নির্বাচনের আগ পর্যন্ত রাজপথে থাকবে আওয়ামী লীগ : মায়া

স্টাফ রিপোর্টার

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের নির্দেশনা মেনে নির্বাচনের আগ পর্যন্ত রাজপথে থাকবে আওয়ামী লীগ। মানুষের জানমাল রক্ষা ও গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা সরকারি দল হিসেবে আওয়ামী লীগের দায়িত্ব।

গতকাল বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর প্রেসক্লাবে তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে প্রয়াত পরমাণুবিজ্ঞানী ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার ৮২তম জন্মদিন উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু আদর্শ মূল্যায়ন ও গবেষণা সংসদ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া এ কথা বলেন।

সরকার দুর্বল বলেই বিএনপির কর্মসূচির দিন আওয়ামী লীগ পাল্টা কর্মসূচি দেয়-বিএনপির এমন সমালোচনার জবাবে তিনি বলেন, ‘আরেহ ভাই। আমরাতো কর্মসূচি দেবই, এটাতো আমাদের দায়িত্ব। আপনারা সন্ত্রাস করবেন, আপনারা আগুন সন্ত্রাস করবেন, মানুষ হত্যা করবেন, গণতন্ত্রকে নষ্ট করবেন, নির্বাচন করতে চাইবেন না, কেউ নির্বাচন করুক-ভোট হোক সেটা করতে দেবেন না। তাহলে কি আমরা ঘরে বসে থাকব নাকি? মানুষের জানমাল রক্ষা করা, গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা, সরকারি দল হিসেবে আমাদের দায়িত্ব।

বিটিভির সিনিয়র সাংবাদিক সুজন হালদারের সভাপতিত্বে ও বঙ্গবন্ধু আদর্শ মূল্যায়ন ও গবেষণা সংসদের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মুহা. রোকন উদ্দিন পাঠানের উপস্থাপনায় আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

বিএনপি দেশটাকে নষ্ট করতে চেয়েছিল অভিযোগ করে তিনি বলেন, আজকে সামনে একটা নির্বাচন, এই বছরের ডিসেম্বরেই নির্বাচন হবে ইনশা আল্লাহ। এটা আমরা ভাবতে পারি। এই নির্বাচন বানচাল করার জন্য তাঁরা কিন্তু ইতিমধ্যেই ষড়যন্ত্র শুরু করেছে দেশে এবং বিদেশে। ঢাকায় রাজপথে দিনের বেলা তাঁরা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে, রাত্রে গোপনে বিদেশিদের নিয়ে আলোচনা করে। একদিকে বিদেশিদের সঙ্গে আলোচনা করা, আরেক দিকে আন্দোলনের নামে নৈরাজ্য সৃষ্টি করা। এই হলো তাঁদের কাজ।

বিএনপি সমাবেশ ও পদযাত্রায় পিস্তল নিয়ে যায় মানুষ হত্যা করার জন্য। এমন অভিযোগ করে মায়া বলেন, ‘এখন যদি আপনাদের ছেড়ে দেওয়া হয়, তাহলে দেশের মানুষই রাখবেন না আপনারা। মানুষ কেন? ট্রাক ভর্তি গরু-ছাগলকেও পুরিয়ে মেরেছেন। আপনাদের বাংলার মানুষ বিশ্বাসও করেন না। আর আপনারা বিশ্বাসের মানুষও না। আপনাদের সব সময় জনগণ পাহারায় রাখে। আমরা হলাম এই পাহারাদারদের নায়েব, কর্মকর্তা-কর্মচারী। আমরা রাজপথে ছিলাম, থাকব। আমাদের প্রধানমন্ত্রী ও দলের সাধারণ সম্পাদকের নির্দেশ মতো, নির্বাচনের আগ পর্যন্ত জনগণের জান-মাল রক্ষার জন্য রাজপথে থাকব জনগণের পাহারাদার হিসেবে। যেন আপনারা কোনো ধরনের কুকর্ম করতে না পারেন, মানুষ হত্যা করতে না পারেন। ভোট ও ভাতের অধিকার যেন আপনারা নষ্ট করতে না পারেন সে জন্য আমরা রাজপথে থাকব।’

বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে নির্বাচনে আসার আহ্বান জানিয়ে এই নেতা বলেন, ‘মরা মানুষ জেতা হয়। বাতিল করা তত্ত্বাবধায়ক সরকারও আর ফিরে আসবে না। আইনের মধ্য দিয়েই এটা শেষ হয়ে গেছে। এই দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। নির্বাচন কমিশনের তত্ত্বাবধানে এই দেশে নির্বাচন হবে আমরা সরকার তাতে সহায়তা করব। আমরা নিশ্চয়তা দিতে পারি। এই দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে যেভাবে আগে হয়েছে। আপনারা ভোটে ভয় পান কেন? তার কারণ একটাই মানুষ আপনাদের সঙ্গে নাই। মানুষ যদি সঙ্গে না থাকে, ভোটার যদি না থাকে তাহলে অক্ষমতা প্রকাশ পাবে।’

ভোটের প্রতিযোগিতায় বিএনপি জিতলে অবশ্যই আওয়ামী লীগ ক্ষমতা ছেড়ে দেবে। আর যদি, কোন রকম তালবাহানা করে, দেশি-বিদেশি চক্রান্ত আর আগুন সন্ত্রাস করে ভোটে জিততে চায় তাহলে সেটা হবে না। আওয়ামী লীগ সেটা প্রতিহত করবে বলে পরিষ্কার বার্তা দেন এই নেতা।

আলোচনা সভায় আরও অংশ নেন-আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জি. মো. আবদুস সবুর, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. শাহে আলম মুরাদ, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি ওমর ফারুক, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. শামসুদ্দিন আহম্মেদ, বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ফাইন্যান্স কমিটির চেয়ারম্যান অ্যাপ. মো. মোকলেসের রহমান বাদল প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *