চাঁদপুর জেলা মাসিক উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভায় জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশজানান চাঁদপুর পৌরসভা অক্টোবর মাসের প্রথম সপ্তাহে ইজিবাইকের নাম্বার প্লেট ডিজিটালাইজশুরু করেছে।
এছাড়া আগামী ৬-৭ মাসের মধ্যে জেলা শহরে যাত্রী ছাউনি এবং গণ শৌচাগার নির্মাণ করা হবে। এসব কাজের উদ্যোগ নেয়ায় পৌরসভার মেয়রকে তিনি অভিনন্দন জানান।
একই সাথে কার্যক্রম গুলো দ্রুত এগিয়ে নেয়ার আহ্বান জানান।গতকাল রোববার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক (ডিসি) অঞ্জনা খান মজলিশআরো বলেন, জেলার উন্নয়ন সমন্বয় সভায় ৬৬ দপ্তর অংশ নেওয়ার কথা।
যারা এসেছেন তারা মূলত স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার জন্যই এসেছেন। জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের কর্মকর্তাগন সরকারের কাজ করেন। সবাই মিলে আমরা একটি টিম।
তিনি আরো বলেন, চাঁদপুর শহরটা সুন্দর হোক এটা আমি চাই। সকল ভালো কাজেই আমার সহযোগিতা পাবেন। আমি চাই সবাই মিলে চাঁদপুরকে সুন্দর করে গড়ে তুলতে।
জেলা প্রশাসক অন্যান্য বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে জানান চাঁদপুর পৌরসভা অক্টোবর মাসের প্রথম সপ্তাহে ইজিবাইকের নাম্বার প্লেট ডিজিটাল করা হচ্ছে। এছাড়া আগামী ৬-৭ মাসের মধ্যে চাঁদপুর জেলা শহরে যাত্রী ছাউনি এবং গণশৌচাগার নির্মাণের উদ্যোগ নেয়ায় পৌরসভার মেয়রকে অভিনন্দন জানান।
জেলা প্রশাসক বলেন, অনেক দিন পর বিদ্যালয় খুলেছে। বিদ্যালয় ডেন বন্ধ না হয়ে যায়, সেজন্য স্কুল ম্যানেজিং কমিটি, জনপ্রতিনিধি এবং সরকারি কর্মকর্তাদের সার্বিক সহযোগিতা প্রয়োজন। যাতে শিক্ষার্থীরা স্বাস্থবিধি মেনে বিদ্যালয়ে আসতে পারেন। অপরদিকে শাহরাস্তিতে প্রতিবন্ধী স্কুল ছাত্রীর টয়লেটে আটকাপড়া বিষয়ে সবাইকে সচেতন করেন।
যাতে পুনরায় আর এই ধরনের ঘটনা না ঘটে। সবার সহযোগিতা থাকলে চাঁদপুরকে আমরা একটি সুন্দর পরিবেশ দিতে পারব বলে তিনি আশা ব্যক্ত করেন।
এছাড়া জেলা প্রশাসক যুব উন্নয়ন, বিআরডিবি, বিআইডব্লিউটএ,পানি উন্নয়ন বোর্ডের কার্যক্রম নিয়ে ব্যাপক আলোচনা করেন। তিনি বলেন, রেলের জায়গায় অনেকেই মাছ চাষ করছেন।
মানছেন না কোন নিয়ম নীতি। সেদিকে লক্ষ্য রাখতে রেল কর্তৃপক্ষকে এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিষয়টি দেখার অনুরোধ জানান। রেলের লিজকৃত কোন জায়গায় কেউ মাছ চাষ করলে মৎস্য অধিদপ্তরের অনুমতি আছে কি না সে বিষয়ে দেখতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বলা হয়।
ভিক্ষুক পুনর্বাসন সম্পর্কে জেলা প্রশাসক বলেন, ভিক্ষুক পুনর্বাসনে প্রত্যেক উপজেলায় তাগিদ দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে তালিকা হালনাগাদ করতে হবে। অনেক ভিক্ষুকের শারীরিক অবস্থা যদি ভাল থাকে, তাহলে তাকে ভ্যান বা অন্য কর্মসস্থানের ব্যবস্থা করে দিতে হবে। যে এলাকায় যে ভিক্ষা করে তাকে পূণর্বাসন করতে হলে স্থানীয়দের অবহিত করতে হবে। তাহলে আর ভিক্ষাবৃত্তির মধ্যে নাম করে যারা প্রতারণা করে সেটা অনুমান করা সম্ভব হবে।
অঞ্জনা খান মজলিশ বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের ১০ হাজার জিও ব্যাগ থাকলেও হবে না। আরো মজুদ রাখতে তিনি নির্দেশনা দেন। এছাড়া চাঁদপুরের নদীতে ডুবোচর দেখা যাচ্ছে। যার কারণে ইলিশের উৎপাদনে বাধা হচ্ছে। তাই ডুবোচরগুলো ড্রেজিং ব্যবস্থাসহ আরো উন্নত করা যায় কিনা সে বিষয়ে পরামর্শ দেন।
পরিশেষে চাঁদপুর জেলা ফায়ার স্টেশন সার্ভিসের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, অত্যন্ত প্রশংসামূলক কাজ করছে ফায়ার স্টেশন। তাদের সহযোগিতা নিয়ে বিভিন্ন অফিস-আদালতে ছোট পরিসরে হলেও অগ্নি নির্বাপন প্রশিক্ষণ নিতে সকলকে আহ্বান জানান। আগুন প্রতিরোধে সবাই সচেতন হলে ভয়াবহ দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হবে বলে জেলা প্রশাসক আশা ব্যক্ত করেন।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ ইমতিয়াজ হোসেনের সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সিভিল সার্জন ও চাঁদপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে তত্ত্বাবধায়ক (ভারপ্রাপ্ত) ডাঃ মোঃ সাখাওয়াত উল্লাহ, চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নাসির উদ্দিন আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল, চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র জিল্লুর রহমান জুয়েল, স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত নারী মুক্তিযোদ্ধা ডাঃ সৈয়দা বদরুন নাহার চৌধুরী, প্রেসক্লাব সভাপতি ইকবাল হোসেন পাটোয়ারী, ফরিদগঞ্জ পৌর সভার মেয়র আবুল খায়ের, মতলব উত্তর উপজেলা চেয়ারম্যান এম এ কুদ্দুস, চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানজিদা শাহনাজ, সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী, দেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম রেফাত জামিল ও বিআরডিবির উপ-পরিচালক মোঃ মোকাব্বের হোসেন ভূঁইয়া প্রমুখ।
স্টাফ রিপোর্টার