বাস্তবিক ডিজিটাইজেশন জরুরি

ডিজিটাল থেকে আমরা বলে থাকি ডিজটালাইজেশন। শব্দটি ভুল, সঠিক হলো ডিজিটাইজেমণ। চলমান ডিজিটাল উন্নয়নে একটি প্রশ্ন খুবই গুরুত্বপূর্ণ, গত ৯ বছরে বাংলাদেশ কতটা ডিজিটাল হয়েছে? পাশাপাশি, এই ডিজিটাইজেশন সুবিধা গ্রহণের জন্য দক্ষ জনবল কতটুকু তৈরি হয়েছে?

স্বীকার করতেই হবে, গত ৯ বছরে অনেক অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। কৃষক, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, চাকরিজীবী ও প্রবাসী থেকে শুরু করে দেশের অনেকেই এই ডিজিটালাইজেশনের সুবিধা পাচ্ছেন। সরকারের উদ্যোগে ইতিমধ্যে হাজার হাজার প্রাথমিক-মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসায় তৈরি হয়েছে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম। শিশুদের পাঠদানের জন্য নির্মিত হয়েছে প্রায় ৬২ হাজার মডেল কন্টেন্ট। সরকারি তথ্যমতে, তিন হাজার ১৭২টি স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসায় স্থাপন করা হয়েছে কম্পিউটার ল্যাব। কিন্তু ভেবে দেখতে হবে সরকার প্রদত্ত এই আইসিটি সুবিধা ব্যবহার হচ্ছে কতটুকু।

মফস্বল শহর বা প্রত্যন্ত অঞ্চলে এখনও নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সুবিধার দুষ্প্রাপ্যতা ও মানসম্মত প্রশিক্ষণের অভাব রয়েই গেছে। অযত্নে অবহেলায় এবং যোগ্য শিক্ষক ও দক্ষ প্রশিক্ষকের অভাবে প্রত্যন্ত অঞ্চলের অনেক স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসায় আইসিটি রিসোর্সগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। যে কোনো খাতের উন্নয়ন বাস্তবায়ন ও এর সুবিধা বণ্টনের ক্ষেত্রে একটি সঠিক পদক্ষেপ অবলম্বন করতে হয়। আইসিটি খাতের উন্নয়নও এর বাইরে নয়।

যেমন আইসিটি খাতের উন্নয়ন আমরা চাহিদা অথবা প্রয়োজনের ভিত্তিতে না জোগানের ভিত্তিতে করব, এটা আমাদের ঠিক করতে হবে। আমরা মনে করি, বাংলাদেশে এর উন্নয়ন প্রয়োজনের ভিত্তিতে ধাপে ধাপে করা উচিত। কারণ বাংলাদেশের মতো তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলো এখন পর্যন্ত আইসিটি রিসোর্সের মূলত ব্যবহারকারী। এ ধরনের রিসোর্সের ব্যবসা সফল তেমন কোনো পূর্ণ আবিস্কার আমাদের নেই। আমাদের আমদানি করতে হয়।

আইসিটি খাতের উন্নয়ন সহযোগী উন্নত দেশগুলো যে শুধু বাংলাদেশের সমৃদ্ধির জন্য এ খাতের উন্নয়নের জন্য সহযোগিতা করে, তা নয়। তারা বরং তাদের আবিস্কৃত আইসিটি রিসোর্সের চাহিদা তৈরির জন্য আমাদের উদ্বুদ্ধ করে। তাদের পণ্য বিক্রির লক্ষ্যে প্রয়োজনে তারা আমাদের পুরস্কৃত করে।

তাই আমাদেরকে সময়ের চাহিদা অনুযায়ী বাস্তবিক ডিজিটাইজেশন হতে হবে।

কাজী মোহাম্মদ ইব্রাহীম জুয়েল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *