স্টাফ রিপোর্টার: স্বল্পোন্নত হতে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ উপলক্ষে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ বিনির্মানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র নেতৃত্বে অভূতপূর্ব উন্নয়ন বিষয়ে আলোচনা সভা সম্পন্ন হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) বিকালে চাঁদপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে ও উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ সংক্রান্ত জাতীয় কমিটির সহযোগিতায় এ আলোচনা সভা অনুষ্টিত হয়।
আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্য রাখেন চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) অঞ্জনা খান মজলিশ। তিনি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর প্রতি গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে বলেন, বঙ্গবন্ধু আমাদের স্বাধীনতা দিয়েছেন, পতাকা দিয়েছেন এবং সংবিধান দিয়েছেন। সকল দপ্তরগুলোকে ভঙ্গুর অবস্থা থেকে গড়ে তুলেছিলেন। যারা বিরোধিতা করেছিলো তারাও আমাদের সমর্থন দিতে চেয়েছিরেন। ৭৫ এ স্বাধীনতা বিরোধীর হাতে বঙ্গবন্ধু হত্যা হন। অনেক অরেক চড়াও উত্তারাও পার করে বর্তমান সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করেন। জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা হাত ধরে এখন উন্নয়নের শিখরে পৌঁছে গেছে। দুর্যোগের সময় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাঁর ত্রান ভান্ডার খুলে দিলেন। একটি মানুষকেও খাদ্যগীনতা ভুগতে দেন নি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দিয়েছিরেন একটি মানুষও গৃহহীন থাকবে না। সেই প্রতিশ্রুতি তিনি বাস্তবায়ন করছেন।
তিনি বলেন, দরিদ্র মুক্তিযোদ্ধাদের কথা চিন্তা করে অত্যন্ত সুন্দর বীর-নিবাস তৈরী করে দিচ্ছেন। স্বাস্থ্য সেক্টরের তিকে তাকালে দেখা যাবে বিনা পয়সায় সেবা দেয়া হচ্ছে। সমাজ কল্যান অধিদপ্তরের মাধ্যমে দুস্থ রোগীদের চেক বিতরণ করা হচ্ছে।প্রতিটি সেক্টরে দরিদ্রদের কথা চিন্তা করে সুযোগ সুবিধার ব্যবস্থা করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় আমরা সাফল্যের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। এসব উন্নয়নের কথা আমাদের ভাবতে হবে। বর্তমান সরকার প্রতিটা ঘরের চাকুরির ব্যবস্থা করে দেয়া হচ্ছে। আমাদের দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। অনেক অনেক ক্ষেত্র রয়েছে যার উন্নয়নের কথা বলে শেষ করা যাবে না।
জেলা প্রশাসক আরো বলেন, এ সাফল্যের ধারাবাহিকতা আমাদের ধরে রাখতে হবে। এ সাফল্য ধরে রাখতে হলে দূর্নীতিকে না বলতে হবে। আমাদের সচেতন হতে হবে। দূর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। দেশ প্রমিক হয়ে দেশের উন্নয়নে কাজ করে যেতে হবে।
সম্মানিত অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা পুলিশ সুপার মোঃ মিলন মাহমুদ বিপিএম (বার)। তিনি বলেন,
যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশে বঙ্গবন্ধুর ক্ষমতা নেয়ার পরে চ্যালেঞ্জ ছিলো খাদ্য যোগাড় দেয়া, যা তিনি খুব ভালোভাবেই করেছেন। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের হাতকে অস্ত্র নেয়াটাো বড় চ্যালেঞ্জ ছিলো যা তিনি সফল ভাবে সম্পাদন করেছেন। এরপর দেশ গঠনের কাজ তিনি হাতে নেন। ২বছরের মাথায় বাংলাদেশকে স্বীকৃতি অর্জন করে দিয়েছিলেন। বাংলাদেশ পুলিশ পুনর্গঠনও একটি চ্যালেঞ্জ ছিলো।
তিনি বলেন, উন্নয়ন চোখে দেখতে চাইলে আমাদের চারপাশে তাঁকালে বলা যাবে। একসময় আমরা ময়দা-আটা দিয়ে বানানো রুটিও পেতাম না। একসময় বাংলাদেশের মানুষ পুষ্টিহীনতায় ভোগতো। এখন নতুন প্রজন্ম ব্রেড খায়। এখন আমরা খাদ্যে ও কৃষিতে স্বয়ংসম্পূর্ণ। এখন লবনাক্ত পােিনেতা কোথাও কোথাও ধান বা কৃষি চাষ হচ্ছে। দেশের প্রতিটি সেক্টরে এখন উন্নয়নের কথা বলে শেষ করা যাবে না। একসময় পুরো দেশে ১৫শ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হতো, কিন্তু এখন একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্রেই ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়। এসবই হচ্ছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র নেতৃত্বেই হচ্ছে। তাঁর হাত ধরেই বাংলাদেশ উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় এগিয়ে যাচ্ছে। নিজ নিজ অবস্থান থেকে নিজ দায়িত্ব পালন করতে হবে এবং নিজের উন্নয়ন করতে হবে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হাতকে শক্তিশালী করতে হবে।
সাংবাদিক ও সাংষ্কৃতিক সংগঠক এম আর ইসলাম বাবু’র সঞ্চালনায় সম্মানিত অতিথিদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব নাছির উদ্দিন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল, সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ সাহাদাৎ হোসেন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক জেলা কমান্ডার যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ ওয়াদুদ, স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত নারী মুক্তিযোদ্ধা ডা. সৈয়দা বদরুন্নাহার চৌধুরী প্রমূখ।
আলোচনা সভা শেষে স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত নারী মুক্তিযোদ্ধা ডা. সৈয়দা বদরুন্নাহার চৌধুরীকে সম্মাননা স্মারক প্রদান করেন আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ। পরে ডকুমেন্টারি উপস্থাপনের মাধ্যমে দেশের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে হয়। এরপরেই জেলা শিল্পকলা একাডেমীর আয়োজনে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।