চাঁদপুরে টানা বৃষ্টিতে পানিবদ্ধতা, ভেসে গেছে মৎস্য খামার

দু’দিনের টানা বৃষ্টিপাতে চাঁদপুরের অধিকাংশ এলাকায় স্থায়ী পানিবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। রাস্তাঘাট তলিয়ে নিচু এলাকার বাড়ীতে ও বসতঘরে পানি ডুকে দুর্ভোগের মুখে পড়েছে কয়েক হাজার মানুষ। ভেসে গেছে কয়েক হাজার বিঘা মৎস্য ঘের এর মাছ। আবারও লোকসানের কবলে চাষীরা। গেল শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া টানা বৃষ্টিপাতের ফলে শনিবার সকাল পর্যন্ত চাঁদপুর পৌর এলাকার নিন্মাঞ্চলে হাটু ও কোমর পানিতে তলিয়ে রয়েছে। শহরের অধিকাংশ রাস্তাঘাটের উপর পানি থই থই করছে। অনেকের বাড়ীঘর কোমর সমান পানিতে তলিয়ে গেছে ।শহরের দক্ষিণ গুনরাজদী যুব মৎস্য প্রকল্পের মালিক ও মধ্য ইচলী আব্দুল মালেক ভূঁইয়া ঝিল এর মালিক জানান, টানা দু’দিনের বর্ষণে ভেসে গেছে কয়েক হাজার বিঘা মৎস্য ঘের এর মাছ। গত বছরের মৎস্য হ্যাচারী রেনুর টাকা এখনও পরিশোধ করতে পারিনি। আবারও লোকসানে কবলে তারা। চরম দুর্ভোগে পড়েছে সাধারণ মানুষ। গত শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে শুরু হয়ে শনিবার পর্যন্ত গত দু’দিনের ভারী বর্ষণে শহরের বেশির ভাগ পাড়া-মহল্লায় পানিবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। নিচু এলাকাগুলো এখন হাঁটুপানিতে নিমজ্জিত। কোথাও কোথাও ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টির পানি জমে আছে। এতে দুর্ভোগ বেড়েছে সাধারণ মানুষের।

গত দু’দিনে চাঁদপুর পৌর এলাকার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ও খোঁজ নিয়ে জানা গেছে,শহরের নাজিরপাড়া, রহমতপুর আবাসিক এলাকা, দক্ষিণ গুনরাজদী, মাদ্রাস রোড ও মধ্য ইচলীসহ বিভিন্ন এলাকার পাড়া-মহল্লাতে পানি জমে আছে। কোথাও কোথাও পানিবন্দি হয়ে আছে অনেক পরিবার।

সরেজমিনে দেখা গেছে, দক্ষিণ গুনরাজী ও মধ্যে ইচলী পানি ভরপুর হয়ে পার্শ্ববর্তী এলাকায় বসবাসকৃত বাসা-বাড়িগুলো পানিতে টুইটুম্বুর হয়ে পড়েছে। প্রতিটি ড্রেনের সংযোগ খালের মুখে পানিতে থৈ থৈ করছে। কিছু কিছু জায়গায় পলিথিন, ময়লা-আবর্জনার স্তূপ আর কচুরিপানার কারণে ডাকাতিয়া নদীতে পানি প্রবাহ বিঘ্ন হচ্ছে। তবে বিভিন্ন এলাকায় নিজ উদ্যোগে ড্রেন পরিষ্কার করাসহ পানিবদ্ধতা নিরসনে কাজ করতে দেখা গেছে স্থানীয়দের।

দক্ষিণ গুনরাজদী এলাকায় মামুন নামে এক যুবক জানান, ‘চাঁদপুর পৌরসভার অধীনে ১৫ বছর হয়েছে। আজও ওই এলাকাতে ড্রেন তৈরি হয়নি। সামান্য বৃষ্টি হলেই কাদাপানি জমে থাকে। তবে ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে শহরের নাজির পাড়া ও রহমতপুর আবাসিক এলাকা। ড্রেনেজ ব্যবস্থা থাকার পরও হাঁটুপানিতে তলিয়ে গেছে গুরুত্বপূর্ণ এই এলাকা। শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টিপাতে শহরের বিভিন্ন বাসা-বাড়িতেও পানিবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া চাঁদপুর সদর উপজেলাসহ জেলার প্রায় প্রতিটি উপজেলার একই চিত্র দেখা যায়। জেলার অসংখ্য মাছের খামার বৃষ্টির পানিতে ভেসে গিয়ে চাষের মাছ ভেসে গেছে। এতে অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতির মুখে পড়ে জেলার হাজার হাজার মৎস্যচাষী।

স্টাফ রিপোর্টার, ০৮ আগস্ট, ২০২১;

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *