অর্থনীতির বৃহত্তর স্বার্থে দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের মূল পুঁজি প্রবাহ তথ্য ব্যাংকিং ব্যবস্থার সঙ্গে সংযোগ করা আজ সময়ের দাবি ।
ব্যাংক ঋণ প্রদান প্রক্রিয়া এবং এর সহজলভ্য প্রাপ্তিতে কী করণীয় সে বিষয়ে সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকগুলোর পক্ষ থেকে প্রচার-প্রসারণা জরুরি। ব্যাংকের বর্তমান দৃষ্টিভঙ্গি হচ্ছে বড় ঋণগ্রহীতাদের বড় ঋণ দেয়া এবং বেশি আয় করা। তাই দেখা যাচ্ছে ব্যাংকের ঋণতালিকার ৭০ শতাংশ হলো কর্পোরেট ঋণ বা বড় বিনিয়োগ আর বাকি সব হচ্ছে ক্ষুদ্র ও কুটির, মাঝারি, কৃষি ইত্যাদি।
এই বিশাল ব্যবধানের মূল কারণ হলো ব্যাংক ঋণ প্রদান প্রক্রিয়া। একজন ক্ষুদ্র ও মাঝারি মানের উদ্যোক্তার ঋণ প্রাপ্তিতে ব্যাংক মূলত নির্ভর করে উদ্যোক্তার বিক্রির উপর। দৈনিক বা মাসিক কি পরিমাণ বিক্রি হয়, এই বিক্রিত টাকার প্রমাণস্বরূপ ব্যাংক তার সঙ্গে বা অন্য কোন ব্যাংকে পরিচালিত হিসাবকে বিবেচনা করে।
সে লেনদেনের উপর নির্ভর করে ব্যাংক ওই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নিট আয় হিসাব করে ঋণ পরিশোধ সক্ষমতা নির্ধারণ করে। কিন্তু এইসব ক্ষুদ্র ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো অধিকাংশ ক্ষেত্রে লেনদেন করে নগদ টাকায়। পণ্য ক্রয় বা বিক্রয় উভয় ক্ষেত্রেই নগদে লেনদেনের প্রাধান্য সিংহভাগ। এখানেই বড় সমস্যা বেঁধে আছে-ব্যাংক যেভাবে বা যে প্রক্রিয়ায় ঋণ প্রদান করে সে প্রক্রিয়ায় ঋণ গ্রহীতাদের বাস্তব লেনদেন কার্যক্রম সংঘটিত হয় না। তাই প্রশ্ন হলো ঋণ প্রদান প্রক্রিয়া বাজারমুখী চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করতে হবে নাকি বাজারে বা অর্থনৈতিক চলমান প্রক্রিয়া ব্যাংকের চাহিদার বা প্রক্রিয়ার আলোকে সাজাতে হবে।
এই দুয়ের অসামঞ্জস্যতা অনেক সম্ভাবনাময় উদ্যোগ কে নষ্ট করছে, দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি শ্লথ হচ্ছে এবং ব্যাংক বিশাল অংকের আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।এছাড়া ব্যাংকের ঋণখেলাপির তালিকায় বড় কর্পোরেট ঋণগুলো অনেকাংশে দায়ী।
কাজী মোহাম্মদ ইব্রাহীম জুয়েল