ফরিদগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কে ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ-রায়পুর আঞ্চলিক মহাসড়কটি একটি গুরুত্বপুর্ণ সড়ক। এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন হাজারও ছোট মাঝারি ও বড় যানবাহনের চলাচল। অথচ দীর্ঘ দিন ধরে এ সড়কটির বেহাল দশা। ফরিদগঞ্জ উপজেলার শোভান রাস্তার মোড় হতে গৃদকালিন্দিয়া পর্যন্ত প্রায় ৯ কিলোমিটার সড়কটির অবস্থা খুবই নাজুক। এই পুরো ৯ কিলোমিটার সড়কটির বিভিন্ন জায়গায় পিচ ঢালাই উঠে গিয়ে অসংখ্য ছোট বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। তাছাড়া এ সড়কের পাশে গড়ে ওঠা বিভিন্ন বাজারের সামনের সড়কে যে স্পীড ব্রেকার বা গতি নিয়ন্ত্রক দেয়া হয়েছে, সেই ব্রেকারের মাঝ বরাবর উচু ঢিবির তৈরি হয়েছে। যা এ সড়ক দিয়ে চলাচল কারি হাজারও যানবাহনের জন্য চরম ঝুঁকিপুর্ন।

সম্প্রতি গিয়ে দেখাগেছে, এ সড়কটির সবচেয়ে বেশী নাজুক অবস্থা হলো ভাটিয়ালপুর চৌরাস্তা পেরিয়ে সামনে যে ব্রীজ, সেই ব্রীজের পর হতে। যেটি সেই অঞ্চলে ভাঙা বাড়ী বা সুজা বাড়ীর সামনের সড়ক নামে পরিচিত। সে বাড়ীর সামনের সড়কের অবস্থা খুবই নাজুক। এখানে সড়কটির মাঝ বরাবর অসংখ্য ছোট বড় গর্ততো আছেই, তার উপর সড়কটির মাঝখানের পিচ সুঁড়কি দেবে গিয়ে একটি নালার সৃষ্টি হয়ে ড্রেন আকৃতি নিয়েছে। দেখে মনে হয় এ সড়কের উপর কোনো ড্রেন তৈরি করা হয়েছে। যার ফলে এ স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে অনেক ছোট খাট দুর্ঘটনার খবর পাওয়া গেছে। আর এ স্থান হতে চর কুমিরা পর্যন্ত অনেকগুলো কবর আকৃতির উঁচু ঢিবির সৃষ্টি হয়েছে। যা দূর হতে দেখলে মনে হয়, এ যেনো কোনো ওয়ার সেমিটারি। ওয়ার সেমিটারিতে যেমন সারিবদ্ধ কবর থাকে। এই স্থানটিও দেখতে তাই মনে হয়।

আর এমন উঁচু ঢিবির দেখা মিলবে ফরিদগঞ্জের সিরাজ মার্কেটের সন্মুখে, ফরিদগঞ্জ বাসষ্টান্ডের সামনের সড়কে, আর বাসষ্ট্যান্ড পেরিয়ে রায়পুর সড়কের চতুরা মেডিকেল হতে গৃদকালিন্দিয়া পর্যন্ত। পুরো নয় কিলো মিটার সড়কটি যেনো ওয়ার সেমিটারি। এ আঞ্চলিক মহা সড়কের পাশেই চতুরা নামক স্থানে পুর্ব বড়ালী প্রাথমিক বিদ্যালয়টি অবস্থিত।

এ বিদ্যালয়ের সামনের সড়কটির অবস্থাও এতটাই বেহাল যে, এ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শারমিন আক্তারের বাবা সোহেল বলেন, মেয়েকে স্কুলে পাঠিয়ে প্রতিদিন চিন্তার মাঝে থাকতে হয়, কখন যে কি ঘটে। একেত ব্যস্ততম সড়কটির পাশে এ বিদ্যালয়টি, তার উপর বিদ্যালয়ের ঠিক সামনের সড়কটির এমন বেহাল দশা। কোমলমতি ছেলে মেয়েরা অনেকেই অটো রিক্সায় করে বিদ্যালয়ে আসেন। প্রায়শই তাদেরকে ছোট খাটো দুর্ঘটনায় পড়তে হয়। তাছাড়া নিকট অতিতে এই স্থানে অনেক প্রানহানীকর দুর্ঘটনাও ঘটেছে।

আরেক অভিবাবক শরীফ প্রধানীয়া জানান, সড়কের এমন উঁচু ঢিবি দেখে তার সন্তানও তাঁকে প্রশ্ন করে বসেন যে,বাবা এগুলো কারো কবর কিনা? এমন প্রশ্ন সাধারনের মনে আসাটাই স্বাভাবিক, কারন আসলেই এ সড়কটির বিভিন্ন স্থানে এমন কবর আকৃতির অসংখ্য উঁচু ঢিবির সৃষ্টি হয়েছে। যা দেখে মনে হয়, এ যেনো কোনো ওয়ার সেমিটারি। কথা হয় এ সড়কে প্রতিদিন চলাচলকারি সি,এন,জি অটো রিক্সার চালক সুরুজ, আনন্দ বাসের চালক সাদেক, ধলেশ্বরী বাসের চালক কামাল হোসেন সহ আরো অনেকের সাথে।

তাদের প্রত্যেকের কথা হলো এ সড়ক দিয়ে চলাচল করতে তাদের অনেক বেগ পোহাতে হয়। খুব সাবধানে সতর্কতার সহিত গাড়ী চালাতে হয়। তারপরও তাদের গাড়ীর অনেক খুচরো যন্ত্রাংশের ক্ষতি এড়াতে পারছেন না শুধু মাত্র এই ভাঙা সড়কের কারণে।

কারণ হিসেবে তারা জানান, প্রতিদিন এভাবে গর্তের উপর দিয়ে গাড়ী চালালে তো ছোট যন্ত্রাংশের উপর অধিক চাঁপ পড়ে তাই। তাদের দাবি অনতি বিলম্বে যেনো এ সড়কটি মেরামত করে দেয়া হয়। এমন গর্তময় ভাঙা সড়কের উপর দিয়ে, উঁচু ঢিবির উপর দিয়ে মাঝারি বা ভারি যানবাহন চলাচল কতটা অনিরাপদ বা ঝুঁকিপূর্ন, তা সড়ক বিশারদরাই ভালো অবগত আছেন। তাই এ সড়কের পাশের স্হানীয় বাসিন্দা তথা এ সড়কে চলাচল কারি সকল যানবাহনের চালকদের দাবি অনতি বিলম্বে যাতে এ সড়কটি মেরামত করে দেয়া হয়।

ফরিদগঞ্জ প্রতিনিধি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *