হাসপাতালে বাড়ছে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশু রোগীর সংখ্যা

 

স্টাফ রিপোর্টার

সাম্প্রতিক সময়ে প্রচন্ড গরম ও ধমকা আবহাওয়ার কারণে শ্বাসকষ্ট ও নিউমোনিয়া রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। যে কারণে চাঁদপুর ২৫০ শয্যা সরকারি জেনারেল হাসপাতালে শিশু রোগীদের চাপে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও চিকিৎসকরা। হাসাপাতালে ৩১ বেডের বিপরীতে এখন চিকিৎসা সেবা নিচ্ছে ১শ’ ৭৪ শিশু রোগী। এমন পরিস্থিতিতে চিকিৎসকরা উপায়ন্তর না পেয়ে হাসপাতালের ফ্লোর ও বারান্দায় বেড দিয়ে সেবা দিচ্ছেন শিশুদের।

গতকাল রবিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বেলা ২টার দিকে সরোজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গরম আবহাওয়ায় বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে বাড়ছে শিশু রোগীদের সংখ্যা। বর্তমানে ১৭৪ শিশু রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছে বলে জানিয়েছেন ওই বিভাগে কর্তব্যরত নার্সরা। এদের মধ্যে জ্বর, ঠান্ডাজনিত শ্বাসকষ্ট ও নিউমোনিয়া রোগীর সংখ্যা বেশি বলে জানা গেছে।

শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত হাসপাতালে ২৬ জন শিশু রোগী ভর্তি হয়েছে। প্রতিদিন গড়ে ৪০-৫০জন শিশু রোগী ভর্তি হচ্ছে। পুরো শিশু ওয়ার্ডে নির্দিষ্ট বেডের চেয়ে শিশু রোগীর সংখ্যা চার গুণ

 

বেশি। বিছানা সংকটে হিমশিম খাচ্ছে রোগী ও রোগীর লোকজনসহ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। রোগীর চাপ বেশি হওয়ায় হাসাপতালের ফ্লোর ও বারান্দায় ঠাঁই হচ্ছে এখন। শিশুদের সাথে থাকা অভিভাবকরাও অনেকে

অসুস্থ্য হয়ে পড়েছেন।

হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, চাঁদপুর জেলা শহরে গত কয়েক দিনে হঠাৎ প্রচন্ড গরম আবহাওয়ার কারণে বয়োবৃদ্ধসহ শিশুরা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে তিন দিনে হাসপাতালে প্রায় দুই শতাধিক রোগী

ভর্তি হয়েছেন। হাসপাতালের শিশু বিভাগে প্রচুর রোগী ভর্তি রয়েছে। এসব শিশু রোগীদের মধ্যে একমাস বয়স থেকে শুরু করে ৫ বছর বয়সী শিশুর সংখ্যা বেশি। আবার অনেক শিশু রোগীকে অভিভাবকরা

হাসপাতালে নিয়ে এসে ডাক্তার দেখিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা নিয়ে চলে যাচ্ছেন।
সদর উপজেলার লক্ষীপুর ইউনিয়ন থেকে আগত ঝর্না রানী বলেন, আমি দুই দিন যাবত ছেলে রতনের ঠান্ডাজনিত সমস্যায় হাসপাতালে রয়েছি। কোন বেড না পাওয়ায় বারান্দায় আছি।

সদর উপজেলার শাহমাহমুদপুর ইউনিয়নের শাহতলী গ্রামের আসমা বেগম বলেন, বাচ্চার বয়স আড়াই মাস। তার নিউমোনিয়া হয়েছে। তবে কোন সিট পাচ্ছি না। কোন রকম সিঁড়ির কাছে থেকে বাচ্চাকে চিকিৎসা

দিচ্ছি।

হাসপাতালের সহকারী রেজিস্টার (শিশু) ডা. মাহাবুব আলী খানসহ একাধিক শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বলেন, প্রচন্ড গরমে শিশুরা ঘামানোর কারণে তারা জ্বর, সর্দি এবং ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ছে।

প্রচন্ড গরমে তাদের শরীর ঘামিয়ে ভাইরাল ইনফেকশন ও ভাইরাল দূষণের কারণে বেশি সমস্যায় পড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে শিশুদের খোলা মেলা ও সুতি কাপড় পড়ানো প্রয়োজন। শরীর ঘামিয়ে গেলে শুকনো

 

কাপড় দিয়ে মুছে দিতে হবে। অভিভাবকদের আরো সচেতন হওয়া প্রয়োজন।

হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. সুজাউদ্দৌলা রুবেল বলেন, প্রচন্ড গরম আবহাওয়ার কারণে বয়োবৃদ্ধ এবং শিশুরা হঠাৎ, জ্বর, সর্দি, নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্টজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। তাই গত বেশ কয়েকদিন ধরে হাসপাতালে শিশু রোগীদের প্রচুর চাপ দেখা দিয়েছে। তবে আমরা যথাসাধ্য রোগীদের সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *