মেয়ের শরীর পুড়িয়ে ভিক্ষাবৃত্তি করানোর অভিযোগে মা গ্রেপ্তার

“দুই স্বামীর মৃত্যুর পর তিনি ফুটপাতে থাকতেন আর নিজের মেয়েকে দিয়ে ভিক্ষা করাতেন,” বলেন তদন্ত কর্মকর্তা।

চট্টগ্রামের একটি মাজার এলাকা থেকে এক নারীকে গ্রেপ্তার করার পর পিবিআই বলছে, টাকার জন্য তিনি নিজের ১১ বছর বয়সী মেয়ের শরীর পুড়িয়ে দিয়ে ভিক্ষা করাতেন।

রোববার রাতে নগরীর পাঁচলাইশ থানার বদনাশাহ থানার সামনে থেকে হোসনে আরা বেগম (২৮) নামে ওই নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়।

পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) জানায়, একপর্যায়ে হোসনে আরা তার মেয়েকে এক দম্পতির বাসায় কাজে দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে ঠোকেন অপহরণ মামলা।

পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর বিশেষ পুলিশ সুপার নাঈমা সুলতানা জানান, গ্রেপ্তার হোসনে আরা বেগম তার ১১ বছর বয়সী কিশোরী মেয়েকে অপহরণ করা হয়েছে অভিযোগ করে গত বছরের ২৭ মে আদালতে একটি মামলা করেন। মামলায় তিনি রাশেদ ও লিমু নামে এক দম্পতির পাশাপাশি অজ্ঞাত আরও কয়েকজনকে আসামি করেন।

আদালতের নির্দেশে তদন্তভার পেয়ে হোসনে আরার কিশোরী মেয়েকে উদ্ধার করে আদালতে হাজির করে পিবিআই।

পুলিশ সুপার নাঈমা সুলতানা বলেন, “উদ্ধার হওয়া কিশোরী ২২ ধারায় দেওয়া তার জবানবন্দিতে আদালতকে জানায়, পাঁচলাইশ বদনাশাহ মাজারের সামনে সে ভিক্ষা করত। অতিরিক্ত টাকা আয়ের আশায় তার পায়ে পলিথিন মুড়িয়ে দিয়ে তার মা পুড়িয়ে দিয়ে ক্ষত সৃষ্টি করত।

“কিশোরী আদালতকে আরও জানায়, তার ছোট ভাই সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে পা ভেঙ্গে ফেলায় মামলার আসামি সিমু তার মাকে টাকা দিয়ে ভাইয়ের চিকিৎসার জন্য সহায়তা করেছিলেন এবং তাকে নিজেদের বাসায় নিয়ে গিয়েছিলেন।”

পুলিশ কর্মকর্তা নাঈমা জানান, আদালত বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে নিজের মেয়েকে ভিক্ষাবৃত্তিতে জড়ানোর অভিযোগে হোসনে আরার বিরুদ্ধে মামলা নেয়ার জন্য পাঁচলাইশ থানার ওসিকে নির্দেশ দেন। পাঁচলাইশ থানায় পুরিশের করা ওই মামলায় হোসনে আরাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর পরিদর্শক মর্জিনা আক্তার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, হোসনে আরার দুই ছেলে ও এক মেয়ে। দুই স্বামীর মৃত্যুর পর তিনি ফুটপাতে থাকতেন আর নিজের মেয়েকে দিয়ে ভিক্ষা করাতেন।

“ভিক্ষার টাকায় সংসার চালানোর পাশাপাশি হোসনে আরা একটি অ্যানড্রয়েড ফোন কিনে সেটার মাধ্যমে টাকা দিয়ে লুডু খেলতেন।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *