চাঁদপুরে ইউপি নির্বাচনে মাঠে থাকবে কয়কে স্তরের নিরাপত্তাবাহিনী

আজ চাঁদপুর সদর উপজেলার ৯ টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। দ্বিতীয় ধাপে দেশের ৮৪৮টি ইউনিয়ন পরিষদের সাথে চাঁদপুরেও সকাল থেকে একযোগে এই নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

চাঁদপুর সদর উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা হলেও ভোট গ্রহণের মাত্র ২দিন আগে হাইকোর্টে একটি রিটের প্রেক্ষিতে ১৩নং হানারচর ইউপির নির্বাচন হওয়া নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে।

তবে জেলা নির্বাচন অফিসার জানিয়েছে,অত্র ইউনিয়নের নির্বাচন বন্ধের ব্যাপারে এখনো কোন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। এই ১০টি ইউনিয়নে সর্বমোট ৪০৮ জন প্রার্থী ভিন্ন ভিন্ন প্রতীক নিয়ে নির্বাচনী মাঠে রয়েছেন। এরমধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৩৪জন, সাধারণ সদস্য পদে ২৯৮ জন ও সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ৭৬ জন। তবে এর মধ্যে ৭নং তরপুরচন্ডী ও ৫নং রামপুর ইউনিয়নের নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী ইতিমধ্যেই বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। এছাড়া ২নং আশিকাটি ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থীও বিনাভোটে বিজয়ী হতে যাচ্ছেন। এই ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকের প্রতিদ্বন্দ্বী দু’জন স্বতন্ত্রপ্রার্থী নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন।

১০টি ইউনিয়নের মোট ভোটার ১ লাখ ৯৩ হাজার ৯৫৮জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ১হাজার ২৭০ জন এবং মহিলা ভোটার সংখ্যা ৯২হাজার ৬শ’ ৮৮ জন। নির্বাচনকে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে চাঁদপুর জেলা প্রশাসন এবং জেলা নির্বাচন অফিস সকল প্রকার প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে।

চাঁদপুর জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, ৯টি ইউনিয়নের নির্বাচনের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশের পাশাপাশি ৩ প্লাটুন র‌্যাব, ৩ প্লাটুন বিজেবি, ২ প্লাটুন কোস্টগার্ড মোতায়েন করা হয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রে ৫জন পোশাকধারী পুলিশ, ১৭জন আনসার সদস্য স্থায়ী টহলে থাকবে। ৯টি ইউনিয়নে মোট ভোট কেন্দ্র ১০৫টি, মোট ভোট কক্ষ ৫৭১টি এবং অস্থায়ী কেন্দ্র রয়েছে ১১৮টি।

চাঁদপুর জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা তোফায়েল হোসেন জানান, ‘সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন পরিচালনা করার জন্য আমাদের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। ইতিমধ্যে প্রতিটি কেন্দ্রের জন্য ব্যালট পেপার, ব্যালটবক্সসহ নির্বাচনী সকল প্রকার সরঞ্জামাদি পৌঁছে গেছে। নির্বাচনী কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ১০৫ জন প্রিজাইডিং অফিসার, ৫৭১ জন সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার এবং ১১৪২ জন পুলিং অফিসার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এসকল অফিসারদের নির্বাচন পরিচালনায় প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে।’

এদিকে গত ২ নভেম্বর চাঁদপুর জেলা প্রশাসনের আয়োজনে সকল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, মেম্বার এবং সংরক্ষিত আসনের নারী মেম্বার প্রার্থীদের নিয়ে আচরনবিধি শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক বলেন, ‘একটি অবাদ, সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করার জন্যে আমাদের সকল প্রকার প্রস্তুতি রয়েছে। নির্বাচর যেন সুষ্ঠ হয় তার জন্যে আমরা পুরোপুরি প্রস্তুত রয়েছি। সরকারের পক্ষ থেকে সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন করতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আমাদের উপর কোন চাপ নেই। বরং সুষ্ঠু ভাবে করতে বলা হয়েছে। এই নির্বাচনে পর্যাপ্ত আনসার, বেজেবি, র্যাব, পুলিশ নিয়োগ করবো। জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট হিসেবে আমার কাজ হলো নির্বাচন স্বচ্চতা করা। আমি কারো নাম, দল দেখবো না। মার্কাও দেখবো না। আচড়নবিধি লঙ্ঘন হলে যতটা কঠোর হওয়ার, আমরা ততটা কঠোর হবো।’

অপরদিকে এ নির্বাচনকে ঘিরে উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রার্থীরা। গত ২৭ অক্টোবর প্রতীক পাওয়ার পর থেকেই ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে ব্যস্ত সময় পার করেন তারা। ভোটের মাঠে জয়ী হতে ভোটারদেন নানান প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। হাটে-ঘাটে, চা স্টলে চলছে নির্বাচনী আলাপ-আলোচনা। চেয়ারম্যান প্রার্থীদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত নারী সদস্যরাও ভোটারদের বাড়ি বাড়ি ঘুরে ভোট প্রার্থনা করছেন।

তবে সাধারণ ভোটাররা জানান, ‘বিগত দিনে যারা এলাকায় উন্নয়ন করেছে এবং সুখে-দুঃখে যারা তাদের পাশে ছিল, তাদের তারা ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন। সব মিলিয়ে ৯টি ইউনিয়নে প্রচার-প্রচারণায় অনেকটাই জমে উঠেছে। এদিকে দেশের আরেকটি বড় রাজনীতিক দল বিএনপি এবছরও ইউপি নির্বাচনে অংশ না নেয়ায় তাদের শিবিরে নির্বাচন নিয়ে খুব একটা উৎসাহ উদ্দীপনা দেখা যায়নি। যদিও চাঁদপুর সদরের ৯টি ইউনিয়নের বেশ ক’টিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দলটির পদ পদবী ধারী অনেকেই অংশ নিয়েছেন।

স্টাফ রিপোটার

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *