বেকারমুক্ত চাঁদপুর গঠনে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগ জরুরি

টানা দেড় বছর ধরে বৈশ্বিক করোনা মহামারি ও লকডাউনে সীমাহীন দুর্দশায় সময় পার করছেন শ্রমজীবী মানুষ। বিশেষ করে অপ্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিকরা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়। গবেষণা প্রতিষ্ঠান পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি) ও ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (বিআইজিডি) যৌথ জরিপ অনুযায়ী, করোনার কারণে দেশে নতুন করে দরিদ্র হয়েছে ২ কোটি ৪৫ লাখ মানুষ। এ তালিকায় বড় একটি অংশ দখল করে আছে চাঁদপুরের শ্রমজীবীরা।

গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, করোনায় দেশে ১ কোটি ৬৮ লাখ মানুষ গরিব হয়ে পড়েছে। ২০১৭ সালে মোট জনসংখ্যার ২০ শতাংশ দরিদ্র ছিল, বর্তমানে তা বেড়ে ৩৩ শতাংশ হয়েছে। দেশের শ্রমজীবী মানুষের বেতন কমেছে ৩৭ শতাংশ। করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের ৬৬ শতাংশ প্রতিষ্ঠান। দেশের ২০ শতাংশ পরিবারের আয় কমে গেছে। করোনাকালে চাকরির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরিমাণ ৮৭ শতাংশ কমে ১৩ শতাংশ হয়েছে।

অন্যদিকে বেকারত্বের হার ২০ শতাংশ থেকে ৩৫ শতাংশ হয়েছে। দেশের অন্যান্য শহরের মতো চাঁদপুর শহরেও রিকশাচালক, দিনমজুর, গৃহপরিচারিকা, রেস্টুরেন্টকর্মী, ভাসমান ব্যবসায়ী, অটোচালক, গ্রামের কৃষক, জেলে, দোকানি, বিদেশফেরত মানুষরা সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়েছেন। বিশ^ব্যাংক আভাস দিয়েছে, নতুন এ ধাক্কা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে অনিশ্চয়তা তৈরি করছে।

এরমধ্যে আশার খবর দিয়েছেন চাঁদপুর জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ। তিনি জানান, ৬ সেপ্টেম্বর সরকারের এটুআই প্রোগ্রামের পৃষ্ঠপোষকতায় চাঁদপুর জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে জেলা ব্র্যান্ডিং এর আওতায় ‘বেকারমুক্ত জেলা’ তৈরির লক্ষ্যে সরকারি-বেসরকারি দক্ষতা উন্নয়নমূলক প্রতিষ্ঠান, শিল্প-প্রতিষ্ঠান ও বেকার যুবকদের সমন্বয়ে দক্ষতা ও কর্মসংস্থান বিষয়ক একটি ভার্চুয়াল কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

কর্মশালায় তরুণ ও যুবকদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে পরিবার, সমাজ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে যথাযথ মোটিভেশনের উপর গুরুত্ব দেয়া হয়। একইসাথে পরিবর্তিত বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে ফোর্থ ইন্ডাস্ট্রিয়াল রেভুলেশনের কারণে বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন ধরণের যেসব নতুন নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হয়েছে তার সাথে বাংলাদেশের তরুণদের উপযোগী করে গড়ে তুলতে সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টার উপর আলোকপাত করা হয়।

কাজী মোহাম্মদ ইব্রাহীম জুয়েল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *