মোলহেডের ত্রিনদীর মোহনায় মেতে উঠেছেন পর্যটকরা

ঈদের আনন্দে চাঁদপুর বড় স্টেশন মোলহেডের তিন নদীর মোহনায় মেতে উঠেছেন পর্যটকরা। ঈদের আনন্দকে ভাগাভাগি করে নিতে চাঁদপুরসহ পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন জেলার পর্যটকরা সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মোলেহেডে সময় কাটান। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের আগমনে সেখানে পরিণত হয়েছে এক মিলনমেলার।

চাঁদপুরের তিন নদীর মোহনায় গতকাল সোমবার (১১ জুলাই) এমন মনোরম দৃশ্য দেখা গেছে। পরিবার ও স্বজনরা ঈদ উপলক্ষে এক টুকরো প্রশান্তি খুঁজতে আসছেন মনোরম প্রকৃতির প্রবহমান মেঘনা পাড়ে। প্রতিদিনই সময় পেলে পর্যটকরা চলে আসছেন এখানে।

মেঘনা বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় নদীর মধ্যে অন্যতম। এর পাশ দিয়েই বয়ে গেছে ডাকাতিয়া, পাশে রয়েছে পদ্মা। আর চাঁদপুরের মেঘনা, ডাকাতিয়া, আর পদ্মাকে ঘিরে রয়েছে শহরের বড় স্টেশন মোলহেড এলাকাটি।

গতকাল সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সোমবার সকাল থেকে হাজার হাজার দর্শনার্থীদের আগমনে মুখরিত হয়ে ওঠে মোলহেড এলাকা। ভ্রমণপিপাসুরা মনোরম এ স্থানটি স্বচক্ষে অবলোকনে এসে ভিড় জমায়। বিভিন্ন মানুষের উপস্থিতিতে সেখানে সৃষ্টি হয়েছে এক মিলনমেলার। এ ছাড়া এখানে বিনোদনের জন্য রয়েছে নাগরদোলা, চা-কপি চক্র, গোড়া চড়াসহ নানা রকমের বিনোদন।

অনেক পর্যটককে নিজস্ব ক্যামেরা কিংবা মুঠোফোনে বিভিন্ন রঙে-ঢঙে সেলফি তুলে আনন্দ উপভোগ করতে দেখা যায়। তবে কোরবানি ঈদ হওয়ার কারণে ঈদের দিন দর্শনার্থীদের তেমন ভিড় দেখা যায়নি। ঈদের পরের দিন থেকে ভিড় বাড়তে থাকে।

জানা গেছে, সদর উপজেলার রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নে পদ্মা, মেঘনা ও ডাকাতিয়া নদীর মিলনস্থলে অবস্থিত মেঘনার চর। এটি কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের মতো দেখা যাওয়ায় পর্যটকরা এর নাম দিয়েছেন ‘মিনি কক্সবাজার’। নদীর পানি অতিরিক্ত প্রবাহিত হলে এটি ডুবে যায়। তাই দর্শনার্থীরা সেখানে যেতে পারেন না। অনেকে শখের বসে ট্রলার বা স্পিডবোট নিয়ে ঘুরতে যান চরে।

এদিকে চাঁদপুরের বঙ্গবন্ধু পার্ক, ফাইভ স্টার শিশু পার্ক, মতলব উত্তর উপজেলার মোহনপুর পর্যটন কেন্দ্র, ফরিদগঞ্জের ডাকাতিয়ার পাড়, লোহগড়মঠ, রুপসা জমিদারবাড়িতে দর্শনার্থীদের ভিড় লক্ষ করা গেছে।

তবে বিনামূল্যে বিনোদনের সুযোগ থাকায় চাঁদপুর বড় স্টেশনে তিন নদীর মোহনায় মোলহেড এলাকা, ফরিদগঞ্জের লোহগড়মঠ, রুপসা জমিদারবাড়িতে দর্শনার্থীদের প্রচুর ভিড় দেখা যায়।

ঘুরতে আসা দর্শনার্থীরা জানান, কোরবানির কাজের ব্যস্ত থাকার পর আজ (সোমবার) এখানে এসে অনেক ভালো লেগেছে। চাঁদপুরের মেঘনা নদীর বুকে এ স্থানগুলো অন্যরকম সুন্দর। তাই এখানে ঘুরতে এলাম।

সানজিদা নামে এক গৃহবধূ বলেন, বছরের অন্য সময়গুলোয় আমরা ব্যস্ত থাকি সংসারজীবন নিয়ে। কিন্তু ঈদ এলে স্বামী, ছেলে-মেয়েদের নিয়ে ঘুরতে বের হই। চাঁদপুরের এ জায়গাটি খুব সুন্দর। আসলেই নদীর হাওয়ায় মনটা জুড়িয়ে যায়। তবে এ বছর স্থানীয় প্রশাসন মোলহেডের সৌন্দর্যবর্ধন করায় আমাদের ছেলে-মেয়েরাও বেশ আনন্দ পাচ্ছে।

পর্যটনকেন্দ্রের গেটে দায়িত্বরত স্বেচ্ছাসেবক মানিক বলেন, বিভিন্ন স্থান থেকে আসা পর্যটকদের যেন কোনো সমস্যা না হয়, সেদিকে আমরা নজরদারি রেখেছি।

চাঁদপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আবদুর রশিদ জানান, প্রতিবছরের মতো এবারও আমরা সব ধরনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছি। ঈদ ঘিরে দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা দিতে শহরের বিভিন্ন স্থানে অতিরিক্ত মোবাইল টিম রয়েছে। এতে মানুষ নির্বিঘ্নে শহরে যাতায়াত ও ঘোরাফেরা করতে পারবে বলে আশা করছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *