আশিক বিন রহিম একদিকে সাগরে অভিযান অন্যদিকে পদ্মা-মেঘনায় ভরা মৌসুমেও দেখা নেই কাঙ্খিত ইলিশের। স্বল্পসংখ্যক ইলিশ আমদানি হলেও দাম অনেক বেশি হওয়ায় কমেছে ক্রেতাদের আনাগোনা। এরফলে ইলিশের রাজধানী খ্যাত চাঁদপুরের বড়স্টেশন মাঠঘাটে দেখা দিয়েছে জৌলুশহীন নীরবতা। চাহিদা অনুযায়ী ইলিশের আমদানি না থাকায় চিরচেনা চাঁদপুর মাছঘাট হারিয়েছে প্রাণচাঞ্চলতা। এতে করে দেশের অন্যতম বৃহৎ এই ইলিশ-আড়তের দেড় সহস্রাধিক শ্রমিক অনেকটা অলস সময় কাটাচ্ছে। অথচ বিগত বছরের এই সময়ে ক্রেতা-বিক্রেতার আনাগোনায় সরগরম ছিল এই মাছঘাট।
বুধবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, অল্পসংখ্যক ইলিশ নিয়ে বসে আছে খুচড়ো বিক্রেতারা। তবে দাম বেশি হওয়ায় ক্রেতাদের উপস্থিতি একেবারেই কম। অপরদিকে মাঠঘাটের পাইকারি আড়তদার ও শ্রমিকরা কেরাম ও লুডু খেলে সময় পার করছেন।
শ্রমিকের সাথে আলাপকালে তারা জানায়, সারাদিন ঘাটে বসে অপেক্ষায় থাকি। যে পরিমাণ মাছ আসে তা বহন করে যা পাই, তা দিয়ে পকেট খরচও হয় না। অন্য কাজ না থাকায় ঘাটে বসে অলস সময় কাটাচ্ছি।
চাঁদপুর মৎস্য ও বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রোটারিয়ান হাজী শবেবরাত বলেন, বর্তমানে সাগরে মাছ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা চলছে। তাছাড়া এবছর পদ্মা-মেঘনায় নিষেধাজ্ঞা শেষ হবার দেড় মাস পার হলেও জেলেদের কাঙ্খিত মাছ ধরা পরছে না। যার ফলে মাছঘাটে ইলিশের আমদানি খুবই কম। আমনি কম আর দাম বেশি হওয়ায় ক্রেতাদের উপস্থিতি একেকারেই কমে গেছে।
তিনি আরো জানান, আগে এই সময়ে প্রতিদিন গড়ে ২শ’ থেকে ৩শ’ মণ ইলিশ আমদানি হতো। সেখানে বর্তমানে প্রতিদিন গদে ৫০ মণের কম ইলিশ ঘাটে আসছে। বর্তমানে এক থরকে দেড় কেজি সাইজের ইলিশ প্রতিকেজি দুই আড়াই হাজার টাকা বিক্রি হচ্ছে। ১কেজি সাইজের ইলিশ ১৫শ’ টাকা, ৭-৮শ’ গ্রামের ইলিশ প্রতিকেজি ১২শ’ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে পদ্মা-মেঘনা নদীতে ইলিশ না পাওয়ায় চাঁদপুরের প্রায় অর্ধলক্ষ জেলে হতাশায় দিন পার করছেন। তারা দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা শেষে আশায় বুক বেঁধে জাল-নৌকা নিয়ে নদীতে নামলেও শূণে হাতে ফিরছেন। ফলে ধারদেনা এবং ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে হতাশায় দিন পার করছেন তারা।
মেঘনা নদীর তীরবর্তী চাঁদপুর সদর উপজেলার হানাচর ইউনিয়নের জেলে রতমউল্লা গাজী, বাচ্চু মিয়া, ফারুক দেওয়ান জানায়, ভেবেছিলাম নিষেধাজ্ঞা পর অনেক মাছ পাব। কিন্তু দেড় মাস পার হলেও আমাদের আশা- আশাই রয়ে গেছে। নদীতে যে পরিমাণ ইলিশ মাছ পাই তা দিয়ে নৌকার তেলের খরচ ওঠে না।