয়। এর মধ্যে সাম্প্রতিক ইন্ডিয়ান পেঁয়াজ বাজারে আসার কারণে বাজার ঠান্ডা হয়েছে বলে জানান এসব দোকানীরা। এখানে প্রতি কেজি ইন্ডিয়ান পিয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩০-৩৫ টাকায়।
এদিকে দুর দুরান্ত থেকে কেনাকাটা করতে আসা সাধারন ক্রেতারা মনেকরছেন পেঁয়াজের দাম আরো কমবে। হিলি বন্দর দিয়ে ভারতীয় পেঁয়াজ এসেছে সেখানে পেঁয়াজের কেজি ২০টা। সেটা এখানে এসে এখনো ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তাছাড়া সয়াবিন তেলের দাম সরকার কমিয়ে আনলেও খুচরা বাজারে এখনো দাম বেশী।
তবে বাজার যেন সিন্ডিকেটর মধ্যে পড়তে না পারে সেই জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে বাজার মনিটরিং বাড়ানো যথেষ্ট প্রয়োজন রয়েছে বলে মনেকরছেন সকলে।
৩ কলাম ছবি ৩