ভবানীগঞ্জ পৌরসভার সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ননদকে হারালেন ভাবী

ভবানীগঞ্জ পৌরসভার সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ননদকে হারালেন ভাবী
ভবানীগঞ্জ পৌরসভার সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ননদকে হারালেন ভাবী

চাঁদপুর সময় রাজশাহী প্রতিনিধি-রাজনৈতিক প্রতিনিধি নির্বাচনে কার জয় হবে ও কার পরাজয়; তা সবার কাছেই প্রচণ্ড কৌতুহলের বিষয়। আর তা যদি ননদ-ভাবীর মধ্যে হয়ে থাকে তবে সবার আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু হয় সেই নির্বাচন। রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার ভবানীগঞ্জ পৌরসভার সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে এমনই এক নির্বাচন দেখা মিলেছে। যেখানে ননদ নারগিস বিবিকে হারিয়ে ভোটে জয়ী হয়েছেন ভাবী রোনা বিবি।

শনিবার অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় দফায় পৌরসভা নির্বাচনের ফলাফলে বেসরকারিভাবে সংরক্ষিত ১ নম্বর আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছেন রোনা বিবি। তিনি ভবানীগঞ্জ পৌরসভার সংরক্ষিত ১ নম্বর ওয়ার্ডের (১, ২ ও ৩) থেকে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি অটোরিকশা প্রতীকে পেয়েছেন ৯৬৯ ভোট। এ নিয়ে টানা দুবার কাউন্সিলর হলেন তিনি।

নির্বাচনে রোনা বিবির বিপরীতে প্রার্থী ছিলেন ননদ নারগিস বিবি। তিনি জবা ফুল প্রতীকে ভোট পেয়েছেন ৭৫৯। অপরদিকে, পলিনা খাতুন নামে আরেক প্রার্থী কলম প্রতীকে ভোট পেয়েছেন ৯৬৪ ভোট।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কসবা গ্রামের আবুল কালামের মেয়ে নারগিস বিবির সঙ্গে আবদুল হামিদ নামে স্থানীয় এক ব্যক্তির বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে জামাই-মেয়ে শ্বশুরবাড়িতে থাকেন। ২০১০ সালের নির্বাচনে কসবা গ্রামের আবদুল হামিদের স্ত্রী নারগিস বিবি সংরক্ষিত ২ নম্বর ওয়ার্ড থেকে কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছিলেন। ওই বছর তার ভাবী রোনা বিবি প্রার্থী ছিলেন না।

২০১৫ সালের নির্বাচনে নারগিস বিবির সঙ্গে অন্য তিন প্রার্থীর সঙ্গে নির্বাচনী মাঠে নামে বড় ভাই মাহাবুর রহমানের স্ত্রী রোনা বিবি। ওই বছরের নির্বাচনে ভাবী কাছে হেরে যান ননদ নারগিস বিবি। ভাবীর কাছে হেরে গেলেও গত পাঁচ বছরে তিনি এলাকার লোকজনের পাশে থেকেছেন বিভিন্নভাবে।

এবারের নির্বাচনেও সংরক্ষিত ওয়ার্ড (১, ২ ও ৩) থেকে প্রার্থী হয়েছিলেন ননদ-ভাবী। ওই ওয়ার্ডে প্রার্থী ছিলেন মোট পাঁচজন। তবে গতবারের ন্যায় এবারও সকল আলোচনার শীর্ষে ছিলেন ননদ-ভাবী। প্রতীক বরাদ্দ পাওয়ার পরপরই সকাল হলেই একই বাড়ি থেকে দুই প্রার্থী প্রচারণায় নেমে পড়তেন। দুজনেই স্বামী, সমর্থক ও কর্মী নিয়ে প্রচারণায় কাজ করতেন। প্রচারণা শেষে একই বাড়িতে ফিরতেন তারা। তবে অবাক করা বিষয় হচ্ছে, তাদের মধ্যে কোনো বিরোধ দেখা দেয়নি। পরস্পরের বিরুদ্ধে কোনো অপপ্রচারে লিপ্ত হননি তারা। এভাবে তাদের নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

কাউন্সিলর প্রার্থী বোনের সম্পর্কে বিজয়ী রোনা বিবির স্বামী মাহাবুর রহমান বলেন, ‘আমার বোন তার মতো নির্বাচন করেছে এবং আমার স্ত্রী নিজের মতো। আর এতে আমাদের মধ্যে কোনো রাগ-ঝাল নেই। ভোটাররা যে যার মতো ভোট দিয়েছে। আমার স্ত্রীকেই যোগ্য ভেবেছেন, তাই সে বিজয়ী হয়েছে। এতেও কারও কোনো আক্ষেপ নেই।’

জয়ী রোনা বিবি বলেন, ‘নির্বাচন করার স্বাধীনতা সবার রয়েছে। তাই যে যার মতো নির্বাচন করেছেন। হার-জিতের কারণে আমাদের মধ্যে কোনো ঝামেলা ছিল না, আগামীতেও থাকবে না। জনগণের পাশের থেকে কাজ করার স্বদিচ্ছার কারণেই নির্বাচন করা। সুযোগ থাকলে ভবিষ্যতে আরও বেশি কাজ করতে চাই।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *