নদীতে মাছ ধরা শুরু

জাটকা সংরক্ষণে দেশের পাঁচটি অভয়াশ্রমে দুই মাস জাটকা ধরা নিষিদ্ধ ছিল। সেই নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে শনিবার মধ্যরাত থেকে চাঁদপুরের ৫২ হাজার জেলে পদ্মা ও মেঘনা নদীতে ইলিশ ধরা শুরু করছেন।

ইতোমধ্যে নদীতে নামার সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ করেছেন তারা। এতে জেলেপাড়ায় অনেকটা উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে।

জানা গেছে, ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে জাটকা সংরক্ষণে অন্যান্য স্থানের মতো চাঁদপুরের মতলব উত্তর ষাটনল থেকে হাইমচরের চরভৈরবী পর্যন্ত ৭০ কিলোমিটার এলাকায় দুই মাস জাটকা ধরা নিষিদ্ধ ছিল।

এতে জেলেরা কর্মহীন হয়ে পড়ায় নিবন্ধিত ৪৪ হাজার ৩৫ জন জেলেকে খাদ্য সহায়তা দেয় সরকার। সহায়তা পেলেও মাছ ধরতে না পারায় ঋণে জর্জরিত হয়ে আছেন জেলেরা। তবে ইলিশ পাওয়া ও না পাওয়ার শঙ্কার মধ্যে রয়েছেন জেলেরা।

চাঁদপুর সদর উপজেলার আনন্দ বাজার, হরিণা, বহরিয়া, লক্ষ্মীপুরসহ বেশ কয়েকটি স্থান ঘুরে দেখা গেছে, জেলেদের নৌকা মেরামতের কাজ শেষ। তারা নদীতে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

ইলিশ ধরার জন্য নৌকা ও চান্দি জাল নিয়ে প্রস্তুত চাঁদপুর সদর উপজেলার আনন্দবাজার এলাকার মোস্তফা বেপারী। তিনি জানান, চাঁদপুর নৌ সীমানায় ইলিশ না পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তবে আমরা ভোলা জেলার দৌলত খাঁ এলাকায় বেশির ভাগ সময় ইলিশ ধরতে যাই। যারা নদীতে নেমেছে তাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিল প্রশাসন। অন্যান্য বছর আটককৃতরা অধিকাংশই ছিল অন্য জেলার। এ বছর আটককৃতদের বেশির ভাগই ছিল চাঁদপুর জেলার।

প্রবীণ জেলে ইমান হোসেন বেপারী বলেন, পদ্মা-মেঘনা নদীতে অনেক চর জেগেছে। নদীর নাব্য সংকটের কারণে ইলিশের বিচরণ কমে যাচ্ছে। অন্যান্য প্রজাতির মাছ ধরা পড়লেও বড় ইলিশ ধরা পড়ছে না। তারপরও দুই মাস বেকার থাকার পর জীবন-জীবিকার তাগিদে আজ থেকে আবারো নদীতে নামতে হবে।

তিনি আরও জানান, গত দুই মাসে ৪০ কেজি করে ৮০ কেজি চাল ছাড়া অন্য কোনো সহায়তা পাইনি। আরো ৮০ কেজি চাল দেওয়া বাকি আছে।

এবার ইলিশের উৎপাদন খুব একটা বাড়বে বলে মনে করছেন না জেলেরা। কারণ হিসেবে তারা উল্লেখ করেছেন, চাঁদপুরে কিছু জেলে ইলিশ ধরা বন্ধ রাখলেও রাতে মেঘনার চরাঞ্চলে জাটকা নিধন করা হয়েছে দেদার। সেখানে টাস্কফোর্সও পৌঁছতে পারেনি।

চাঁদপুর জেলার মৎস্য কর্মকর্তা গোলাম মেহেদী হাসান জানান, জাটকা সংরক্ষণে প্রায় দুই মাস চাঁদপুর, ভোলা, লক্ষীপুরসহ দেশের পাঁচটি স্থানে মাছ ধরা নিষিদ্ধ ছিল। এবারের নিষেধাজ্ঞা যথাযথভাবে কার্যকর হওয়ায় এ বছর অন্যান্য বছরের তুলনায় ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি পেতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *