জাল নোটের বিষয়ে সতর্ক হতে হবে

কাজী মোহাম্মদ ইব্রাহীম জুয়েল : জাল টাকা দেশের অর্থনীতির জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। তার পরও এর হোতাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না আইনের ফাঁকফোকর ও প্রয়োগকারীদের দুর্বলতার কারণে। আইনের ফাঁক দিয়ে এ অপরাধের সঙ্গে যুক্তরা বারবার গ্রেফতারের পরও ছাড়া পাচ্ছে। আবারও তারা নিয়োজিত হচ্ছে জাল নোটের ব্যবসায়। রাজধানীতে ১ কোটি ২০ লাখ সমমানের জাল টাকা ও তৈরির উপকরণসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে এলিট ফোর্স র‌্যাব।

বাণিজ্য মেলা উপলক্ষে কয়েক কোটি টাকার জাল নোট বাজারে ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল তারা। কিন্তু র‌্যাব রাজধানীর পল্লবীর একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে সে অপচেষ্টা স্তব্ধ করে দেয়। আটক করা হয় ছগির, সেলিনা আক্তার পাখি ও রুহুল আমিন নামে তিন নোট জালিয়াতকে। জাল নোটের হোতাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হলেও তার ৮০ শতাংশ জামিনে মুক্তি পেয়ে আবারও একই ব্যবসায় জড়িত হয়। বারবার গ্রেফতার জালিয়াতের সংখ্যাও কম নয়। জাল টাকা তৈরিকারী চক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে যেসব মামলা হয় তার দু-একটি বাদে অন্যরা নানা কৌশলে জামিন পেয়ে যায়। জাল টাকা ব্যবসায়ীদের অর্থনৈতিক সামর্থ্যরে কারণে তাদের জামিন দেওয়ার জন্য আইনি তৎপরতা চালাতে আইনজীবীদের কেউ কেউ মুখিয়ে থাকেন।

বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আদালতে তারা জামিন পান আইনের ফাঁক গলিয়ে। জাল নোট প্রতিরোধে এ-সংক্রান্ত কমিটি এ অপরাধে জড়িতদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে আইন মন্ত্রণালয়ে বেশ কিছু সুপারিশ পাঠায়। এতে জাল মুদ্রা তৈরির সরঞ্জাম বা বড় চালানসহ গ্রেফতার ব্যক্তিদের জামিন-অযোগ্য বিবেচনা করা এবং দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে বিচারের সুপারিশ করা হয়।

এ ছাড়া জাল নোট ব্যবসায় জড়িতদের ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমেও শাস্তি দেওয়ার প্রস্তাব ছিল। স্মর্তব্য, জাল নোট ব্যবসার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে মৃত্যুদন্ডের বিধান ছিল। ১৯৮৭ সালে তা রহিত করে যাবজ্জীবন কারাদন্ড করা হয়। মৃত্যুদন্ডের পুনঃপ্রবর্তন না হোক, এ অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের জামিন-অযোগ্য করে যাবজ্জীবন কারাদন্ড, সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত ও আর্থিক জরিমানা সংবলিত নতুন আইন প্রণয়ন করা হবে আমরা এমনটিই দেখতে চাই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *