ফরিদগঞ্জে আমনের বাম্পার ফলনেও শঙ্কায় কৃষকরা

মো. আনিছুর রহমান সুজন

ফরিদগঞ্জ উপজেলায় চলতি বছর রোপা আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। কিন্তু ধানের মূল্য নিয়ে শঙ্কায় আছেন কৃষকরা। চলতি মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে আমন ধানের চাষ হয়েছে বলে দাবী উপজেলা কৃষি অর্ধিদপ্তরের।
উপজেলার রূপসা দক্ষিণ,চর দুঃখিয়া পূর্ব, পাইকপাড়া উত্তর, দক্ষিণ ও পৌরসভা এলাকার কয়েকটি গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, মাঠভরা পাকা আমন ধান।

চাষিরা বলছেন, আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে তবে ন্যায্যমূল্য নিয়ে চিন্তায় রয়েছে তারা। বাম্পার ফলন আশা করলেও গত বছরের বাস্তব অভিজ্ঞতার কারণে এ বছরও ধানের মূল্য নিয়ে শঙ্কিত।

তাদের দাবি, ধানের সঠিক দাম পেতে এখন থেকেই সরকারি তৎপরতা শুরু করা হোক। কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর উপজেলার একটি পৌরসভা ও ১৫ ইউনিয়ন মিলিয়ে ৮ হাজার ৩৫০ হেক্টর লক্ষ্যমাত্র নির্ধারন করা হলেও ৯ হাজার হেক্টর জমিতে রোপা আমন চাষ করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলার চর দুঃখীয় ইউনিয়নের গুপ্তের বিল এলাকার কৃষক আবুল কালাম মিয়া (৫৫),বলেন নিয়মিত পরিচর্যা ও সময়মতো সার প্রয়োগের ফলে ফলন ভালো হয়েছে। তবে শ্রমিক সঙ্কট থাকায় জমি থেকে ধান কাটতে সময় বেশি লাগছে। ধান কাটার ব্যয়ও বেড়েছে। যারা হারভেস্টার মেশিন দিয়ে ধান কাটতে পারছেন, তারা স্বল্প সময়ে ও কম খরচে ধান ঘরে তুলতে পারছেন। আমাদের এদিকে হারভেস্টার মেশিন নেই। তাই শ্রমিক দিয়ে ধান কাটতে হয়।

ওই এলাকার কৃষক মিসির আলী (৬০) বলেন, গত মৌসুমে অতিবৃষ্টির কারণে আমনের ফলন ভালো হয়নি। এ বছর অনুকূল আবহাওয়া, পোকার আক্রমণ ও রোগ-বালাই কম হওয়ায় অধিক ফলন হয়েছে। যদি ধানের ভালো দাম পাওয়া যায়, খরচ পুষিয়ে লাভ হবে।

এ ব্যাপারে উপজেলার পাইকপাড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের কৃষক আবু বকর (৫০), ইয়াকুব আলী (৬০)সহ কয়েকজন কৃষক জানান, প্রতি বছর চার-পাঁচ একর জমি চাষ করছেন। কীটনাশক, সার, সেচের পানি, শ্রমিকের মজুরি, মজুদ, সংরক্ষণ ও বাজারজাতের ক্রমবর্ধমান খরচের পর ধানের ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা চলতি বাজার তাদের মনে ভয় ধরিয়ে দিচ্ছে। ধানের ফলন ভালো হয়েছে ফলে তারা খুশি। আবার যদি বাজারে ধান বিক্রি করার সময় তাদের শ্রম অনুযায়ী মূল্য না পান সেই সঙ্কায় দিন কাটছে তাদের। এর পরেও ন্যায্যমূল্য পাওয়ার আশা নিয়ে কয়েক দিন যাবৎ শুর হয়েছেকিছু কিছু ধান কাটা।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আশিক জামিল মাহমুদ বলেন, ভালো ফলন পেতে মাঠ পর্যায়ে আমরা কৃষকদের বিভিন্নভাবে পরামর্শ দিয়েছি। এতে চলতি রোপা আমন মৌসুমে আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষকরা যদি ধানের ন্যায্য মূল্য পায় তবে ধানের উৎপাদন প্রতি বছর এভাবেই লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *