জন্মনিবন্ধনে হয়রানীর শেষ কোথায় ?

কাজী মোহাম্মদ ইব্রাহীম জুয়েল অনলাইন জন্মনিবন্ধনের জন্য সারাদেশে কোনো না কোনো এলাকায় হরহামেশা চাঁদপুরের স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে নাগরিকের নানা ধরনের হৈ-হাঙ্গামা, বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। সহজ একটি বিষয় নিয়ে স্থানীয় প্রশাসন ও নাগরিকের মধ্যে, অধিকার নিয়ে এত বিশৃঙ্খলার কারণ ও হেতু কীÑ বুঝে আসছে না। একটি জিনিস বুঝতে পারছি যে, সেটি হচ্ছে- বাংলাদেশে রোহিঙ্গা জনগণের আশ্রয়। তারা এ দেশে বাস্তুচ্যুত হয়ে আসার পর থেকে, বিশেষ করে চট্টগ্রাম বিভাগের নাগরিকদের ওপর এক প্রকার প্রশাসনিক বাকবিতণ্ডা বাড়াবাড়ি শুরু হয়েছে। এর প্রভাব সারাদেশে এখন বিস্তৃতি লাভ করেছে। মনে হয় যেন রোহিঙ্গারা চট্টগ্রাম বিভাগের স্থায়ী বাসিন্দাদের জন্য অভিশাপ হয়ে এসেছে। প্রশাসনের নানা সেক্টর যেমন- পাসপোর্ট অফিস, থানা-পুলিশ, সরকারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নানা সেক্টরে চট্টগ্রামের নাগরিকরা তাদের কারণে প্রতিনিয়ত ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। মোটেও চট্টগ্রামবাসী এসবের জন্য প্রস্তুত নয়। চট্টগ্রাম বিভাগ, এ অঞ্চলের মানুষ অতীব আদর-যত্নের মাধ্যমে অতিথি হিসেবে রোহিঙ্গাদের বরণ করে নিয়েছে। জমি, ভিটাবাড়ি- সবকিছু ছেড়ে দিয়ে এ অঞ্চলের মানুষ সরকারের পাশাপাশি রোহিঙ্গা নাগরিকদের পাশে দাঁড়িয়েছে। এর অর্থ এ নয় যে, চট্টগ্রামের মানুষকে পদে পদে ভোগান্তির শিকার হতে হবে। সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এসব চিন্তা করা দরকার- কোনোভাবেই যাতে এ দেশের কোনো নাগরিক তাদের কারণে ভোগান্তির মধ্যে না পড়ে।
নির্বাচন কার্যালয়ে চট্টগ্রামের মানুষ নানাভাবে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। সেখানেও এ অঞ্চলের ভোটাররা তাদের অধিকারমতো নির্দ্বিধায় সব ধরনের তথ্য দেওয়ার পরও নানাভাবে জটিলতার মধ্যে পড়ে। এ অঞ্চলের জন্য এসব দপ্তর নানা ধরনের তথ্য যাচাই-বাছাই করছে। তা বাংলাদেশের অন্যসব এলাকায় করা হয় না। এসব বিষয় চট্টগ্রামের মানুষ প্রতিনিয়ত প্রশাসনের দপ্তরে ভোগান্তির সঙ্গে মোকাবিলা করছে। এসবের একটি সুষ্ঠু পরিকল্পনা ও সমাধান দরকার। জনভোগান্তি নানাভাবে বেড়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে অনলাইন জন্মনিবন্ধন, ভোটার হওয়া, পাসপোর্টপ্রাপ্তিÑ তিন জায়গায় চট্টগ্রামের মানুষ বেশি ভোগান্তির শিকার। এ ধরনের ভোগান্তি থেকে জনগণকে মুক্তি দিতে হবে। যারা প্রশাসনের বিভিন্ন পদে বসে জনগণের প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন, তাদের কঠোরভাবে নির্দেশের মাধ্যমে জনগণের অধিকারপ্রাপ্তি সহজতর করতে হবে। যেসব ঘটনা বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে অনলাইন জন্মনিবন্ধন সংক্রান্ত বিষয়ে সংঘটিত হচ্ছে, সেসব ঘটনার সঙ্গে প্রশাসনের যারাই জড়িত, তাদের বিচারের আওতায় আনা হোক। কোনো জনপ্রতিনিধি স্থানীয় এলাকার জনগণের ওপর অন্যায়ভাবে বাড়াবাড়ি করলে তাকেও বিচারের আওতায় আনা হোক। আইনকে সবার জন্য সমানভাবে ব্যবহার করা হোক। অনলাইন জন্মনিবন্ধনপ্রাপ্তিকে সহজ ও সহজলভ্যভাবে পাওয়ার ব্যবস্থা করা হোক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *