দেশ-বিদেশে চাঁদপুরকে বিশেষভাবে উপস্থাপনের জন্য ২০১৫ সালের আগস্ট মাস হতে জেলা ব্র্যান্ডিং কার্যক্রম শুরু হয়। ইলিশের বাড়ি চাঁদপুর নামে দেশের প্রথম ব্র্যান্ডিং জেলা হিসেবে স্বীকৃতি দেয় সরকার। আধুনিক রুপে চাঁদপুরকে দেশ-বিদেশে বিশেষভাবে উপস্থাপনের জন্য জেলা ব্র্যান্ডিং কার্যক্রম শুরু করেন তৎকালিন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুস সবুর মণ্ডল। ইলিশের সাথে সামঞ্জস্য রেখে তিনি এর ব্র্যান্ডিং নাম দেন ইলিশের বাড়ি চাঁদপুর। এই নামানুসারে জেলার কৃতিসন্তান বরেণ্য চিত্রশিল্পী হাশেম খান একটি লোগোও অঙ্কন করেন।
বর্তমানে এ লোগোটির ব্যবহার ছাড়া ব্র্যান্ডিং জেলার আর কোনো কার্যক্রম নেই বললেই চলে। তৎকালীন জেলা প্রশাসকের যতটুকো আন্তরিকতা ছিল তার পরবর্তী প্রশাসকগণের মাঝে তা পরিলক্ষিত হয়নি। যা সচেতন চাঁদপুরবাসীকে মর্মাহত করছে।
অথচ ব্রিটিশ শাসনামল থেকেই চাঁদপুর ব্যবসা-বাণিজ্য সমৃদ্ধ ছিলো এবং সারা ভারতবর্ষে এই জেলার পরিচিতি ছিলো। একটা সময় চাঁদপুরকে বলা হতো গেটওয়ে টু ইস্টান ইন্ডিয়া বা আসাম বেঙ্গল গেটওয়ে । চাঁদপুর জেলায় দুটি সেচ প্রকল্পের ব্যাপক ভূমিকায় নিজস্ব উৎপাদিত শস্য থেকে এ জেলা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। দেশের ১৫ ভাগ খাদ্য উৎপাদন চাঁদপুর জেলার মানচিত্র থেকেই হয়ে থাকে।
রাজধানী ঢাকা থেকে চাঁদপুরের দূরত্ব প্রায় ৯৬ কিলোমিটার। আর বিভাগীয় শহর চট্টগ্রাম থেকে দূরত্ব ২০৮ কিলোমিটার। বর্তমানে কেবলমাত্র বিমান বন্দর ছাড়া চাঁদপুর জেলায় সড়ক, নৌ ও রেলপথের উন্নত যোগাযোগ ব্যাবস্থা রয়েছে। এ জেলার প্রধান সড়ক হল ঢাকা-চাঁদপুর মহাসড়ক এবং চট্টগ্রাম-চাঁদপুর মহাসড়ক।
শুধুমাত্র চাঁদপুর জেলার জন্য আলাদা একটি রেল পথ রয়েছে, যার মাধ্যমে প্রতিদিন চাঁদপুর-চট্টগ্রাম এবং চাঁদপুর-কুমিল্লার আন্ত:নগর ট্রেন চলাচল করে। এছাড়া ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলা শহর থেকে নৌপথে যোগাযোগের জন্যে রয়েছে চাঁদপুর নদী বন্দর।
যার সবকিছুই ব্র্যান্ডিং জেলা ও পর্যটন নগরী বাস্তবায়নে যথেষ্ট ভূমিকা রাখতে পারতো। কিন্তু আন্তরিকতার অভাবে তা হয়ে উঠছে না। আশা করি বর্তমান জেলা প্রশাসন ও সুধীমহল ব্র্যান্ডিং জেলার কার্যক্রম বেগবান করে পর্যটন নগরী হিসেবে চাঁদপুর গড়ে তুলবেন।
কাজী মোহাম্মদ ইব্রাহীম জুয়েল, ১৯ আগস্ট ২০২১;