দুই বছর অন্তর বিশ্বকাপ , বাংলাদেশের সম্মতি

দুই বছর পর পর বিশ্বকাপ টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হলে তা এই অঞ্চলের ফুটবলের উন্নয়নে সাহায্য করবে বলে মনে করে বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার চারটি দেশের জাতীয় ফুটবল ফেডারেশন। গত মে মাসে অনুষ্ঠিত ফিফা কংগ্রেসে দুই বছর পর পর নারী ও পুরুষদের ফুটবল বিশ্বকাপ আয়োজনের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের পক্ষে ভোটও দেয় তারা।

বাংলাদেশ, মালদ্বীপ, নেপাল ও শ্রীলঙ্কার ফুটবল ফেডারেশন একটি যৌথ বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা ওই ১৬৬টি জাতীয় ফেডারেশনের সাথে আছে যারা দুই বছর পর পর বিশ্বকাপ আয়োজনের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখার পক্ষে ভোট দিয়েছে।

তবে বিশ্বকাপের চিরাচরিত কাঠামো, অর্থাৎ চার বছর পরপর টুর্নামেন্ট আয়োজনের বর্তমান কাঠামোতে পরিবর্তন আনার বিপক্ষে ইউরোপের ফুটবল খেলা দেশগুলোর পরিচালক সংস্থা উয়েফা এবং ওই মহাদেশের শীর্ষস্থানীয় ক্লাবগুলো।

যৌথ বিবৃতিতে এসব ফেডারেশন বলেছে যে চার বছরে একটি বিশ্বকাপের আয়োজন একটি প্রতিভাবান প্রজন্মকে বঞ্চিত করছে, কারণ এর ফলে যথেষ্ঠ সুযোগ তারা পাচ্ছে না।

বিবৃতিতে এটা স্পষ্ট যে ফেডারেশনগুলো মূলত এশিয়ার ফুটবল দলগুলো যে বিশ্বকাপে খেলতে পারছে না, সেদিকেই নজর দিয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “ফিফা বিশ্বকাপের ইতিহাসের ১০০ বছর হতে চলেছে, কিন্তু এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন্সের বর্তমান সদস্যদের চার ভাগের একভাগও বিশ্বকাপে খেলতে পারেনি।”

বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের ভাইস-প্রেসিডেন্ট ইমরুল হাসান নিশ্চিত করেছেন যে চারটি দেশের ফেডারেশনের পক্ষ থেকে ফিফার কংগ্রেসে নেয়া প্রস্তাবনার পক্ষে সমর্থন জানানো হয়েছে। এশিয়া থেকে যদি আরো বেশি দল বিশ্বকাপে খেলতে পারে, তা শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের জন্য ভালো হবে বলে মনে করেন তিনি।

তবে এটি বাস্তবায়ন করা খুব কঠিন হবে জানিয়ে তিনি বলেন, “ফিফা এটা প্রস্তাব করেছে, বাফুফে এটায় সায় দিয়েছে। কিন্তু এটা একটা দীর্ঘ প্রক্রিয়া। সহসাই এতদিনের নিয়ম পরিবর্তন করা কঠিন হবে একটা সংস্থার জন্য।”

কাতারে আগামী বছর ফুটবল বিশ্বকাপের যে আসর বসতে যাচ্ছে, তাতে এশিয়া থেকে চারটি দেশ সরাসরি খেলতে পারবে। আর মহাদেশীয় প্লে-অফ খেলে সুযোগ পেতে পারে আরো একটি দেশ।

বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সদস্য সত্যজিৎ দাস রূপু বলেছেন যে দুই বছর অন্তর অন্তর বিশ্বকাপ আয়োজন হলে তা বাংলাদেশের ফুটবলকে উন্নত হতে সাহায্য করবে।

“দুই বছর পর পর যদি বিশ্বকাপ হয়, তাহলে বাছাইপর্বে অনেক বেশি ম্যাচ খেলতে পারবে বাংলাদেশ। আগে বাংলাদেশ চার বছরে যে কয়টা ম্যাচ খেলতো, দুই বছরের মধ্যেই সেই সংখ্যক ম্যাচ খেলতে পারবে।”

বাফুফে’র এই সদস্য এশিয়া অঞ্চল থেকে বিশ্বকাপে সরাসরি খেলা দেশের সংখ্যা বাড়ানোর পক্ষেও কথাও বলেন। তিনি বলেন, “যে সংখ্যক দেশ এশিয়া থেকে ফিফার অধীনে বিভিন্ন পর্যায়ে ফুটবল খেলে, তার তুলনায় অনেক কম দেশ মূল পর্বে সুযোগ পায়।”

মূলত ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা দুই বছর পরপর বিশ্বকাপের টুর্নামেন্ট আয়োজনের চিন্তা করছে এবং বিভিন্ন অঙ্গসংস্থাকে এ বিষয়ে ভাবার তাগিদও দিচ্ছে। তবে বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, উয়েফা এবং ইউরোপের শীর্ষ ক্লাবগুলো ফিফার এই প্রস্তাবনায় রাজি হবে না বলেই জানা যাচ্ছে।

খেলার সময় ডেস্ক, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২১;

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *