পাওয়া যাবে প্রত্যাশার ইলিশ

বর্তমানে ধরা পড়া ইলিশের সংখ্যা ও আকার দেখে, আগামীতে আরও ভালো মানের ইলিশের আহরণ বাড়বে বলে আশা করছেন ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তারা।

মৎস্য কর্মকর্তা (হিলসা) ড. বিমল চন্দ্র দাস বলেন, মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদ সংরক্ষণ এবং টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে মাছ শিকার বন্ধ রয়েছে।

তবে নদীতে মাছ শিকারে কোনো বাধা নেই।
তিনি বলেন, নদীতে প্রচুর মাছ ধরা পড়ছে। আবার নিষেধাজ্ঞার আওতার বাইরে সাগর মোহনা থেকেও কিছু মাছ মোকামগুলোতে আসছে। মাছের আকার ও গঠন দেখে মনে হচ্ছে সামনে আরও ভালো মানের মাছ পাওয়া যাবে। আর যে পরিমান মাছ পাওয়া যাচ্ছে, তাতে এ বছর ইলিশ উৎপাদনের লক্ষ্য মাত্রা অর্জন হবে।

তবে মাছের আমদানি ভালো থাকলেও তুলনামূলকভাবে গতবছরের থেকে এ বছরের মাছের দাম বেশি বলে জানিয়েছেন ক্রেতা ও খুচরা বিক্রেতারা। বরিশাল নগরের পোর্টরোডস্থ বেসরকারি মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের মৎস্য ব্যবসায়ী মুজাফ্ফর জানান, এখন প্রায় প্রতিদিনই প্রচুর পরিমানে দেড়-দুই কেজির মাছ এ বাজারে আসছে। আর বন্যার কারণে নদীতে প্রচুর পানি রয়েছে, যা ইলিশেরও চলাফেরার জন্য বেশ উপযোগী। তাই নদী থেকেও প্রচুর ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে। তারপরও হিসাব কষলে গতবছরের চেয়ে এবারে ইলিশের দাম একটু বেশি।

মাকসুদ নামে ফিশিং বোটের মাঝি বলেন, ক্রেতা পর্যায়ে ইলিশের দর কি সেটা বলতে পারি না। তবে বর্তমানে ইলিশসহ সব মাছের বাজার ভালো যাচ্ছে। তা না হলে যে খরচ তাতে লোক নিয়ে বোট চালিয়ে যে মাছ পাওয়া যায় তাতে পুষতো না।

তিনি বলেন, জেলেদের খাবারসহ ট্রলারের জ্বালানিসহ সবকিছুর দামই তো বাড়ছে। সেই খরচ দিয়ে দেখা যায় মাঝি-জেলেদের শ্রমের খরচ উঠছে না। তাই মাছের দাম আরও বাড়া উচিত বলে মনে করেন তিনি।

গতবারের থেকে বাজারে ইলিশের দাম বেশি থাকার বিষয়টি মৎস্য কর্মকর্তা (হিলসা) ড. বিমল চন্দ্র দাসও স্বীকার করেন। তিনি বলেন, গতবছরের চেয়ে এবার বাজারে আমদানি বেড়েছে। সেইসাথে বড় মাছ বেশি পাওয়া যাচ্ছে। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে বড় ব্যবধান নিয়ে ইলিশের দাম কমার কোনো লক্ষ্মণ নেই।

আর মহাজনরা বলছেন, মহামারি করোনাসহ রাশিয়া-ইউক্রেন পরিস্থিতির কারণে সামগ্রিকভাবে গোটা বিশ্বের সঙ্গে আমাদের দেশেও অনেক কিছুর ওপর প্রভাব পড়েছে। যার ফলে সাধারণ মানুষদের সঙ্গে জেলেসহ মৎস্যশিকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবার জীবনমানের পরিবর্তন ঘটেছে, খরচ বেড়েছে। যার প্রভাব বাজারে আমদানি হওয়া মাছের ওপরও পড়ছে।

তবে সামনে মাছের সরবরাহ আরও বাড়বে বলে জানিয়ে মৎস্য আড়তদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক নীরব হোসেন টুটুল বলেন, আমদানি বাড়লে অবশ্যই মাছের দর কমবে। আর এখনকার মাছের যে শারিরীক গঠন তাতে মনে হচ্ছে সামনে আরও বড় ইলিশ পাওয়া যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *