চাঁদপুরে যথাযোগ্য মর্যদায় শহীদ রাজু দিবস পালিত

আশিক বিন রহিম চাঁদপুরে নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী ও গণঅভ্যুথান আন্দোলনে নিহত শহীদ জিয়াউর রহমান রাজু দিবস যথাযথ মর্যদা এবং শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় পালিত হয়েছে।
এ উপলক্ষে ৩ডিসেম্বর শনিবার বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে রাজুর সমাধি এবং রাজু চত্বরে ফুলেল শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করা হয়। এছাড়াও শহীদ রাজুর কবর জেয়ারতসহ রুহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।
সকাল ১০টায় শহরের চিত্রলেখা মোড়ে রাজু চত্বরে
চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ফুলেল শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব নাসির উদ্দিন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক আবু নঈম দুলাল পাটোয়ারী প্রমুখ।
এরপর ফুলেল শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করে নব্বই’র গণআন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী এবং শহীদ রাজুর সহযোদ্ধা ছাত্র নেতৃবৃন্দ। এসময় সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন, সাবেক ছাত্রনেতা ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাড. মজিবুর রহমান ভুইয়া, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ও আবু নাসের বাচ্চু পাটোয়ারী, সদস্য আলহাজ্ব বেলায়েত হোসেন গাজী বিল্লাল, মিল্টন, জেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আফজাল হোসেন, জেলা কমিউনিস্ট পার্টির নেতা জাকির হোসেন, জেলা জাসাস নেতা মো. সোহেল, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি অ্যাড. জসিম উদ্দিন পাটোয়ারী প্রমুখ।
অপরদিকে বেলা ১২টায় চাঁদপুর সরকারি কলেজ আঙ্গিনায় শহীদ জিয়াউর রহমান রাজু পাটোয়ারীর সমাধিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করে চাঁদপুর সকারি কলেজ, চাঁদপুর পৌরসভা, চাঁদপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ এবং কলেজ ছাত্রলীগ। সেখানে শহীদ রাজুর কবর জেয়ারতসহ তার রুহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন, চাঁদপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর অসিত বরণ দাশ, চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মাবনকল্যান বিষয়ক সম্পাদক মো. জিল্লুর রহমান জুয়েল, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি অ্যাড. মো. হেলাল হোসাইন, সাধারণ সম্পাদক ফেরদৌস মোর্শেদ জুয়েল,
শহীদ রাজুর ছোটভাই ব্যাংকার আতাউর রহমান পাটোয়ারী প্রমূখ।
প্রসঙ্গত, ১৯৯০ সালে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন চলাকালে ২৭ নভেম্বর ঢাকায় নিহত হন বিএমএর সাধারণ সম্পাদক ডা. শামসুল আলম মিলন। তার নিহত হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে সারাদেশে বিক্ষোভের দাবানল জ্বলে ওঠে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে পরদিন ২৮ নভেম্বর চাঁদপুরে সর্বদলীয় ছাত্রঐক্য পরিষদ সরকারি কলেজ থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। ওই মিছিলে অংশ নিয়েছিলেন চাঁদপুর সরকারি কলেজের দ্বাদশ বাণিজ্য বিভাগের ছাত্র ও ছাত্রলীগ নেতা জিয়াউর রহমান পাটোয়ারী রাজু। মিছিলটি কলেজ ক্যাম্পাস থেকে বের হয়ে চিত্রলেখা সিনেমা হল মোড়ে আসে।
এতে কোনো প্রকার উস্কানি বা উত্তেজনা ছাড়াই পুলিশ মিছিলটির ওপর গুলি চালায়। ওই সময় মিছিলের সম্মুখে থাকা রাজু পাটোয়ারী গুলিবিদ্ধ হন। পরে চাঁদপুর সরকারি হাসপাতালে পাঁচ দিন চিকিৎসার পর ৩ ডিসেম্বর সকালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। সেই থেকে ৩ ডিসেম্বর শহীদ রাজু দিবস পালন করে আসছে সর্বদলীয় ছাত্রঐক্য পরিষদ।
শহীদ রাজু ছিলেন চাঁদপুর শহরের তালতলা এলাকার ফজলুর রহমান পাটোয়ারীর ছেলে। চাঁদপুরে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও চাঁদপুর পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল করিম পাটোয়ারী ছিলেন শহীদ রাজুর জ্যাঠা।
শহীদ রাজুর স্মৃতি ধরে রাখতে চাঁদপুর পৌরসভার অর্থায়নে শহরের চিত্রলেখা মোড়ে নির্মাণ করা হয় রাজু চত্বর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *