যুবলীগের ৫০তম সুবর্ণজয়ন্তীর মহাসমাবেশে প্রধানমন্ত্রী : বাংলাদেশে দুর্ভিক্ষ হবে না

 

স্টাফ রিপোর্টার

 

 

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘সারা বিশ্বব্যাপী দুর্ভিক্ষের পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে। বাংলাদেশে ইনশাআল্লাহ কোনো দুর্ভিক্ষ হবে না। তার জন্য আমাদের এখন থেকে প্রস্তুতি নিতে হবে।’ আজ শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যুবলীগের ৫০ বছর পূর্তি ও সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত মহাসমাবেশে অংশ নিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশকে উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যুবসমাজের কর্তব্য। সরকারের ব্যাপক উন্নয়নের ফলে দেশের মানুষ নতুন করে সুন্দর ও মর্যাদাপূর্ণ জীবনযাপনের আশা দেখছে। এ প্রচেষ্টাকে আরো এগিয়ে নিতে যুবকরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। তারাই দেশ গড়তে পারে।

শুক্রবার বিকেলে যুবলীগের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির ভাষণে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা এ ময়দানেই ৭ মার্চের ভাষণে বলেছিলেন ‘বাঙালিকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না’। আমিও বিশ্বাস করি আমাদের কেউ দাবিয়ে রাখতে পারবে না। বিএনপি যত কথাই বলুক আমরা এগিয়ে যাচ্ছি, এগিয়ে যাব। বাংলাদেশকে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাহিসেবে গড়ে তুলবো।

 

 

 

 

তিনি আরো বলেন, সারাদেশে আইটি পার্ক, হাইটেক পার্ক, সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক, ইনকিউবেশন সেন্টার গড়ে তুলে সরকার যুবসমাজকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে প্রযুক্তিনির্ভর করে গড়ে তুলছে। আওয়ামী লীগ

ক্ষমতায় না থাকলে এটা সম্ভব ছিল না। তরুণ সমাজকে বলবো- দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া তাদেরই দায়িত্ব।

শেখ হাসিনা বলেন, যুবলীগ প্রতিষ্ঠা হয়েছিল যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গড়ে তোলার জন্য। জাতির পিতা যুধ্ববিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনকালে বলেছিলেন- তার কিছু না থাকলেও যে মাটি ও মানুষ রয়েছে, তা দিয়েই দেশকে গড়ে

তুলবেন। কাজেই যুবলীগের প্রত্যেক নেতাকর্মীকে জাতির পিতার আদর্শ নিয়ে তার স্বপ্ন পূরণে কাজ করতে হবে। এটাই হবে যুবলীগের প্রাতষ্ঠাবার্ষিকীতে সবার প্রতিজ্ঞা।

সরকার প্রধান বলেন, করোনার সময় কৃষক যখন ধান কাটতে পারছিল না তখন যুবলীগসহ আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা কৃষকের ধান কেটে দিয়েছেন। যুবলীগ লাখ লাখ বৃক্ষ-চারা রোপণ করেছে। আমাদের এখনো সেভাবেই মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুবলীগের নেতাকর্মীরা নিজ নিজ গ্রামে যান। সেখানে কোনো জমি যেন অনাবাদী না থাকে সেটা দেখুন। সারাবিশ্বে দুর্ভিক্ষের পদধ্বনি থাকলেও বাংলাদেশে যেন কোনো দুর্ভিক্ষ আসতে না পারে সে

ব্যবস্থা এখন থেকেই করতে হবে। মনে রাখতে হবে- উৎপাদন বৃদ্ধি মানেই বাংলাদেশের অর্থনৈতিক স্বাবলম্বিতা অর্জন।
তিনি আরো বলেন, আমাদের অর্থনীতি এখনো যথেষ্ট শক্তিশালী। অনেকে বলেছিল বাংলাদেশের অবস্থা শ্রীলংকার মতো হবে, কিন্তু তাদের মুখে ছাই পড়েছে। সেরকম অবস্থা হয়নি, ইনশাল্লাহ হবেও না। আওয়ামী লীগ

গত ১৪ বছরে দেশকে উন্নয়নের পথে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে। এই বাংলাদেশকে আর কেউ অবেহেলার চোখে দেখে না।

শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি নেতারা মানিলন্ডারিং, লুটপাট, দুর্নীতির কথা বলে। তাদের নেতা তারেক রহমান শাস্তি পেয়েছে মানি লন্ডারিং মামলায়। তার বিরুদ্ধে এফবিআই-এর লোক এসে বাংলাদেশে সাক্ষী দিয়ে

গেছে। মানি লন্ডারিং মামলায় ৭ বছর সাজা, ২০ কোটি টাকা জরিমানা আর গ্রেনেড হামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত, ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাকারবারির জন্যও সাজাপ্রাপ্ত। যাদের নেতাই খুন, মানি লন্ডারিং, অবৈধ অস্ত্র

চোরাকারবারি মামলার আসামি সেই বিএনপির মুখে সরকারের সমালোচনা শোভা পায় না।

সরকার প্রধান বলেন, বিএনপির রেখে যাওয়া ৪০ শতাংশ দারিদ্রের হার বর্তমান সরকার ২০ শতাংশে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে। উত্তরবঙ্গে এখন আর মঙ্গা হয় না। সরকার ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছে। রাস্তাঘাট, পুল, ব্রিজ নির্মাণ করে যোগাযোগ ব্যবস্থায় অভূতপূর্ব সাফল্য এনেছে। ৭ নভেম্বর সারাদেশে একযোগে ১০০ সেতু উদ্বোধন করে সরকার প্রমাণ করেছে বাংলাদেশও পারে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের এই অগ্রযাত্রা কেউ রুখতে পারবে না। বাংলাদেশকে জাতির পিতা স্বাধীন করে দিয়ে গেছেন, স্বল্পোন্নত দেশ করে গিয়েছিলেন। তার পদাঙ্ক অনুসরণ করে আমরা উন্নয়নশীল দেশের

মর্যাদা পেয়েছি। ২০৪১ সালে উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য অর্জনে এখন থেকেই যুবসমাজকে কাজ করতে হবে। উৎপাদন বাড়াতে হবে, নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে এবং মানুষের কল্যাণ করতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *