কাজী মোহাম্মদ ইব্রাহীম জুয়েলএক মাস হয়নি দাম বাড়ানো হয়েছে। এর মধ্যে তেল ব্যবসায়ী সমিতি আবারো দাম দ্বিগুণ বাড়ানোর ঘোষণা দিলো। সরকারি দফতরে একটি চিঠি পাঠিয়ে নতুন দাম কার্যকর করেছেন ব্যবসায়ীরা। তারা যেন বিকল্প কর্তৃপক্ষ। এটি সম্ভব হয়েছে এ কারণে যে, তারা জানেন সরকার কোনো ব্যবস্থা নিতে পারবে না। বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টির কারণে গত ১২ বছরে এ সরকার কোনো মজুদদার, কালোবাজারি বা অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে এমন দৃষ্টান্ত খুঁজে পাওয়া ভার। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, ব্যবসায়ীদের সমিতি একতরফাভাবে দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিতে পারে না। আলোচনা করতে হবে। কিন্তু ঘোষণা দেয়া হয়ে গেছে। মন্ত্রণালয় কি এর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারবে? ট্যারিফ কমিশন আন্তর্জাতিক বাজারে ১০-১৫ দিনে বিভিন্ন পণ্যের দরের ওঠানামা পর্যবেক্ষণ করে। এর ভিত্তিতে বলতে পারে আমাদের দেশে কোন পণ্যের দাম কত হওয়া যুক্তিযুক্ত। এখন সেই দায়িত্ব সম্ভবত নিজের হাতে নিলো ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন। কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন বলে একটি সংগঠন আছে দেশে। এটির আইনগত কোনো এখতিয়ার না থাকলেও সাধারণ ভোক্তাদের পক্ষে কথা বলে থাকে। এই সংস্থাটিকেও পাত্তা দেয়ার দরকার মনে করেননি তেল ব্যবসায়ীরা। বলা যায়, এ এক নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি। আমরা স্পষ্টতই বলতে চাই, একতরফা এ দাম বাড়ানো কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।
আমাদের ভোক্তা অধিকার আইন আছে; কিন্তু অন্য অনেক আইনের মতো সেটিও কাজীর গরু কিতাবে আছে। বাস্তবে আইন এখন ব্যবসায়ীদের হাতে। তারা যখন যে দর বেঁধে দেবেন অথবা চাপিয়ে দেবেন সেটিই সাধারণ মানুষকে মেনে নিতে হবে। বিশ্বের একটি অঞ্চলে যুদ্ধ চলছে। তার প্রভাব আন্তর্জাতিক বাজারে পড়বেই। তাই বলে সব রকম নীতিনৈতিকতা, নিয়ম-রীতি উপেক্ষা করে বাড়তি দামের বোঝা জনগণের ঘাড়ে চাপিয়ে দেয়ার এ প্রবণতা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। যুদ্ধের বিরূপতা শুধু জনগণকে কেন নিতে হবে? কেন ব্যবসায়ীরা নেবেন না?