শুটিংয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে আহত লাইটম্যান সবুজ মারা গেছেন, নাট্যাঙ্গনে শোক

গত সপ্তাহে ঈদ নাটক ‘প্রথম প্রথম প্রেম’-এর শুটিংয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে আহত হন লাইটম্যান সবুজ হোসেন। তাঁকে ভর্তি করা হয় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে। একপর্যায়ে শারীরিক অবস্থা খারাপ হলে তাঁকে গতকাল সোমবার ভেন্টিলেশনে নেওয়া হয়। অবশেষে আজ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি মারা গেছেন। তাঁর মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন পরিচালক চয়নিকা চৌধুরী।

‘প্রথম প্রথম প্রেম’ নাটকের পরিচালনা করছিলেন চয়নিকা চৌধুরী। নাটকটির অভিনয়শিল্পী ছিলেন আফজাল হোসেন, শহীদুজ্জামান সেলিম, সাদিয়া ইসলাম মৌ, নাবিলা ইসলামসহ অনেকে। চয়নিকা বলেন, ‘সেদিন শুটিংয়ের জন্য দ্বিতীয় তলায় স্কিমার বোর্ড ধরেছিলেন সবুজ। এটি শুটিংয়ের সময় অভিনয়শিল্পীদের মুখে আলো কমানো ও বাড়ানোর কাজ করে। পরে সেটি হঠাৎ বাতাসে উড়ে পাশে থাকা রাস্তার বিদ্যুতের তারে লাগে। সেটি ধরতে গিয়েই সে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়। কারণ, স্কিমারের চারপাশে লোহা ছিল। সেই সময়ই বিস্ফোরণ হয়ে ছেলেটির শরীরের পেছনে পুড়ে ঝলসে যায়। সঙ্গে সঙ্গে হাতও ঝলসে যায়।’

গুরুতর অসুস্থ সবুজকে সেদিনই সঙ্গে সঙ্গে কুর্মিটোলা হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। পরে তাঁকে স্থানান্তর করা হয় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি হাসপাতালে। তখনই তাঁর শরীরের ৩০ শতাংশের বেশি অংশ পোড়া ছিল। চয়নিকা বলেন, ‘গতকাল তাকে ভেন্টিলেশনে দেওয়া হয়। তখন ওর মা-বাবা, আমি সবুজের সঙ্গে কথা বললাম। সে আমাকে বলল, সে বাঁচতে চায়; তার মাকে বলল, ‘‘মা, আমি বাঁচতে চাই, আমার জন্য আল্লাহর কাছে নফল নামাজ পড় মা।’’ আমরা তাকে সান্ত্বনা দিলাম, সে আবার ফিরে আসবে। ভেন্টিলেশনে শতভাগ অক্সিজেন দেওয়া ছিল। পরে আজ সকালে যখন চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা হয়, তখন তিনি বললেন, কার্ডিয়াক অ্যাটাক হয়েছে সবুজের।’

 

 শুটিংয়ে-বিদ্যুৎস্পৃষ্টে-আহত-লাইটম্যান-সবুজ-মারা-গেছেন-নাট্যাঙ্গনে-শোক

খবর পেয়ে ৭ এপ্রিল সকালে গ্রাম থেকে ঢাকায় এসেছিলেন সবুজের মা, বাবা ও মামা। সবুজ ছিলেন মা-বাবার একমাত্র সন্তান। সবুজের স্ত্রী ও এক ছোট সন্তান গ্রামে তাঁর সুস্থ হয়ে ফেরার অপেক্ষায় ছিলেন। সবুজের মৃত্যুর ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে নাট্যাঙ্গনে। বিভিন্ন শুটিং সেটে তাঁকে স্মরণ করা হচ্ছে। অভিনয়শিল্পী তানভীন সুইটি, ইরফান সাজ্জাদ, রাশেদ মামুন অপুসহ অনেকে শোক প্রকাশ করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *