কাজী মোহাম্মদ ইব্রাহীম জুয়েল :
পরিবেশ দূষণে শহরের মতো গ্রামাঞ্চলের অবস্থাও খুব ভালো নয়। শত শত ইটভাটা প্রতিনিয়ত আমাদের নিঃশ্বাসে বিষ ঢালছে। শহরে-গঞ্জে বসতবাড়ির সঙ্গেই রয়েছে কারখানা। নদী-পুকুর-জলাশয় দূষিত হচ্ছে শিল্পবর্জ্যে। দেশে প্রতিবছর ৩৭ হাজার মানুষ মারা যাচ্ছে শুধু বায়ুদূষণের কারণে। দিন দিনই বাড়ছে দূষণের মাত্রা। অথচ আমাদের পরিবেশ অধিদপ্তর নির্বিকার। গত বুধবার ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনেও উঠে এসেছে এমন চিত্র। ‘পরিবেশ অধিদপ্তরে সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক এই প্রতিবেদনে দেখা যায়, এখানে অনিয়ম ও অবৈধ অর্থ লেনদেনের রীতিমতো মহোৎসব চলে। তীব্র দূষণকারী কারখানাও পরিবেশ ছাড়পত্র পেয়ে যায়। ফলে উন্নত হওয়ার বদলে দেশের পরিবেশের অবনতিই বেশি হচ্ছে।
সম্প্রতি প্রকাশিত টিআইবির গবেষণায় বলা হয়, পরিবেশ অধিদপ্তর কার্যত দুর্বল, দুর্নীতিগ্রস্ত এবং অনেকাংশে অক্ষম ও অকার্যকর একটি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। টিআইবির গবেষণা-জরিপের আওতায় আসা ১৭ শতাংশ শিল্প-কারখানা স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনাপত্তিপত্র না পেলেও পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে ছাড়পত্র পেয়ে গেছে। সেটি কিভাবে সম্ভব হলো? প্রায় ৭২ শতাংশ শিল্প-কারখানা আবাসিক এলাকায় অবস্থিত। ৫১ শতাংশ শিল্প-কারখানা মেয়াদোত্তীর্ণ ছাড়পত্র দিয়ে কার্যক্রম চালাচ্ছে, যার ৭০ শতাংশ তথ্য সংগ্রহের সময় পর্যন্ত নবায়নের জন্য আবেদনই করেনি। এমন প্রতিষ্ঠানের পক্ষে দেশের পরিবেশ সংরক্ষণ ও উন্নয়নে কতটুকু ভূমিকা রাখা সম্ভব হবে, তা-ই এখন বিবেচনার বিষয়, পরিবেশ রক্ষায় আমরা ঠিক কতোটা সুশাসন নিশ্চিত করতে পারবো?