২০২৩ সাল থেকে পিএসসি-জেএসসি পরীক্ষা থাকছে না : শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি

প্রস্তাবিত জাতীয় শিক্ষাক্রমটি ২০২৩ সাল থেকে চালু হবে। নতুন শিক্ষাক্রমের রূপরেখায় নবম-দশম শ্রেণিতে বিভাগ ভিত্তিক বিভাজন থাকবে না, বাধ্যতামূলক কারিগরি বিষয় পড়তে হবে। নতুন শিক্ষাক্রমে ২০২৩ সাল থেকে মাধ্যমিকে বিজ্ঞান, মানবিক ও বাণিজ্য বিভাগ না রাখার পরিকল্পনা, সাবইকে একই বিষয় পড়তে হবে। প্রস্তাবিত জাতীয় শিক্ষাক্রমটি ২০২৩ সাল থেকে চালু হবে। গতকাল (১৩ সেপ্টেম্বর) সচিবালয় ব্রিফিংয়ে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দিপু মনি একথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, ২০২৩ সাল থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত নতুন শিক্ষাক্রম চালু করতে যাচ্ছে সরকার। নতুন এই শিক্ষাক্রম অনুযায়ী, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির চূড়ান্ত পরীক্ষার ফল মিলে হবে এইচএসসির ফল। দশম শ্রেণি পর্যন্ত বিজ্ঞান, মানবিক ও বাণিজ্য বিভাজন থাকছে না। তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত বার্ষিক পরীক্ষা হবে না।

পঞ্চম শ্রেণির প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) এবং অষ্টম শ্রেণির জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষাও থাকবে না।
এছাড়া শুধু ১০ শ্রেণির পাঠ্যক্রমে হবে পাবলিক পরীক্ষা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে সোমবার জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা উপস্থাপনের পর সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।

আগের মতো একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণি শেষ করার পর এইচএসসি ও সমমানের পাবলিক পরীক্ষা নেওয়া হবে না। একাদশ শ্রেণিতে বছর শেষে একটি ও দ্বাদশে আরেকটি পরীক্ষা নেওয়া হবে। দুই পরীক্ষার ফল মূল্যায়ন করে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হবে।
এ ক্ষেত্রে ৭০ শতাংশ পরীক্ষাভিত্তিক ও ৩০ শতাংশ ক্লাস মূল্যায়ন করা হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।

সোমবার (১৩ সেপ্টেম্বর) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা উপস্থাপন করেন শিক্ষামন্ত্রী। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনে কক্ষে আয়োজিত রূপরেখা উপস্থাপন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।

পরে সচিবালয়ের প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে রূপরেখা নিয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন ডা. দীপু মনি। এসময় শিক্ষামন্ত্রী এইচএসসির ফল নিয়ে এসব কথা বলেন।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘নবম-দশম শ্রেণিতে বাংলা, ইংরেজি, গণিত ও বিজ্ঞান বিষয়ে শিখনজ্ঞানের ওপর শতকরা ৫০ ভাগ মূল্যায়ন ও ধারাবাহিক মূল্যায়নে ৫০ ভাগ নম্বর দেওয়া হবে। বাকি বিষয়গুলোতে শতভাগ শিখনজ্ঞানের ওপর মূল্যায়ন করা হবে। দশম শ্রেণির পরীক্ষা শেষে পাবলিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। দশমের পাঠ্যবইয়ের ওপর ভিত্তি করে এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করা হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা মুখস্তনির্ভর শিক্ষা থেকে রেরিয়ে আসতে চাই। সেজন্য প্রাক-প্রাথমিক থেকে দ্বাদশ শ্রেণির কারিকুলামে বড় ধরনের পরিবর্তন আনা হচ্ছে। সেখানে শুধু পাঠ্যবই মুখস্ত করে পরীক্ষার ভিত্তিতে মূল্যায়ন করা হবে না। এখানে ক্লাস মূল্যায়ন ও পরীক্ষার ফলের ধারাবাহিক মূল্যায়ন করে শিক্ষার্থীদের সনদ দেওয়া হবে। ক্লাস মূল্যায়নের মধ্যে নানান খেলাধুলা, সংস্কৃতি, সাহিত্য চর্চা, অ্যাসাইনমেন্ট, শিক্ষার্থীর উপস্থিতিসহ বিভিন্ন বিষয় যুক্ত করা হয়েছে। তার ভিত্তিতে ক্লাস মূল্যায়ন করা হবে।

ডা. দীপু মনি বলেন, ‘২০২৩ সাল থেকে একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির আর্দশিক বিষয়গুলোর ওপর শিখন জ্ঞানের ৩০ ভাগ ও সামষ্টিক মূল্যায়নে ৭০ ভাগ নম্বর মূল্যায়নের আওতায় আনা হবে। তার ভিত্তিতে পাবলিক পরীক্ষায় ৭০ শতাংশ আর শিখন জ্ঞানের ওপর ৩০ শতাংশ নম্বর দেওয়া হবে। ঐচ্ছিক বিষয়ে শিখন জ্ঞানের ওপর শতকরা শতভাগ নম্বর দেওয়া হবে। প্রকল্পভিত্তিক মূল্যায়নের সুযোগ থাকবে। একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে প্রতি বছর শেষে একটি করে পরীক্ষা দিতে হবে। একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির দুই পরীক্ষা শেষে উভয় স্তরের নম্বর মূল্যায়ন করে এইচএসসির চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করে হবে।

সময় ডেস্ক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *