এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা কবে, জানালেন শিক্ষামন্ত্রী

দেশে গত বছরের মার্চে করোনা সংক্রমণ দেখা দিলে সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়। ধীরে ধীরে পরিস্থিতি খারাপের দিকে যেতে থাকায় আর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা সম্ভব হয়নি। ফলে গত বছরের এইচএসসি পরীক্ষা নিতে পারেনি সরকার। জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে মূল্যায়ন করে এইচএসসির ফল দেওয়া হয়।

এবারও কয়েক দফায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার চেষ্টা চালিয়েও শেষ পর্যন্ত সম্ভব হয়নি। ফলে পাঠদান কর্মসূচিতেও ব্যাঘাত ঘটেছে।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পর সংক্ষিপ্ত সিলেবাস শেষ করে পরবর্তী দুই সপ্তাহ পর এসএসসি ও সমমান এবং এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। এসএসসি ও সমমানের জন্য ৬০ দিন এবং এইচএসসি ও সমমানের জন্য ৮৪ দিনে সংক্ষিপ্ত সিলেবাস শেষ করার পর দুই সপ্তাহ সময় দিয়ে দুই পাবলিক পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান হয়েছিল। কিন্তু করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারণে তা এখন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। করোনা নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত সরকারও পরীক্ষা নিতে চায় না। দেরিতে হলেও এবারের দুই পাবলিক পরীক্ষা নেওয়া হবে।

দেশে মহামারি করোনার দ্বিতীয় আঘাতের কারণে চলতি বছরের জুনে এসএসসি ও সমমান এবং জুলাই-আগস্টে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা নেওয়ার কথা থাকলেও নেওয়া সম্ভব হয়নি। করোনা নতুন ধরণ ডেল্টা আঘাত হেনেছে দেশে। যদিও সরকার সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছে, এবার উভয় পরীক্ষায় গ্রুপভিত্তিক নৈর্বাচনিক তিন বিষয়ের পরীক্ষা নেওয়া হবে। আর পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব না হলে, অ্যাসাইনমেন্ট ও সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে ফলাফল প্রণয়ন করা হবে।

এ অবস্থায় বৃহস্পতিবার (১২ আগস্ট) শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি জানিয়েছেন, করোনা পরিস্থিতি অনুকূলে থাকলে আগামী নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে এসএসসি ও ডিসেম্বরে এইচএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এর জন্য সরকার সব প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে।

এদিন বিকালে ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বর্তমানে দিন দিন করোনা সংক্রমণের হার কমছে। কিছুদিন আগেও এই সংক্রমণের হার ছিল ৩০-৩২ শতাংশ। এখন সেটা কমে ২২-২৩ শতাংশে নেমে এসেছে। গত এক সপ্তাহ ধরে এই হার কমছে। আমরা আশা করছি, পরিস্থিতি অনুকূলে থাকলে নভেম্বরের মাঝামাঝি এসএসসি এবং ডিসেম্বরের শুরুতে এইচএসসি পরীক্ষা নিতে পারব। আমাদের সেই প্রস্তুতি আছে।

দীপু মনি বলেন, ইতোমধ্যে ফরম পূরণও শুরু হয়েছে। এসএসসির ফরম পূরণ আগেই শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার থেকে এইচএসসির ফরমও পূরণ শুরু হলো। এই ফরম পূরণের জন্য তাদের কোথাও যেতে হবে না, কলেজ থেকেই করে দেওয়া হবে। তাদের সিলেবাসও অনেক কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাদের যে অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া হয়েছে, সেগুলো যদি তারা করে এবং বইটা পড়ে তাহলে তাদের প্রস্তুতিটা হয়ে যাবে। তারা পরীক্ষা দিতে পারবে।

তিনি বলেন, আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি আছে। টিকা কার্যক্রমও চলছে। আশা করা যাচ্ছে, ওই সময়ে (নভেম্বর-ডিসেম্বর) পরিস্থিতি অনুকূলে আসবে। আমরা পরীক্ষা নিতে পারব, ইনশাআল্লাহ। আর কোনো কারণে যদি পরিস্থিতি অনুকূলে না আসে তখন প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ইতোমধ্যে ১২ আগস্ট থেকে এইচএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণ শুরু হয়েছে। আগামী ১৫ আগস্ট পর্যন্ত এই কার্যক্রম চলবে। আগামী ৩০ আগস্ট পর্যন্ত ফরম পূরণের ফি পরিশোধ।

এর আগে গত বছরের ২৫ নভেম্বর এক ভার্চুয়াল প্রেস ব্রিফিংয়ে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি জানিয়েছিলেন, ২০২১ সালের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়ার জন্য তিন মাসে শেষ করা যায় এমন একটি সংক্ষিপ্ত সিলেবাস প্রণয়ন করা হয়েছে।তিনি তখন বলেছিলেন, সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের আলোকে আমরা শিক্ষার্থীদের তিন মাস ক্লাস করাতে চাই। সে কারণে হয়তো এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা দুই-এক মাস পিছিয়ে যাবে।

কিন্তু করোনার ডেল্টা ভেরিয়েন্টের কারণে এখনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানই খোলা সম্ভব হয়নি। সরকারের সর্বশেষ ঘোষণা অনুযায়ী, আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *