স্টাফ রিপোর্টার কখনো সমাজ বা রাষ্ট্রের কাছে কোন না কোন ভুল করার কারণে হয়তোবা অপরাধী হয়ে কারাবদ্ধ থাকতে পারেন একজন মা। কিন্তু যে সন্তানটি ওই মায়ের কোলে সে তো আর অপরাধ করেনি। তবে মায়ের অপরাধের কারণে কোলের সন্তানটিকেও কারাবন্দী হয়ে জীবন কাটাতে হচ্ছে।
আর ওইসব সন্তান এবং মায়েদের দেখতে বৃহস্পতিবার (২৮ এপ্রিল) দুপুরে চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ শহর থেকে একটু দূরে আশিকাটি এলাকায় চাঁদপুর জেলা কারাগারে যান।
ঈদের আগে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হিসাবে জেলা প্রশাসক তার এই পরিদর্শনকালে এসব শিশুর জন্য নিয়ে গেলেন ঈদের জামা, সিপস্ এবং চকলেট। আর মায়েদের জন্য নিলেন একটি টেলিভিশন এবং পুরুষ কয়দীদের জন্য নিলেন ৪টি টেলিভিশন। জেলা প্রশাসক প্রথম মহিলা ওয়ার্ডে গিয়ে প্রায় ৪০ জন বন্দী মহিলার সাথে কুশল বিনিময় করেন। তাদের খাওয়া দাওয়া গোসল শৌচাগার পানির ব্যবস্থার খোজ খবর নিলেন।
পরে ডিসি সেখানে বিচারাধীন মামলার আসামী ৫ মায়ের সাথে ৫ সন্তানের হাতে তুলে দিলেন ঈদের জামা, চকলেট এবং চিপস। তিনি এর মধ্যে মাদক মামলার এক নারী বন্দির শিশুকে কুলে তুলে নিয়ে আদর করলেন। বললেন ভলো থেকো বাবা, মায়ের মতো অপরাধের শিকার যেন তুমি না হও। বড় হবে। মুখে কথা না ফুটা ফুটফুটে শিশুটি ফেল ফেল ফেল করে তাকিয়ে থাকে জেলা প্রশাসকের দিকে।
মায়ের উদ্দেশ্যে ডিসি বললেন, জানিনা কতোটু অপরাধ আপনার। হয়তো সেটি কোর্টের রাযই বলে দেবে। কিন্তু সত্যিকার অপরাধী যদি হয়েই থাকেন তাহলে কোন একদিন মুক্তি পেলে নিজে শুধ্রাবার চেষ্টা করবেন এবং সম্পুর্ন ভালো হয়ে যাবেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলার দস্তগীর আহমেদ, জেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মনির আহমেদ, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু নঈম দুলাল পাটওয়ারী ও চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ইকবাল হোসেন পাটোয়ারী।
জেলার জানালেন, ২৯ জন নারী বন্দী আছে এখানে। ৫ জনের সন্তান রয়েছে। সমাজসেবা কর্মকর্তা জানালেন, অপরাধ সংশোধন ও পুনর্বাসন সমিতি, সমাজসেবা অধিদপ্তর, চাঁদপুরের সভাপতি জেলা প্রশাসক সে সমিতির সভাপতি হিসাবে সেখানের অর্থ ব্যয়ে এ উপহার দিলেন।
তিনি আরো জানান, আগে আমরা নিজেরা কিনে দিতাম বা কারো কাছে দিয়ে পাঠাতাম। এই ডিসি অঞ্জনা খান মজলিশই এমনভাবে দাঁড়িয়ে থেকে তা বন্টন করে।
জেলা প্রশাসক বলেন, আমি প্রতিমাসের একাধিকবার আসি এবং তাদের দেখে যাই। আজ মনে হলো আর দুই তিন পরেই ঈদ। বাইরে যারা আছে শিশু কমবেশ তারা ঈদ অবশ্যই আননদ উৎসবে করবে। কিন্তু এরা কিভাবে করবে? অথচ সবার জন্যই রমজানের ঈদের আনন্দ।