বাংলাদেশে এখনো সোমালিয়া-সুদানের মতো দুর্ভিক্ষ হয়নি: ওবায়দুল কাদের

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘যুদ্ধের জন্য, নিষেধাজ্ঞার জন্য আমরা একটু বিপদে আছি, মানুষ কষ্টে আছে। অভাবী মানুষ, সাধারণ মানুষ, স্বল্প আয়ের মানুষ কষ্টে আছে। এটা শেখ হাসিনা নিজেই স্বীকার করেন। তিনি চেষ্টা করছেন। এখনো বাংলাদেশে সোমালিয়া-সুদানের মতো দুর্ভিক্ষ হয়নি। এখনো আমরা অনেক দেশের তুলনায় ভালো আছি। শেখ হাসিনা ভালো থাকলে বাংলাদেশ ভালো থাকবে।’

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে গোপালগঞ্জ শহরের পৌর পার্কে জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে উদ্বোধকের বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ফখরুল এখন এক নাটক শুরু করেছেন। কোথাও সমাবেশ দিয়ে সাত দিন আগে থেকে মিথ্যাচার শুরু করেন। তারা বলেন, তাঁদের বাধা দেওয়া হচ্ছে। একদিকে তারা বলছে সরকার বাধা দিচ্ছে অন্যদিকে তারা কাঁথা বালিশ, হাঁড়ি-পাতিল, চালের বস্তা, টাকার বস্তা, মশার কয়েল নিয়ে সমাবেশস্থলে হাজির হচ্ছেন।

ঢাকায় বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ প্রসঙ্গে আ. লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণাস্থল, ৭ মার্চের ভাষণ, মুক্তিবাহিনীর-মিত্রবাহিনীর কাছে পাক হানাদার বাহিনীরা যেখানে আত্মসমর্পণ করে, সেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ওনারা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন না। ফখরুল বলেছে আমরা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি না। মুক্তিযুদ্ধকে আসলে তারা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে না। মুক্তিযুদ্ধ স্বাধীনতার নাম শুনলে ভেতরে-ভেতরে এদের বুকে আর অন্তরে জ্বালা করে; মুখে বলে না। ফখরুলের মুখে মধু অন্তরে বিষ।

বিএনপিকে পরবর্তী নির্বাচনে আসার আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরকারকে সেইফ এক্সিট নিতে বলেছে। আমি বলতে চাই, সেইফ এক্সিট বা নিরাপদ প্রস্থানের একমাত্র পথ হচ্ছে নির্বাচন। নির্বাচনেই প্রমাণ হবে, কারা বিজয়ী হবে আর কাদের পতন হবে। সরকার পতনের হাঁকডাক দিয়ে কোনো লাভ নেই। হাওয়া ভবনের আরেক নাম খাওয়া ভবন। তারেক রহমান ওয়ান ইলেভেনের জরুরি সরকারের কাছে মুচলেকা দিয়ে রাজনীতি থেকে বিদায় নেওয়ার অঙ্গীকার করে লন্ডনে পাড়ি জমিয়েছে। অর্থ পাচার করে এফবিআইএ’র কাছে ধরা খেয়েছে। এফবিআই আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছে। সিঙ্গাপুরে অনেক অর্থ পাওয়া গেছে। নগদ কিছু আমরা ফেরতও পেয়েছি। তারেক আর কোকো সেই অর্থ পাচারকারী। সুইচ ব্যাংক ও পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বিলাসবহুল মার্কেট যার নামে আছে। সেই লন্ডনে বসে বসে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে, মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে।’

তারেক রহমান ও হাওয়া ভবনের অর্থ পাচারের বিরুদ্ধে খেলা হবে উল্লেখ করে কাদের বলেন, তারা বাংলাদেশের কত টাকা পাচার করেছে সব শেখ হাসিনা খতিয়ে দেখছেন। এই টাকা উদ্ধার করা হবে। তারেক রহমানসহ টাকা পাচারকারী যারাই আছে প্রত্যেকের টাকা উদ্ধার করা হবে।

গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি চৌধুরী এমদাদুল হকের সভাপতিত্বে সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলীর অন্যতম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম। বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য মুহাম্মদ ফারুক খান, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য কাজী আকরাম উদ্দিন আহম্মেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান, কেন্দ্রীয় যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নাইম। সম্মেলনে প্রধান বক্তা ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম।

সম্মেলনের শেষে প্রধান অতিথি শেখ ফজলুল করিম সেলিম আগামী ৩ বছরের জন্য মাহাবুব আলী খানকে সভাপতি ও জি. এম. সাহাবউদ্দিন আজমকে সাধারণ সম্পাদক করে জেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করেন।

বিষয়:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *