করোনার ক্ষতি পোষাতে উন্নয়ন কাজে গতি ফেরানোর তাগিদ প্রধানমন্ত্রীর

মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে স্থবির হয়ে পড়েছিল দেশ। এতে ব্যাহত হয় উন্নয়ন কর্মকাণ্ড। এবার করোনার প্রকোপ নিয়ন্ত্রণে থাকায় উন্নয়ন কাজে গতি আনার তাগিদ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উন্নয়ন কর্মকাণ্ড করোনার পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে আনতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

সোমবার মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে সভাপতিত্বকালে প্রধানমন্ত্রী এই নির্দেশনা দেন। তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করেন। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এ ব্যাপারে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, যেহেতু কোভিড সংক্রমণের দুই বছর হয়ে গেছে, সেজন্য আমাদের একটা প্রোটোকলও ডেভেলপ হয়ে গেছে। সুতরাং সবাইকে আরেকটু জোরেসোরে কাজ করে আমাদের ব্যাকলক যদি থাকে সেটা ডেভেলপমেন্ট ফেইজটা আগের মতো নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী শুধু ডেভেলপমেন্ট নয় সবধরনের কাজকর্মে গতি আনতে বলেছেন, যাতে আমাদের প্রবৃদ্ধির হারসহ সবকিছু যেন কোভিডের আগে যে রেটে ছিল সেখান থেকে আবার প্রোগ্রেস করতে পারি।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণের সময় দেওয়া বিধি-নিষেধ এখনো কিছু কিছু রয়েছে জানিয়ে সচিব বলেন, ‘বঙ্গভবনে এবার ১৬ ডিসেম্বরের অনুষ্ঠান হচ্ছে না। প্যারেড গ্রাউন্ডে প্রোগ্রাম হবে, কারণ সেখানে অবাধ মেলামেশা হবে না। অবাধ মেলামেশা টাইপের বিষয়গুলোকে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যে ৩২টি জেলার সঙ্গে মিটিং করে ফেলেছি। তাদের বলেছি, কমফোর্ট ও রিল্যাক্স হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। সবাইকে মনোযোগী থাকতে হবে এবং সামাজিক দূরত্বের বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। ইতিমধ্যে নয় কোটি লোককে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে জানিয়ে খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে প্রত্যেক মাসে দুই থেকে আড়াই কোটি ভ্যাকসিন দেওয়া হবে।’

মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, আগামী বছরের (২০২২ সাল) ৩০ জুন বা এর কাছাকাছি কোনো সময়ে পদ্মা সেতু যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর ২০২০- ২১ অর্থ বছরের কার্যাবলি সম্পর্কিত বার্ষিক প্রতিবেদনে এ তথ্য বলা হয়েছে। রাষ্ট্রপতির ভাষণের খসড়া মন্ত্রিসভায় অনুমোদন দেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে আগামী ২৪ নভেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদের ১৫তম অধিবেশনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ যে ভাষণ দেবেন সেটির খসড়া আজ মন্ত্রিসভা অনুমোদন দিয়েছে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এটা একটা স্পেশাল ভাষণ হচ্ছে। সাধারণত রাষ্ট্রপতি কোনো অধিবেশনের শুরুতে ভাষণ দেন। মুজিববর্ষ উপলক্ষে তিনি একটা ভাষণ দিয়েছিলেন। সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি এই বিশেষ ভাষণ দেবেন। ভাষণের খসড়া মন্ত্রিসভায় অনুমোদন দেওয়া হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, রাষ্ট্রপতি আগামী ২৪ নভেম্বর এ ভাষণ দেবেন। মেয়াদ শেষে পদে থাকতে পারবেন জেলা পরিষদ প্রতিনিধিরা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যরা কোনো অজুহাতে তাদের পাঁচ বছরের মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার পর আর তাদের পদে থাকতে পারবেন না বলে এমন বিধান রেখে ‘জেলা পরিষদ (সংশোধন) আইন, ২০২১’ এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। একই সঙ্গে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানদের পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষে নির্বাচন না হলে জেলা পরিষদে প্রশাসক নিয়োগ দেওয়ার বিধান রাখা হচ্ছে সংশোধিত আইনে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘গত দুটি ক্যাবিনেট মিটিংয়ের আগে স্থানীয় সরকার থেকে একটা আইন নিয়ে আসা হয়েছিল। সেটা ছিল পৌরসভা আইন। আগের আইন অনুযায়ী বিধান ছিল, মেয়াদ শেষ হওয়ার পর পরবর্তী পরিষদ না হওয়া পর্যন্ত পৌরসভার মেয়র কন্টিনিউ করবেন। তাই দেখা গেছে, মামলা-মোকাদ্দমার কারণে পৌরসভায় একেকজন ১৪/১৫ বছর চেয়ারম্যান থাকতেন। জেলা পরিষদেও এই বিধান ছিল।’

সচিব আরও বলেন, ‘এটাও স্থানীয় সরকার বিভাগ নিয়ে আসছে, যে না, এটাও ওই পৌরসভা অ্যাক্টের মতো মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে যতদিন পরিষদ গঠিত না হবে সরকার প্রশাসক দিয়ে রাখতে পারবে। খন্দকার আনোয়ারুল বলেন, ‘সদস্যদের ক্ষেত্রে একটু পরিবর্তন আনা হয়েছে। উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়র ও সিটি করপোরেশনের মেয়রের প্রতিনিধিরা উপজেলা পরিষদের সদস্য হবেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা অবজার্বিং মেম্বার হবেন। বোর্ডটা রিভাইস করার সুপারিশ করা হয়েছে।

স্টাফ রিপোটার

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *